গাজীপুরের মৌচাকে আজ ৩২ তম এশিয়া প্যাসিফিক রিজিওনাল ও একাদশ জাতীয় স্কাউট জাম্বুরি-২০২৩ এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন

গাজীপুরের মৌচাকে গত ১৯ জানুয়ারি থেকে ৩২ তম এশিয়া প্যাসিফিক রিজিওনাল ও একাদশ জাতীয় স্কাউট জাম্বুরি-২০২৩ শুরু হয়েছে।”সাবাস—শক্তির ফোয়ারা” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ১৯ জানুয়ারি শুরু হওয়া ৯ দিনব্যাপী এ জাম্বুরী আজ ২১ জানুয়ারী সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় মন্ত্রী, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ডা. দীপু মনি (এমপি)।
শনিবার (২১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ স্কাউটসের জাতীয় প্রশিক্ষণ কেন্দ্র মৌচাকে বঙ্গবন্ধু মূল এরিনায় জাম্বুরীর জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে উদ্বোধন করা হবে। উদ্বোধনকে ঘিরে বঙ্গবন্ধু মূল এরিনার চারদিকে থাকবে নিচ্ছিদ্র ও কয়েক স্তরের নিরাপত্তার ব্যবস্থা। এসময় উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ স্কাউটসের সভাপতি মোঃ আবুল কালাম আজাদ, প্রধান জাতীয় কমিশনার ড. মোঃ মোজাম্মেল হক খান, জাতীয় কমিশনার (জনসংযোগ ও মার্কেটিং) এম এম ফজলুল হক আরিফ, স্কাউটস এর উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সরকারি বেসরকারি দফতরের বিভিন্ন কর্মকর্তাগণ অংশগ্রহণকারী স্কাউটরা উপস্থিত থাকবেন। সারাদেশের সাড়ে ৯১৬টি স্কাউট ইউনিটের প্রায় ৮ সহস্রাধিক স্কাউট, স্কাউটার, কর্মকর্তা, আইএসটি রোভার সদস্য, ইউনিট লিডার, কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন দেশ হতে আগত স্কাউটারসহ ১১ হাজার জন এই ক্যাম্পে অংশগ্রহণ করেছেন।
এদিকে, জাম্বুরীর দ্বিতীয় দিন আজ অংশগ্রহণকারী স্কাউট দলগুলো তাদের তাঁবুকলাকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়েছে। তাঁবু ও স্থান নির্ধারনের পর শুরু করে নিজের তাঁবুকে সব তাঁবুর চেয়ে আকর্ষণীয় ও সুন্দর করার মহাযজ্ঞ। প্রতিদিন সকালে ধারাবাহিক ভাবে তাঁবু পরিদর্শনের অংশ হিসেবে নিজ তাঁবু বা গৃহকে শৈল্পিক রুপ দিতে সকালে ঘন কুয়াশাকে উপেক্ষা করে চলে তাদের শিল্পকর্ম।
এছাড়াও পুরো স্কাউট জাম্বুরিকে মোট ৪ টি ভিলেজে ভাগ করা হয়েছে এবং প্রতিটি ভিলেজে দুটি করে মোট ৮ টি সাব ক্যাম্পে বিভক্ত করা হয়েছে। নয় দিন ব্যাপী এ ক্যাম্পে স্কাউটদের জন্য থাকছে তাঁবুকলা, হাইকিংনাইট হাইকিং ও ইয়ুথ ভয়েজ, নেইবারহুড,ক্যাম্প ফায়ার, খেলাধূলা ও মেধা যাচাইসহ মোট ২০ টি চ্যালেঞ্জ। এসব চ্যালেঞ্জে অংশগ্রহণ করে স্কাউটরা তাদের মেধা, শারীরিক, মানসিক, বুদ্ধিবৃত্তিক, আধ্যাত্মিক বিকাশ ঘটাতে সক্ষম হবে।
গত ১৯ থেকে ২৭ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রায় ১৮১ একর জায়গায় ওই ক্যাম্পে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আগত স্কাউট সদস্যরা অংশগ্রহণ করেছেন। এতে দেশী বিদেশিদের সংমিশ্রণে আদান-প্রদান হবে বিশ্ব ভাতৃত্ব বোধ এবং একে অপরের কাছে নিজস্ব দেশীয় সংস্কৃতি ও কৃষ্টি কালচার তুলে ধরবেন। যা আমাদের দেশের জন্য ঐতিহাসিক স্কাউট জাম্বুরি হিসেবে পরিচিতি লাভ করবে এবং অংশগ্রহণ কারীদের বাস্তবিক জীবনে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবে।
স্কাউটিংয়ের মূল লক্ষ্য হলো একজন শিক্ষার্থীর শারীরিক, মানসিক, বুদ্ধিবৃত্তিক ও আধ্যাত্মিক বিকাশ সাধন করা। এসবের মাধ্যমে একজন স্কাউট নিজেকে তৈরি করে মেধা ও শ্রম দিয়ে স্থানীয়, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে একজন সুন্দর, সং, যোগ্য, দক্ষ ও দ্বায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলবে।
এই জাম্বুরিতে অংশগ্রহণকারী দেশী ও বিদেশি স্কাউটেরা বাংলাদেশ তথা বাংলাদেশ স্কাউটস জাতীয় প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, মৌচাকের প্রায় ১৮১ একরের এই অপার সৌন্দর্য ভরা প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখে তাদের দেখে মন জুড়িয়ে যাবে। এখানকার বনাঞ্চল, নানা প্রজাতির উদ্ভিদ, পাখপাখালির কিচিরমিচির শব্দ, সুন্দর পাড়সহ পাশলা পুকুর এবং আরো অন্যান্য প্রকৃতিক পরিবেশ রয়েছে। এছাড়াও গাজীপুরে রয়েছে বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক, বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্ক, মধুপুর ও ভাওয়াল বনাঞ্চল এসবের বিষয়ে জেনে ও বাস্তব জীবনে অবলোকন করে অংশগ্রহণকারী স্কাউটেরা তাদের পঞ্চইন্দ্রিয়কে আরো সমৃদ্ধ করতে পারবে। আর এসব প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করে স্কাউটরা বাংলাদেশকে জানতে পারবে এবং ভ্রমন পিয়াশা জন্মানোর পাশাপাশি বাংলাদেশকে নিয়ে যাবে অনন্য উচ্চতায়।