উল্লাপাড়ার রামকৃষ্ণপুর ইউপি সচিবের বিরুদ্ধে জন্ম নিবন্ধনে বেশি টাকা আদায়ের অভিযোগ
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় জন্মনিবন্ধন করতে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সচিব ফরিদুল হক মিলনের বিরুদ্ধে।
উপজেলা প্রশাসন থেকে বলা হয়েছে, সরকার নির্ধারিত ফির অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হলে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জানা গেছে, শিশুর জন্মনিবন্ধনের জন্য ৪৫ দিন পর্যন্ত কোনো ফি নেওয়া হয় না। তবে শিশুর ৫ বছর পর্যন্ত ২৫ টাকা ও ৫ বছরের উপরে সব বয়সীদের ৫০ টাকা ফি নেওয়ার নিয়ম করে দিয়েছে সরকার।
তবে সরকারের এই নিয়ম মানছে না উল্লাপাড়া উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সচিব ফরিদুল হক মিলন। ৫০ টাকার পরিবর্তে তিনি ২০০ থেকে ২৫০ টাকা পর্যন্ত ফি আদায় করে মাসে প্রায় ১ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
সরেজমিন গিয়ে,অভিযোগের সত্যতাও পাওয়া যায়।রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের এলাকার বাসিন্দা সাইদুর এসেছিলেন তার ছেলের জন্ম-নিবন্ধন করতে। তিনি বলেন, ৫০ টাকার জন্ম নিবন্ধনে ২০০ টাকা নিচ্ছে ইউনিয়ন পরিষদের সচিব। ২টি জন্ম নিবন্ধনের জন্য ৪০০ টাকা দিতে হয়েছে।
একই এলাকার হুমায়ন বলেন, ছেলের জন্ম নিবন্ধন করতে এসেছি। সরকার নতুন নিয়মে ৫০ টাকা করলেও ২০০ টাকা নেওয়া হচ্ছে।
আগুরপুর এলাকার একটি মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষার্থী জানায়, আগে করা জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করতে এসেছি।বাবা কৃষি কাজ করে তাই নিজেই এসেছি। বাইরে থেকে আবেদন করতে লেগেছে ৫০ টাকা, নিবন্ধন ফি দিতে হয়েছে ২০০টাকা ইউনিয়ন পরিষদ অফিসে।
নাম প্রকাশ না করায় ইচ্ছুক অনেকেই বলেন,১ টা জন্মনিবন্ধন করতে ইউপি সচিবের কাছে ৩ থেকে চার বার যাওয়া লাগে অনেক সময় সকালে গিয়ে ১১ টা পর্যন্ত তার দরজায় বসে থাকা লাগে, কারণ সে সিরাজগঞ্জ সদর থেকে এসে অফিস করেন। আসতে বেলা ১১ টা বাজায় অনেক দিনই। শুধু তাই নয় সে গ্রাম পুলিশ দিয়ে টাকা উঠাতে বাধ্য করেন। গ্রাম পুলিশ বাড়ি বাড়ি গিয়ে জন্ম নিবন্ধন করা পরামর্শ দিচ্ছে সেই সাথে সচিবের চাহিদা মতে ২ শত থেকে ২ শত ৫০ টাকা বলে আসছে। এখান থেকে সচিব গ্রাম পুলিশ দের কেও সুবিধা দিচ্ছে।
একটি জরিব করে দেখা গেছে দিন যদি ১৫০ টাকা করে প্রতি নিবন্ধনে টাকা বেশি নেওয়া হয়। তাহলে প্রতি মাসে এখান থেকে প্রায় ১ লক্ষ টাকা ইনকাম করেন এই ইউপি সচিব ফরিদুল হক মিলন।
অভিযোগ বিষয়ে রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সচিব ফরিদুল হক মিলন বলেন,আমার কোনও টাকা নিচ্ছি না,তবে কে বা কারা টাকা নিচ্ছে আমিও খোঁজ করছি।
জন্মনিবন্ধন করতে অতিরিক্ত ফি আদায়ের বিষয়ে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম হিরো বলেন,পরিষদের সচিবসহ ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তাদের বলা আছে নিয়মের বাহিরে কেউ জানি ফি আদায় না করে।তবে আমি শুনেছি ইউপি সচিব নাকি বলে নিজেই ২শত থেকে ২শত ৫০ টাকা সাধারণ মানুষদের কাছ থেকে আদায় করেন। আমার কথা বলার পরেও তাদেও ছাড় দেয়না এই সচিব। আমি এবিষয়ে এর আগে উপজেলা নির্বাহী অফিসার কে জানিয়েছি তবে তিনি ব্যবস্তা নেয় নাই।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা সুলতানা বলেন,এই বিষয়টি ক্ষতি দেখে আমি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।