মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১২:৩০ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম শিক্ষা কার্যক্রম উদ্বধোন  সিংড়ায় সহপাঠীর আঘাতে স্কুলছাত্র নিহত নাটোরের বড়াইগ্রামে বিএসটিআইয়ের অভিযানে দুই বেকারি কারখানাকে জরিমানা লালমনিরহাটে কলেজের অধ্যক্ষ পদ নিয়ে সংঘর্ষ; যুবলীগ নেতা আটক! লালমনিরহাটে ডাকাত দল গ্রেফতার! কাজিপুরে ডেইরি ফার্মে দুর্ধর্ষ ডাকাতি; পুলিশের গড়িমসিতে ভিন্নখাতে প্রবাহিত হওয়ার শংকা সলঙ্গায় খড়ের পালায় আগুন থানায় অভিযোগ ভাষা শহিদদের স্মরণে বেনাপোল বিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ নির্ণয় কর্মসূচি যশোরের নাভারন থেকে ১ কোটি ৫৭ লাখ টাকার ভারতীয় রুপার অলংকারসহ আটক-০২ প্রান্তিক পর্যায়ের পঞ্চাশ হাজার অসহায় মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করে ভয়েস অব কাজিপুর 

ত্রিদেশীয় বিদ্যুৎবাণিজ্যে যুক্ত হচ্ছে বাংলাদেশ

রিপোর্টারের নাম : / ১০৯ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : শনিবার, ২৭ মে, ২০২৩

বিদ্যুৎ-বাণিজ্যে বাংলাদেশ-ভুটান-ভারত তিন দেশকে এক প্ল্যাটফর্মে আনার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ। এর অংশ হিসেবে ভুটানে ভারতের সঙ্গে যৌথভাবে জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করতে চায় ঢাকা। দিল্লি এই প্রস্তাবে সম্মতি জানিয়ে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব দিতে বলেছে। চলতি মাসে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত ঢাকা-দিল্লি বিদ্যুৎ সচিব পর্যায়ের বৈঠকে ভুটানে জলবিদ্যুৎ উৎপাদনে ভারতের সঙ্গে যৌথভাবে বিনিয়োগের প্রস্তাব দেয় বাংলাদেশ। সূত্র বলছে, এর আগেও ভারতকে একই ধরনের প্রস্তাব বাংলাদেশের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কখনোই ভারত এ বিষয়ে কোনো আগ্রহ দেখায়নি। এই প্রথম বাংলাদেশের প্রস্তাবে ভারত একমত হয়েছে।

নেপালের সঙ্গে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতে যৌথ সহায়তা চুক্তি থাকলেও ভুটানের সঙ্গে সেটি নেই। বাংলাদেশ চার থেকে পাঁচ বছর ধরে ভুটানের সঙ্গে যৌথভাবে জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে চুক্তির উদ্যোগ নিলেও ভারত সম্মত না হওয়ায় এত দিন এই উদ্যোগ ঝুলে ছিল। নেপাল বা ভুটানে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন করা হলেও ভারতের ভূখণ্ড ব্যবহার করেই বাংলাদেশে বিদ্যুৎ আনতে হবে। যদিও ভারত তাদের নীতিমালা সংশোধন করে প্রতিবেশীদের বিদ্যুৎ-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে নিজেদের ভূখণ্ড ব্যবহারের অনুমতির বিধান রেখেছে। ভারতের আগের নীতিমালায় ভারতের ভূখণ্ড ব্যবহার করতে চাইলে প্রতিবেশী দেশের বিদ্যুৎকেন্দ্রে ভারতের সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্ব রাখার বাধ্যবাধকতা ছিল।

গত ৯ মে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন ভুটানের রাষ্ট্রদূত রিনচেন কেনসি। ওই সময় ভুটানের রাষ্ট্রদূত জানান, খুব শিগগিরই বাংলাদেশের সঙ্গে ভুটান বিদ্যুৎ খাতে সহযোগিতা স্মারক (এমওইউ) সই করবে। এর আগে গত ৪-৫ মে খুলনায় বাংলাদেশ-ভারত যৌথ স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠক হয়, যাতে দুই দেশের বিদ্যুৎ সচিব নেতৃত্ব দেন।

জানতে চাইলে পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, অনেক দিন ধরে ভুটানে জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের জন্য ভারতের সহায়তা চাওয়া হচ্ছিল। ভারত সব সময় বলে এসেছে, এটি বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপক্ষীয় বৈঠক। এখানে ত্রিপক্ষীয় বিষয় আলোচনা করার সুযোগ নেই। এই প্রথম ভারতের তরফ থেকে বলা হয়েছে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব দিতে। এখন এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব দিলে ত্রিদেশীয় ফোরামে বিষয়টি আলোচনা হবে। নেপালের সঙ্গে ত্রিদেশীয় একটি চুক্তি সই হতে যাচ্ছে বলেও জানান তিনি।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে ভুটান এবং নেপালের জলবিদ্যুৎ আমদানি চুক্তিতে বাংলাদেশ কীভাবে লাভবান হবে। সাম্প্রতিক সময়ে ভারতীয় কোম্পানি জিএমআর বাংলাদেশের সঙ্গে যে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ রপ্তানি চুক্তি করছে তাতে বিদ্যুতের দাম ধরা হয়েছে ইউনিটপ্রতি ৬ টাকা ৪১ পয়সা।

দেশের অন্য নবায়নযোগ্য জ্বালানি সৌরবিদু্তের দাম এখনও ১০ টাকা। বায়ুবিদ্যুতে যা ১৫ টাকা। সেই দিক বিবেচনায় ৬ টাকা ৪১ পয়সা অনেক কম।

দেশে বর্তমানে কয়লাচালিত বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ ৯ থেকে ১৪ টাকা। আবার তেলের ক্ষেত্রে ডিজেলে ৩০ টাকা। ফার্নেস অয়েলে ১৬ থেকে ১৮ টাকার মধ্যে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ঘোরাফেরা করে। শুধু গ্যাসে উৎপাদন খরচ গড়ে সাড়ে ৩ থেকে ৪ টাকার মধ্যে পড়ে। কিন্তু আবার এলএনজি থেকে অর্থাৎ গ্যাস আমদানি করে বিদ্যুৎ তৈরি করতে খরচ পড়ে সাড়ে ৭ থেকে ৯ টাকা। এ পরিস্থিতিতে দামের দিক দিয়ে নেপাল ও ভুটানের জলবিদ্যুৎ অনেক সস্তা। এখান থেকে কোনো জ্বালানি খরচ ছাড়াই নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পাওয়া সম্ভব।

এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক এক প্রতিবেদনে বলেছে, ভুটান দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র দেশ, যাদের উদ্বৃত্ত জ্বালানি রয়েছে। দেশটির ৩০ হাজার মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা রযেছে। এর মধ্যে এখন পর্যন্ত ৫ ভাগ জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রর উৎস কাজে লাগানো হয়েছে। ভুটানের জাতীয় অর্থনীতিতে জলবিদ্যুতের অবদান ২০ ভাগ। আর জাতীয় আয়ের ৪০ ভাগ আসে জলবিদ্যুৎ থেকে। ভারত এখানে বড় বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করে বিদ্যুৎ নিয়ে আসছে।

বিদ্যুৎ বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, ভারত যেহেতু এখানে আগে থেকে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করেছে, তাই যৌথভাবে বিনিয়োগ করাটা সুবিধাজনক হবে বলে সরকার মনে করছে। এর আগেই জলবিদ্যুৎ খাতে নেপাল এবং ভুটানে এক বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ অনুমোদন করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তবে এই অর্থ কীভাবে বিনিয়োগ করা যায়, সে বিষয়ে বিদ্যুৎ বিভাগ কোনো উদ্যোগ নিতে পারেনি।

নিজেরা বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করলে কেন্দ্র ব্রেক ইভেনে (লাভ লোকসানের সমতাবিন্দু) পৌঁছানোর পর আয় বেশি হবে। এতে একদিকে যেমন কম খরচে বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে, অন্যদিকে বিকল্প জ্বালানিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন কম করতে হবে, যাতে বিপুল পরিমাণ সাশ্রয় হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর

এক ক্লিকে বিভাগের খবর