লালমনিরহাটে নাশকতার মামলায় বেকসুর মুক্তি পাওয়া আসামীকে অপহরণ!

জেএমবি সন্দেহে নাশকতার মামলায় আদালত থেকে বেকসুর খালাস পাওয়া দুই আসামীকে লালমনিরহাট জেলগেট থেকে অপহরণ করা হয়েছে বলে পরিবার দাবি করেছে।
বৃহস্পতিবার(২৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে লালমনিরহাট সদর উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে এক সংবাদ সম্মেলনে তাদের পরিবার এ দাবি জানান। নিখোঁজরা হলেন, হাতীবান্ধা উপজেলার ঠাংঝারা গ্রামের আব্দুর লতিবের ছেলে মেহেদী ওরফে মেহেদী হাসান ও কালীগঞ্জ উপজেলার তুষভান্ডার ইউনিয়নের সুন্দ্রাহবি গ্রামের মৃত হাসমত আলীর ছেলে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে নিখোঁজ মেহেদী ওরফে মেহেদী হাসানের বাবা আঃ লতিফ বলেন, আমার ছেলে মেহেদীকে জেএমবি সন্দেহে হাতীবান্ধা থানার নাশকতার একটি মামলায় গত প্রায় ৮ মাস আগে গ্রেফতার করে পুলিশ। মামলাটির দীর্ঘ শুনানী শেষে গত ১৯ ফেব্রুয়ারী লালমনিরহাট বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচার মোঃ মিজানুর রহমান আমার ছেলেসহ মোট চারজনকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন। এ মামলায় দুইজনকে সাজা প্রদান করেন আদালত। রায়ের পরে সকল আইনী প্রক্রিয়া শেষে গত ২১ ফেব্রুয়ারী বেলা আনুমানিক সাড়ে এগারোটার দিকে জেল থেকে ছাড়া পায় আমার ছেলে ও তার সাথে খালাস পাওয়া আসামী জামাল উদ্দিন। তারা জেল থেকে বের হওয়ার পরপরই তাদেরকে মাস্কধারী অজ্ঞাত ৮/৯ জন লোক তাদের দুইজনকে ধরে কালো গ্লাস ওয়ালা একটি সাদা মাইক্রোবাসে জোর করে উঠায় নিয়ে চলে যায়। সেই সময় হতে আজ অবধি তাদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আমরা জেলা পুলিশ সুপারকে অবগত করে সহায়তা কামনা করেছি। একই সাথে সদর থানায় পৃথক দুইটি অভিযোগ দায়ের করেও তাদের কোন সন্ধান পাইনি। অপর নিখোঁজ জামাল উদ্দিনের বড় ভাই আবুল কালাম সংবাদ সম্মেলনে বলেন, মুক্তি পাওয়া ভাই জামালসহ বাকী খালাস পাওয়াদের রিসিভ করতে আমরা সবাই জেল গেটে অপেক্ষা করছিলাম।
এ সময় তারা কারাগার থেকে বেড়িয়ে গেটে পৌছা মাত্রই সাদা রঙয়ের কালোগ্লাসের একটি মাইক্রোবাসে জামাল ও মেহেদীকে জোর করে উঠিয়ে নিয়ে গাড়িটি চলে যায়। এসময় আমি তাদের পিছু নিতে চেষ্টা করলে আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। ঘটনাটি তাৎক্ষণিক ভাবে পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে অবগত করেছি। জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ করেও তাদের কোন সন্ধান পাইনি।
আদালত কর্তৃক নির্দোষ প্রমাণিত হয়ে বেকসুর খালাস পেয়ে অপহরণের শিকার মেহেদী ও জামালকে জীবিত উদ্ধারের দাবি জানান তাদের পরিবার।
লালমনিরহাট সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এরশাদুল আলম বলেন, অভিযোগ দুইটি পেয়েছি। তদন্ত চলছে। তদন্তে শেষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।