চাঁপাইনবাবগঞ্জে চাঁদা না পেয়ে ব্যবসায়ীকে বিবস্ত্র করে আনন্দ উল্লাস, গ্রেপ্তার ৩

চাঁপাইনবাবগঞ্জে এক ব্যবসায়ীকে নির্যাতনের পর বিবস্ত্র করে সড়কে হাঁটানোর ঘটনা ঘটেছে। পৌর এলাকার বটতলাহাটে জনবহুল সড়কে হাঁটানোর সেই ভিডিও মোবাইলে ধারণ করা হয়। ৫৩ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ভিডিওটিতে এ ঘটনায় অংশগ্রহণকারী তরুণ ও যুবকদের আনন্দ উল্লাস করতেও দেখা যায়।
এ ঘটনায় রোববার ভোরে অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এর আগে ১১ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ৮টার দিকে এ ঘটনাটি ঘটে। বটতলাহাট এলাকার এক প্রত্যক্ষদর্শী চায়ের দোকানদার জানান, স্থানীয় এক বিবাহিত নারীর সঙ্গে ওই ব্যক্তির অবৈধ সম্পর্ক ছিল। ঘটনার রাতে ওই নারীর বাড়িতে যান তিনি। সে সময় অনৈতিক কাজে লিপ্ত থাকার অভিযোগে ওই ব্যবসায়ীকে নির্যাতনের পর বিবস্ত্র করে সড়কে ঘোরানো হয়েছে।
পায়ে হাঁটিয়ে আনা হয় তার বড়ো ভাইয়ের বাড়ির সামনে থেকে। যারা তাকে প্রকাশ্যে সড়কে ঘুরিয়েছেন তারা সবাই স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতার আত্মীয়স্বজন এবং তার অনুসারী। নির্যাতিত ওই ব্যবসায়ীর ভাতিজা বলেন, তারা চাচাকে আমাদের বাড়ির গেটে নিয়ে এলে আমি তাকে লুঙ্গি দিতে যাই। এ সময় তারা ছুরি নিয়ে আমার দিকে তেড়ে আসে এবং লুঙ্গিটি কেড়ে নিয়ে ছিঁড়ে ফেলে। ঘটনার রাতেই পুলিশকে ঘটনাটি জানানো হলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। উল্টো মিমাংসার পরামর্শ দেয়। এখন চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে পুরো পরিবার। তারা এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও প্রভাবশালী।
যেকোনো সময় আমাদের ওপর হামলা হতে পারে। যোগাযোগ করা হলে ঘটনার বর্ণনা দিতে চাননি নির্যাতিত ব্যক্তি। তবে রোববার তিনি এ ঘটনায় মামলা করেছেন। মামলা এজাহারে তিনি বলছেন, রায়হান নামে এক ব্যক্তির কাছে পাওনা টাকা চাইতে গেলে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আসামিরা তাকে আটকিয়ে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা দিতে রাজি না হলে মারধর করে জোরপূর্বক বিবস্ত্র করে সড়কে ঘোরায় এবং ভিডিও ধারণ করে। পরে আসামিরা তাদের মোবাইলে ধারণ করা ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে আরও এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। তাদের কথায় সাড়া না দেওয়ায় আসামিরা ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়।
এ মামলায় বাক্কার নামে একজনকে প্রধান আসামি ও সাতজনের নাম উল্লেখসহ পাঁচ-ছয়জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। এ বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি একেএম আলমগীর জাহান জানান, এজাহারভুক্ত তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী। আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।