চাঁপাইনবাবগঞ্জে উত্তাল নিত্য পণ্যের বাজার

চাঁপাইনবাবগঞ্জে মাংসের বাজার অস্থির হয়ে উঠেছে। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে সব ধরনের মুরগী ও গরুর মাংসের দাম। সেই সঙ্গে বেড়েই চলেছে চিনি ও মাছের দামও, বাদ যায়নি কাঁচা সবজির বাজারো।
শনিবার (১১ফেব্রুয়ারি) জেলা ও উপজেলা এলাকায় অবস্থিত গরুর মাংসপট্টি, মুরগীপট্টি, মাছপট্টি, মুদিপট্টি, সবজিপট্টি ঘুরে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এসব জিনিসের দাম ঊর্ধ্বমুখী। মুরগীর ক্রেতা খাইরুল ইসলামসহ অন্যরা জানান, গত সপ্তাহে প্রতি কেজি দেশী মুরগীর দাম ছিল ৪৫০ টাকা। এ সপ্তাহে একলাফে ৫০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকায়। পাকিস্তানি মুরগী ছিল প্রতি কেজি ২০০/২১০ টাকা। এখন ৪০/৫০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে বিক্রি হচ্ছে ২৪০/২৫০ টাকা দরে।
গোমস্তাপুর উপজেলার জাহাঙ্গীর আলম (ডিলার) নামের এক পোল্ট্রি বিক্রেতা জানান, মুরগীর দাম গত সপ্তাহে প্রতি কেজি ছিল ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা, যা বেড়ে এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকায়। নাচোল উপজেলার প্যারেন্টস মুরগী বিক্রেতা আরিফ (ডিলার) জানান, গত সপ্তাহ থেকেই এর দাম বৃদ্ধি পেয়ে বতর্মানে বিক্রি হচ্ছে ৩২০ টাকা কেজি দরে। আরেক জন খচরা বিক্রেতা বলেন ৩৩০ থেকে ৩৫০ টাকা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে প্যারেন্টস মুরগী। সরবরাহ কম থাকায় দাম বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানান সব ধরনের মুরগী ক্রেতা ও বিক্রেতারা।
কয়েকজন বড় বড় ডিলারদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তারা বলেন, বয়লার সোনালী, লিয়ার, প্যারেন্টস মুরগী জনসাধারণের নিত্য পণ্যের চাহিদা মেটায়। তারা ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, বর্তমানে মুরগীর বাচ্চা, ফিড, ঔষধ, বিদ্যুৎ বিল ইত্যাদি দিতে যেয়ে তারা লোকসানের সম্মুখীন হচ্ছেন প্রতিনিয়ত। তাই অনেক খামারি আজ খামার গুটিয়ে নিয়েছেন, এর একটি বড় প্রভাব পড়েছে এখন মাংসের বাজারে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ উপজেলার গরুর মাংসপট্টির মিনহাজুল ও ইসমাইল জানান, গত সপ্তাহে গরুর মাংস ছিল প্রতি কেজি ৬৫০ টাকা, যা বেড়ে এখন প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০০ টাকায়। তারা বলেন, গরুর দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় মাংসের দাম বাড়িয়েও লোকসান হচ্ছে তাদের।
এদিকে মাছ পট্টিতেও স্বস্তি মিলছে না সাধারণ ক্রেতাদের। শিবগঞ্জ উপজেলার মাছপট্টির গোলাম কিবরিয়া জানান, ২ কেজি ওজনের কাতল প্রতি কেজি ২৮৬ টাকা দরে কিনে বিক্রি করছেন, একই দামেই। তাহলে লাভ কি হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, (আমরা ঢলোন পাইকারি কেনার সময় অতিরিক্ত যা পাওয়া যায়) সেটাই আমাদের লাভ। এছাড়া বাজারে বাচা মাছ প্রতি কেজি ৫৬০ থেকে ৬০০ টাকা, মলা মাছ প্রতি কেজি ৫২০ টাকা, শইল মাছ ৫১০ থেকে ৫২০ টাকা, দেশী ট্যাংরা ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, পাবদা ৩০০ টাকা, দেশী শিং ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
ভোলাহাট উপজেলার সবজিপট্টির নাহিদুল ইসলাম জানান, কিছু সংখ্যক সবজির দাম স্থিতিশীল রয়েছে। যেমন- কাঁচকলা প্রতি কেজি ৩৫ টাকা, মুলা ৩০ টাকা, ব্রকলি প্রতি পিস ৩০ টাকা, ফুলকপি ১৫-২০ টাকা, পাতাকপি ১৫-২০ টাকা পিস, পেপে ২৫-৩০ টাকা কেজি, বেগুন প্রতি কেজি ৪০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। তবে করলার দাম এখনো বেশি রয়েছে। প্রতি কেজি দেশী করলা বিক্রি হচ্ছে ১৫০-১৬০ টাকা আর হাইব্রিড ১০০ টাকা। এছাড়া পটল ১৩০ টাকা, হল্যান্ড আলু ৩০ টাকা, দেশী আলু ৩৫-৪০ টাকা প্রতি কেজি এবং টমেটো মান ভেদে ১৫ টাকা থেকে শুরু করে প্রতি কেজি ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
মুদি বাজারের দুই জন দোকানি জানান, তানভীর মুদি স্টোর (রাশেল) তিনি খোলা চিনির বর্তমানে ১২০ টাকা প্রতি কেজি দরে বিক্রি করছেন এবং ফেনসুর স্টোর(ফেনসুর) তিনি বর্তমানে খোলা সয়াবিন তৈল প্রতি কেজি ১৯০/২০০ টাকা বিক্রি করেন।