রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫, ০১:২৫ পূর্বাহ্ন

দুর্গাপুর ইউনিয়নের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আব্দুল হামিদের গোপন ফোনালাপ ফাঁস

আশরাফুল হক, লালমনিরহাটঃ / ২৮৭ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : রবিবার, ১৯ জুন, ২০২২

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ঘুষ নেয়ার ভিডিও ভাইরালের পর এবার ফোনালাপ ফাঁস হয়েছে লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আব্দুল হামিদের।

ফোনালাপে নিজের ক্ষমতা প্রকাশ করতে গিয়ে তিনি লালমনিরহাটের প্রাক্তন জেলা প্রশাসক তড়িৎ কান্তি’র নাম নিয়ে সগর্বে বলেন, ‘আমি কিন্ত কোনও লোককে ছাড়াইয়া পাটি নই.. আমি তড়িৎ কান্তি ডিসিক পর্যন্ত ছাড়ি নাই, কমিশনারকে দিয়ে শোকজ করাইছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন ব্যুরোর সর্বোচ্চ এনএসআই পর্যন্ত অভিযোগ করছিল। পরে যে লোক অভিযোগ করছিল সে নিজেই অ্যারেস্ট হইছে।’

ঘুষ গ্রহণের ভিডিও ফাঁসের বিষয়ে কথোপকথনের ১৩ মিনিট ৪০ সেকেন্ডের একটি অডিও ক্লিপ এ প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। দুর্গাপুর ইউনিয়নের শটিবাড়ী বাজারের ব্যবসায়ি সাবু মিয়ার সাথে ফোনালাপে তিনি এসব কথা বলেন।

সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা গেছে, টাকার প্রয়োজনে প্রায় ৬ মাস পূর্বে রাস্তার ধারে নিজের লাগানো ৭/৮টি পাইকড় গাছ কেটে বিক্রি করেন দুর্গাপুর ইউনিয়নের উত্তর গোবধা এলাকার বাসিন্দা সাবেক ইউপি সদস্য কছির উদ্দিন। কিন্ত কাটা গাছগুলো ক্রেতা নিয়ে যাওয়ার সময় তা লোক পাঠিয়ে আটক করেন ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা আব্দুল হামিদ। এরপর গাছগুলো স্থানীয় গ্রাম পুলিশ রমণী চন্দ্রের জিম্মায় রেখে গাছ মালিককে অফিসে ডেকে নেন তিনি।

পরে সরকারি গাছ কাটার দায়ে মামলার হুমকী দিয়ে কছির উদ্দিনের কাছে ৩০ হাজার টাকা দাবি করেন ভূমি কর্মকর্তা আব্দুল হামিদ। এরপর স্থানীয় ব্যবসায়ি সাবু মিয়া, মক্কা আলীসহ কয়েকজনের মধ্যস্থতায় নগদ সাড়ে ৫ হাজার টাকায় রফাদফা হয় কছির উদ্দিনের সাথে। টাকা গ্রহণের পর ভূমি কর্মকর্তা গাছ মালিককে বিষয়টি চাপা পড়লে কাটা গাছগুলো সরিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্ত দীর্ঘ ৬ মাস পার হলেও কাটা গাছগুলো ফেরত পাননি কছির উদ্দিন।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী গাছ মালিক সাবেক ইউপি সদস্য কছির উদ্দিন বলেন, ‘আমি নিজের লাগানো গাছ কেটেছি। কিন্ত ভূমি কর্মকর্তা মামলার হুমকি দিয়ে আমার কাছ থেকে সাড়ে ৫ হাজার টাকা নিয়েছেন। ৬ মাস পার হলেও তিনি এখনও গাছগুলো ফেরত দেননি।’

তবে অভিযুক্ত ভূমি কর্মকর্তা আব্দুল হামিদ বলেন, তারা আমাকে টাকা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল, কিন্ত আমি টাকা নেইনি। আর ফোনালাপ ফাঁসের বিষয়ে তিনি কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি।

এ ব্যাপারে আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জি আর সরোয়ার বলেন, আমি তার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার কথা শুনেছি। কিন্তু ওই বিষয়ে কেউ আমার কাছে অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর

এক ক্লিকে বিভাগের খবর