মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১১:৩১ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
লফস’র আয়োজনে খেলার মাঠ,পার্ক ও উম্মুক্ত স্থানের বাজেট বরাদ্দ বিষয়ক আলোচনা সভা সলঙ্গায় ধারালো ছুরির আঘাতে গুরুতর আহত যুবক কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম শিক্ষা কার্যক্রম উদ্বধোন  সিংড়ায় সহপাঠীর আঘাতে স্কুলছাত্র নিহত নাটোরের বড়াইগ্রামে বিএসটিআইয়ের অভিযানে দুই বেকারি কারখানাকে জরিমানা লালমনিরহাটে কলেজের অধ্যক্ষ পদ নিয়ে সংঘর্ষ; যুবলীগ নেতা আটক! লালমনিরহাটে ডাকাত দল গ্রেফতার! কাজিপুরে ডেইরি ফার্মে দুর্ধর্ষ ডাকাতি; পুলিশের গড়িমসিতে ভিন্নখাতে প্রবাহিত হওয়ার শংকা সলঙ্গায় খড়ের পালায় আগুন থানায় অভিযোগ ভাষা শহিদদের স্মরণে বেনাপোল বিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ নির্ণয় কর্মসূচি

আট বছর পর কর্মী যাচ্ছে লিবিয়ায়

রিপোর্টারের নাম : / ১২১ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : শুক্রবার, ১৯ মে, ২০২৩

উত্তর আফ্রিকার দেশ লিবিয়ায় বাংলাদেশি কর্মী যাওয়া শুরু হয় ১৯৭৬ সাল থেকে। তবে ২০১১ সালে দেশটিতে নানা অস্থিতিশীলতা শুরু হলে বদলে যায় সেখানকার পরিস্থিতি। ধীরে ধীরে যুদ্ধ-সংঘাতে বিপর্যস্ত লিবিয়ায় জনশক্তি রপ্তানি প্রয়োজনীয়তা হারায়। ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে লিবিয়াযাত্রা। এরই ধারাবাহিকতায় নিরাপত্তাঝুঁকির কারণে ২০১৫ সালে লিবিয়ায় কর্মী পাঠানো বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশ।

দীর্ঘ সাত বছর বন্ধ থাকার পর ২০২২ সালের শেষ দিকে বাংলাদেশ-লিবিয়া কর্মী পাঠানোর বিষয়ে সমঝোতা স্মারক সই করে। এরপর ওই বছরই লিবিয়ায় কর্মী পাঠানোর কার্যক্রম হাতে নেয় প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি)। ৮ ডিসেম্বর ১৫ জন কর্মী দেশটিতে পাঠানো হয়। তাঁদের পাঠায় রিক্রুটিং এজেন্সি ফাইম এম ইন্টারন্যাশনাল ও সুফী ইন্টারন্যাশনাল। এরপর আর কোনো কর্মী লিবিয়ায় যাননি। চলতি বছর আবারও ৩৫ জন কর্মী লিবিয়ায় পাঠানো হচ্ছে।

এই ৩৫ জন লিবিয়ায় যাচ্ছেন রিক্রুটিং এজেন্সি আজুর বেঙ্গল লিমিটেডের মাধ্যমে। তাঁরা দেশটির ত্রিপোলি শহরের সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করবেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এসব কর্মী প্রায় দেড় লাখ টাকার মতো খরচ করে লিবিয়ায় যাচ্ছেন। ত্রিপোলির সিটি করপোরেশনে তাঁদের বেতন নির্ধারণ করা হয়েছে টাকায় ২৬ হাজার থেকে ২৮ হাজার পর্যন্ত।

কর্মী পাঠানোর বিষয়ে আজুর বেঙ্গল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার কাজী আব্দুল্লাহ আল মামুন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ত্রিপোলি শহরের সিটি করপোরেশন থেকে পরিচ্ছন্নতাকর্মী নিয়োগের সার্কুলার দেওয়া হয়। তখন আমরা ওই দেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করি। এরপর তারা আমাদের কর্মী পাঠানোর অনুমতি দেয়। সেই অনুমতির ভিত্তিতে আমরা এখন ৩৫ জন কর্মী পাঠাচ্ছি। তাঁরা সেখানে যাওয়ার পর আমরা দেখব তাঁরা কেমন আছেন। এরপর আমরা আরো কর্মী পাঠানোর কার্যক্রম শুরু করব।’

কবে নাগাদ এসব কর্মী লিবিয়ায় যেতে পারবেন—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘লিবিয়ায় যাঁরা যাবেন তাঁদের প্রয়োজনীয় সব ধরনের কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। আমরা বিমানের টিকিট বুকিং দিয়ে দিয়েছি। আশা করি ছয় থেকে সাত দিনের মধ্যে আমরা তাঁদের পাঠাতে পারব।’

লিবিয়ায় পাঠানোর আগে এসব কর্মীকে নিয়মতান্ত্রিক ও নিরাপদ অভিবাসনের লক্ষ্যে সচেতনতার বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। গত ১৬ মার্চ বিএমইটির সম্মেলনকক্ষে প্রশিক্ষণের আয়োজন করে বিএমইটি ও রিক্রুটিং এজেন্সি আজুর বেঙ্গল লিমিটেড। প্রশিক্ষণে লিবিয়ায় যাওয়ার আগে ও পরে কর্মীদের করণীয় সম্পর্কে আলোচনা করা হয়। লিবিয়ার স্থানীয় আইন-কানুন, আচার-ব্যবহার ও সংস্কৃতি সম্পর্কে পরামর্শ এবং দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়।

এই কর্মীরা চুক্তি অনুযায়ী প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকলে লিবিয়ার শ্রমবাজার ঘুরে দাঁড়াবে বলে মনে করেন বিএমইটির মহাপরিচালক শহিদুল আলম এনডিসি। কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, ‘৩৫ জন কর্মীর সবাই লিবিয়ায় সরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করবেন। যদি এভাবে সরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মী পাঠানো যায় এবং আমাদের কর্মীরা যদি চুক্তি অনুযায়ী প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকেন, তাহলে এই শ্রমবাজার আবার ঘুরে দাঁড়াবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘লিবিয়ায় আগে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার ও নার্স যেতেন। আমাদের শ্রমবাজারটিও ভালো ছিল। পরবর্তী সময়ে দেশটিতে অস্থিতিশীলতার কারণে এই শ্রমবাজার বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। আমরা যেহেতু আবার কর্মী পাঠানো শুরু করেছি, অবশ্যই এটি নতুন কোনো সম্ভাবনাময় দিক হয়ে দাঁড়াবে।’

তবে লিবিয়ার পরিস্থিতি এখনো স্বাভাবিক না হওয়ায় দেশটির আশানুরূপ শ্রমবাজার হয়ে ওঠার সম্ভাবনা কম বলে মন্তব্য করেন ব্র্যাকের অভিবাসন কর্মসূচির প্রধান শরিফুল হাসান। কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, ‘লিবিয়ায় এখনো রাজনৈতিক কোন্দল টিকে আছে। এর ফলে আমাদের কর্মীরা নানা ঝুঁকির মধ্যে পড়বেন। তখন এ ঝুঁকি এড়াতে তাঁরা ইউরোপে যাওয়ার চেষ্টা করবেন। এ ক্ষেত্রে কর্মীদের খুব ভালোভাবে কাউন্সেলিং করতে হবে। এ ছাড়া লিবিয়া ও সিরিয়ায় সবচেয়ে বেশি মানবপাচার হয়ে থাকে। ফলে সেখানকার কর্মীরা এই চক্রের মধ্যে পড়ে প্রচুর দুর্ভোগের শিকার হতে পারেন। এসব বিবেচনা করলে লিবিয়ার শ্রমবাজার ঘুরে দাঁড়ানোর মতো এখনো কোনো আশা দেখা যায় না।’


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর

এক ক্লিকে বিভাগের খবর