সীমান্ত হত্যা শূন্যে নামাতে একমত বিজিবি-বিএসএফ
বিএসএফ ডিজি বলেন, সীমান্ত এলাকায় সংঘবদ্ধ অপরাধ, মানবপাচার, চোরাকারবারির মতো নানা অপরাধীচক্র বিভিন্ন সময় বিএসএফ সদস্যদের ওপর আক্রমণ করে।
বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বলেন, ‘আমরা সীমান্তে সচেতনতা বৃদ্ধিতে চেষ্টা করছি। সীমান্তে কেউ হতাহত হোক, তা চাই না।’
এক প্রশ্নের জবাবে বিএসএফ ডিজি নিতিন আগারওয়াল বলেন, সীমান্ত হত্যার জন্য দুই দেশের চোরাকারবারিরা দায়ী। তাই সীমান্ত হত্যা বন্ধে দুই দেশ একমত। সীমান্তে চোরাকারবারিরা সক্রিয় রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে গিয়ে শুধু বাংলাদেশি নয়, ভারতীয় নাগরিকরাও মারা যাচ্ছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ বর্ডারে বিএসএফ প্রাণঘাতী নয়, এমন অস্ত্র ব্যবহার করছে। সীমান্ত হত্যা শূন্যে নামিয়ে আনতে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ের সীমান্ত সম্মেলনে বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকীর নেতৃত্বে ১৬ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল অংশ নিচ্ছে। বিএসএফ মহাপরিচালক নিতিন আগারওয়ালের নেতৃত্বে ৯ সদস্যের ভারতীয় প্রতিনিধিদল সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেছে।
সম্মেলনে আলোচিত উল্লেখযোগ্য বিষয়
সীমান্তে মৃত্যু বন্ধ, চোরাকারবার, মানবপাচারসহ নানা অপরাধ কমিয়ে আনাসহ এবারের সীমান্ত সম্মেলনে নানা বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। উভয় পক্ষ বিভিন্ন বিষয়ে সম্মত হয় এবং সীমান্তে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে যৌথভাবে কাজ করতে পুনর্ব্যক্ত করে।
এবারের সম্মেলনে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত অতিক্রম করে বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিকদের অনুপ্রবেশের বিরুদ্ধে যথাযথ ও দৃঢ় অবস্থান গ্রহণের ব্যাপারে একমত হয়।
পারস্পরিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে যৌথ নদী কমিশন কর্তৃক অনুমোদিত সীমান্তের অভিন্ন নদীসমূহের বন্ধ থাকা তীর সংরক্ষণ কাজ পুনরায় শুরু করার জন্য যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণের বিষয়ে উভয় পক্ষ সম্মত হয়েছে।
সন্ত্রাস ও বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে নিজ নিজ সরকারের জিরো টলারেন্স নীতির বিষয়টি তুলে ধরে উভয় পক্ষই এর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ, সুনির্দিষ্ট তথ্য আদান-প্রদান ও নিজ নিজ সীমান্তে প্রয়োজনীয় আভিযানিক তৎপরতা অব্যাহত রাখার বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছায়।
বিজিবি মহাপরিচালক জকিগঞ্জের কুশিয়ারা নদীর তীরবর্তী পাঁচ হাজার হেক্টর চাষযোগ্য ফসলি জমির সেচ সুবিধা ও সীমান্তবর্তী জনগণের দুর্ভোগের কথা উল্লেখ করে মানবিক দিক বিবেচনায় কুশিয়ারা নদীর সঙ্গে বন্ধ থাকা রহিমপুর খালের মুখ পুনরায় খুলে দেওয়ার আহবান জানিয়েছেন। বিএসএফ মহাপরিচালক উভয় পক্ষের স্বার্থ বিবেচনায় দ্রুত রহিমপুর খালের মুখ পুনরায় উন্মুক্তকরণের আশ্বাস দেন।