স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ২৭ আগস্ট শনিবার দুপুর পৌনে দুইটার দিকে গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ি কুদ্দুসনগর পুকুরপাড় ডাঃ জয়নাল খানের ভাড়াবাসা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। এর আগে ওই ভাড়াবাসার মালিককে অজ্ঞাত ব্যক্তি মোবাইল ফোন করে জানায় ওই বাড়ির একটি কক্ষে রিনা খাতুনের লাশ পড়ে আছে। পরে বাড়ির মালিক রুমের কাছে এসে দরজা বাইরে থেকে তালাবদ্ধ দেখে পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশ ঘটনা¯’লে উপ¯ি’ত হয়ে রুমের দরজার তালা ভেঙ্গে ওই নারীর গলায় ওড়না প্যাচানো অবস্থায় মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন।
নিহত রিনার মেয়ের জামাই সেলিম মিয়া জানান, তার শশুড় গ্রেফতারকৃত লাল চাঁন বিভিন্ন জেলায় গেরস্থের বাড়িতে রাখালের কাজ করে এবং শাশুড়ি রিনা আক্তার প্রায় ১০ বছর যাবত তার মেয়েকে নিয়ে কোনাবাড়ী এলাকায় বাসাভাড়া থেকে স্থানীয় গার্মেন্টসে চাকুরী করতো।
লাল চাঁন মাঝে মধ্যে কোনাবাড়ী এলাকায় এসে থাকতো। মেয়ে এবং জামাইসহ একই বড়িতে ভিন্ন কক্ষে ভাড়া থাকতো রিনা আক্তার। গত একমাস আগে তার শশুড় লাল চাঁন তাদের কাছে বেরাতে আসে। শশুড়-শাশুড়ি একই বাড়িতে ভিন্ন কক্ষে থাকায় মাঝে মধ্যে তাদের ঝগড়া বিবাদ শোনা যেত। রিনা আক্তারের অফিস থেকে রাত করে ফেরা এবং অন্যকোন পুরুষের সাথে পরকীয়া সন্দেহে মূলত ঝগড়ার সৃষ্টি হতো। ঘটনার দিন ২৭ আগস্ট শনিবার সকাল ৬টার দিকে রিনা আক্তারকে কবিরাজ দেখানোর কথা বলে নিয়ে যায় লাল চাঁন। এর পর ওই দিনই সকাল ১০ দিকে লাল চাঁন তার স্ত্রীর ঘরে ফেলে যাওয়া মোবাইল ফোনে মেয়ে লামিয়া আক্তার লাভলী (২২)কে জানায় তার মা আর ফিরবেনা সে আর নেই। এ কথা শুনে মেয়ে কান্নাকাটি শুরু করে। পরে ওই দিন দুপুরের পর রিনা আক্তারের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন কোনাবাড়ী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো: রফিকুল ইসলাম জানান, নিহতের স্বামী লাল চাঁন পালিয়ে গিয়ে নিজেই দুপুরে বাড়ির মালিককে জানায় ঘরের মধ্যে তার স্ত্রী রিনা আক্তারের মরদেহ পড়ে আছে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনা স্থলে উপস্থিত হয়ে রুমের দরজার তালা ভেঙ্গে ওই নারীকে গলায় ওড়না প্যাচানো অবস্থায় মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য গাজীপুরে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। এঘটনায় পরের দিন নিহতের ভাই মো: আব্দুস সালাম বাদি হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে প্রযুক্তির মাধ্যমে সিআইডি পুলিশের সহযোগীতায় বরিশালের বিমানবন্দর থানা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি আরো জানান, গ্রেফতারকৃত লাল চাঁন হত্যার কথা স্বীকার করে জানায় তার স্ত্রীকে একাধিকবার ওই ভাড়া বাসা ছেরে দিতে বল্লেও তিনি কখনোই ছারতে রাজি হননি। এছাড়া তার চলাফেরা সন্দেহে তাদের মধ্যে ঝগড়ার এক পর্যায়ে তাকে গলায় ওড়না প্যাচিয়ে ফাঁসদিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়। এছাড়া যে বাসা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয় ওই ভাড়াবাসা গত ১০/১২দিন আগে স্ত্রী রিনা আক্তারসহ কাউকে না জানিয়ে ভাড়া নেয় লাল চাঁন। সুযোগ বুঝে সেখানেই হত্যাকান্ডটি ঘটায়।