দৈনিক মিলবে ২ কোটি ঘনফুট গ্যাস

ভোলা সদর উপজেলার ইলিশা গ্যাসক্ষেত্রের ইলিশা-১ নামের নতুন গ্যাসকূপে বিপুল পরিমাণ গ্যাস মজুত রয়েছে বলে আশা করা হচ্ছে। ওই কূপ থেকে দৈনিক ২০ মিলিয়ন বা ২ কোটি ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন সম্ভব বলে মনে করেছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বাপেক্স)। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে ২শ’ বিসিএফ বা তারও বেশি পরিমাণ গ্যাসের মজুত রয়েছে কূপটিতে। রবিবার দ্বিতীয় স্তরের ডিএসটি পরীক্ষা করেছে বাপেক্স। এর আগে কূপটিতে গত ২৮ এপ্রিল পরীক্ষামূলকভাবে প্রথম স্তরের গ্যাস উত্তোলন শুরু করা হয়। আগামী সপ্তাহে শুরু হবে তৃতীয় স্তরের ডিএসটি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গত ৯ মার্চ ভোলা সদর উপজেলার পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নের মালেরহাট সংলগ্ন এলাকায় ইলিশা-১ কূপের খনন কাজ শুরু হয়। বাপেক্সের মহাব্যবস্থাপক (ভূতাত্ত্বিক বিভাগ) মো. আলমগীর হোসেন গণমাধ্যমকে জানান, প্রথম ডিএসটিতে আমরা মাটির গভীরের সবচেয়ে নিচের স্তর ৩ হাজার ৪৩৩ থেকে ৩ হাজার ৪৩৬ মিটারে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে সফল হয়েছি। দ্বিতীয় ডিএসটিতে ৩ হাজার ২৬৮ থেকে ৩ হাজার ২৭৫ মিটার গভীরে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছি। তারপরই গ্যাসের পরিমাণ সম্পর্কে আমরা ধারণা পাই। এছাড়া পরবর্তীতে তৃতীয় লেয়ারে ৩ হাজার ২৫০ থেকে ৩ হাজার ২৫৫ মিটার গভীরে ডিএসটি করা হবে। মাটির নিচে গ্যাসের প্রেসারও বেশ ভালো রয়েছে।
বাপেক্সের কর্মকর্তা আরও জানান, জেলায় নতুন করে আরও ৫টি গ্যাসকূপ খননের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে বাপেক্স্। এগুলো হবে শাহাবাজপুর গ্যাসফিল্ডে ২টি কূপ, ভোলা নর্থে ২টি ও অন্যটির স্থান নির্ধারণের কাজ চলছে। আমাদের সব ধরনের পরীক্ষা-নীরিক্ষা চলছে। এছাড়া জেলায় প্রায় ১.৭ টিসিএফ গ্যাসের মজুত রয়েছে। এই পরিমাণ আরও বাড়তে পারে। সব মিলিয়ে জেলায় বিপুল পরিমাণ গ্যাসের সম্ভাবনার কথা জানান তিনি।
জানা যায়, নতুন এই গ্যাসক্ষেত্রের কূপ নিয়ে জেলায় মোট ৩টি গ্যাসক্ষেত্রের ৯টি কূপ থেকে গ্যাস উত্তোলন হচ্ছে। এগুলো হলোÑ বোরহানউদ্দিন উপজেলার শাহাবাজপুর গ্যাসক্ষেত্র ৬টি কূপ, সদরের ভেদুরিয়া ইউনিয়নের ভোলা নর্থের ২টি ও সর্বশেষ ইলিশা ক্ষেত্রের ইলিশা-১ কূপ।
এদিকে নতুন গ্যাসকূপ থেকে বিপুল পরিমাণ গ্যাস পাওয়ার খবরে আনন্দ প্রকাশ করেছে স্থানীয়রা। তারা বলছেন, এর মাধ্যমে গ্যাসভিত্তিক শিল্প, কলকারখানা তৈরি হবে। কর্মসংস্থান হবে বিপুল জনগোষ্ঠীর। অর্থনৈতিকভাবে উন্নত হবে ভোলা। তাই তারা গ্যাসভিত্তিক শিল্পায়নের দাবি জানান।
ভোলা জেলা স্বার্থ রক্ষা কমিটির সদস্য সচিব অমিতাভ অপু বলেন, ভোলায় একের পর এক গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার হওয়া অবশ্যই একটি আনন্দের খবর। জনগণকে এর সুফলের আওতায় আনতে হবে। তাই আমাদের দাবি থাকবে ভোলার গ্যাসকে কাজে লাগিয়ে শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হোক এবং গৃহস্থালি কাজে এই গ্যাস ব্যবহার বন্ধ করা হোক। একই সঙ্গে ভোলা-বরিশাল ব্রিজ নির্মাণেরও দাবি জানান তিনি।