বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ০২:৩১ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ডিসপ্লে-তে ভেসে উঠেলো ‘ছাত্রলীগ আবার ভয়ংকর রূপে ফিরবে আদম ব্যবসায়ী শাহীন ও মশিয়ারের বিরুদ্ধে প্রতারণা মামলা সৌদি আরবে অবৈধ অভিবাসী! কুড়িগ্রামে এম আর বি ইকো ব্রিকসকে পাঁচ লক্ষ টাকা জরিমানা শার্শা সরকারি টেকনিকেল স্কুল এন্ড কলেজ ২ দিনব্যাপি বিজ্ঞান মেলা নারীদের স্বাস্থ্য সচেতনতা ও টেকসই উন্নয়নে টিম চিহ্নের ব্যতিক্রমী উদ্যোগ কোনাবাড়ীতে টিনশেড বাসায় অগ্নিকাণ্ড,৫ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি ভারত যাওয়ার পথে ইডেন ছাত্রলীগ নেত্রীসহ গ্রেফতার ২ শিক্ষককে মারধোর,সেই যুবদল নেতা দল থেকে বহিষ্কার গাজীপুরে অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্নে দিনব্যাপী দুদকের অভিযান গাজীপুরে স্কুল শিক্ষককে মারধোরের অভিযোগ যুবদল নেতার বিরুদ্ধে

শিক্ষার্থী ৫ জন, তবু এমপিওভুক্ত বিদ্যালয়

রিপোর্টারের নাম : / ১৫৬ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : মঙ্গলবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২২

নীলফামারীর ডিমলার গয়াবাড়ী ইউনিয়নের মডার্ন নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম কয়েক বছর ধরে বন্ধ রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে পড়ে আছে টিনশেড ঘর। এরই মধ্যে বিদ্যালয়ে গিয়ে পাঁচ শিক্ষার্থীকে পাওয়া গেছে।

গত ৬ জুলাই প্রকাশিত এমপিওভুক্তির তালিকায় এসেছে এই বিদ্যালয়ের নাম। এমন খবরে বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা আনন্দিত হলেও আশ্চর্য হয়েছেন সুধী সমাজ ও স্থানীয় বাসিন্দারা।স্থানীয় বাসিন্দা রতন মিয়া ও জাকির হোসেন জানান, বিদ্যালয়টি দীর্ঘদিন থেকে বন্ধ রয়েছে। সেটি কীভাবে এমপিওভুক্ত হলো কিছুই বুঝলাম না।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ২০০১ সালে প্রতিষ্ঠানটি কাগজে-কলমে স্থাপন দেখানো হয়েছে। এমপিওভুক্ত আবেদনের সময় ২০২০ সালে সেখানে তৈরি করা হয় পুরাতন টিনের ঘর। শিক্ষার্থী না থাকায় ওই ঘরে কখনও ক্লাস হয়নি। বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি প্রধান শিক্ষকের বড় ভাই মোখলেছুর রহমান। বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্তির ঘোষণা আসার পরই নড়েচড়ে বসেন তিনি।

বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, পাঁচ শিক্ষার্থী বসে আছে। বিদ্যালয়ে শিক্ষক-কর্মচারীসহ ১২ জনকে নিয়োগ দেখানো হলেও বাস্তবে চার জনকে পাওয়া গেছে। এর মধ্যে একজন সহকারী শিক্ষক আব্দুল মতিন। তিনি বলেন, ‘বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা নিয়মিত আসে না। এজন্য শিক্ষার্থী কম।’

স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা জানিয়েছেন, একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হওয়ার শর্ত অনুযায়ী বিদ্যালয়ের নিজস্ব জমি এবং খেলার মাঠ থাকতে হয়। শিক্ষার্থী থাকতে হয়। কাগজে-কলমে জমি দেখানো হলেও বাস্তবে বিদ্যালয়ের নির্দিষ্ট জমি নেই। খেলার মাঠ নেই। শিক্ষার্থী নেই। গত জুলাই মাসে বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্ত হওয়ার পর থেকে গ্রামের কিছু দরিদ্র  শিক্ষার্থীকে বিনা পয়সায় প্রাইভেট পড়ানোর নামে কাগজে-কলমে শ্রেণি কার্যক্রম সচল দেখানো হচ্ছে।

তবে শিক্ষকরা দাবি করেছেন, এসব শিক্ষার্থী তাদের বিদ্যালয়ের। শিক্ষার্থীদের হাজিরা খাতা দেখতে চাইলে তা দেখাতে পারেননি শিক্ষকরা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক সহকারী শিক্ষক বলেন, ‘বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আসাদুজ্জামান ঠিকাদারি কাজে ব্যস্ত থাকেন। এজন্য বিদ্যালয়ে সময় দিতে পারেন না। বিদ্যালয়ে হাতেগোনা কয়েকজন শিক্ষার্থী থাকলেও তারা আসে না। ক্লাসও ঠিকমতো হয় না।’

এ ব্যাপারে জানতে বিদ্যালয়ে গিয়ে প্রধান শিক্ষককে পাওয়া যায়নি। পরে মোবাইলে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

বিদ্যালয়ের সভাপতি মোখলেছুর রহমান বলেন, ‘বিদ্যালয়ে এক থেকে দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। আজকে (রবিবার) শুধুমাত্র পাঁচ শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে এসেছে।’ শিক্ষার্থীরা না আসার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বৃষ্টির কারণে শিশু শিক্ষার্থীরা ঠিকমতো ক্লাসে আসতে পারেনি।

গয়াবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শামসুল হক বলেন, ‘বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী কম। দীর্ঘদিন পর এমপিওভুক্ত হওয়ায় বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি ও শিক্ষকরা নড়েচড়ে বসেছেন। এতদিন পাঠদান ঝিমিয়ে ছিল। এখন যেহেতু এমপিওভুক্ত হয়েছে সেহেতু নিয়মনীতি মেনে কার্যক্রম চলবে।’

ডিমলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ও উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার আমির বোরহান বলেন, ‘বাস্তবে না থাকলেও কাগজে-কলমে ওই বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী উপস্থিতি দেখানো হয়। প্রতি বছর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে ওই বিদ্যালয়ের হয়ে জেএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। গত তিন বছর করোনার কারণে জেএসসি পরীক্ষা বন্ধ থাকার সুযোগ নিতে পারে প্রতিষ্ঠানটি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখবো আমরা।’

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমি বিষয়টি শুনেছি। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ডিমলা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দিয়েছি। আশা করি, দ্রুত এ সমস্যার সমাধান হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর

এক ক্লিকে বিভাগের খবর