মঙ্গলবার, ১১ মার্চ ২০২৫, ১০:৪৭ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
দেশব্যাপী নারী নিপীড়নের ও ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে বেনাপোলে মানববন্ধন কাজিপুরে এবার অটোরিক্সা চালকের মৃতদেহ উদ্ধার  লালমনিরহাটে মাথা বিহীন মরদেহ উদ্ধার স্বামী ৩ দিনের রিমান্ডে! শ্রীপুরে চার বছরের শিশুর গায়ে সৎ বাবার গরম ছুরির ছ্যাঁকা যশোরের ঝিকরগাছায় জমি দখলকারীদের হামলায় মা-ছেলে জখম বেনাপোলে পাসপোর্টযাত্রীর জাল ভ্রমণকর সরবরাহের অভিযোগে আবারও শামিম আটক দেশব্যাপী নারী নিপীড়নের প্রতিবাদে বেনাপোল কলেজ ছাত্রদলের মানববন্ধন লালমনিরহাটে সংবাদকর্মীদের ওপর হামলা-মামলার ঘটনায় মানববন্ধন প্রতিবাদ সমাবেশ তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণ, যুবককে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে দিলো জনতা ওসির অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন, হামলায় পুলিশসহ আহত ৫ জন

নিজ ভিটায় বাড়ি পাচ্ছেন ৫ হাজার অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা, হস্তান্তর বুধবার

রিপোর্টারের নাম : / ৯৪ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : মঙ্গলবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

প্রায় এক যুগ আগে দুর্ঘটনায় কোমরের হাড় ভেঙে যাওয়ায় অচল হয়ে পড়েন রিকশাচালক নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা সামছুল হক (৭২)। সেই থেকে স্ত্রী, চার ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে অসহায়ের মতো সংসারের বোঝা টানছেন তিনি। সম্বল ছিল মুক্তিযোদ্ধা ভাতা হিসেবে পাওয়া ২০ হাজার টাকা। থাকার ঘর নির্মাণের চিন্তাও করতে পারেন না তিনি। এবার সেই সামছুল হকের চোখেমুখে আনন্দের ঝিলিক।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ‘বীর নিবাস’ প্রকল্পের আওতায় সামছুল হকের জন্য একতলা বাড়ি নির্মাণ করেছে সরকার। শুধু সামছুল হক নন, সারাদেশে এমন পাঁচ হাজার অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধার নিজস্ব জমিতে একতলা বাড়ি নির্মাণ করা হয়েছে। বাড়িগুলোর চাবি বুধবার পাঁচ হাজার মুক্তিযোদ্ধার কাছে হস্তান্তর করা হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে সকাল ১০টায় ভার্চুয়ালি এই কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে মূল অনুষ্ঠান রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে হবে।

বীর নিবাস প্রকল্পের আওতায় গত বছর সামছুল হকের জমি নির্বাচন করার পর থেকে তিনি আশায় আছেন কবে বাড়ির চাবি পাবেন। সামছুল হক সমকালকে বলেন, ‘মনে আনন্দ হাইয়ের। ২০০৬ সনের তুন আঁই ভাতা হাই। শেখ হাসিনা ভাতা বাড়াই দিছে, ইয়ারলাই আই খুশি। থাওনের আর কষ্ট নাই।’

এই প্রকল্পের বিষয়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক সমকালকে বলেন, “দেশের জন্য যাঁরা যুদ্ধ করেছেন, সেই বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অনেকেই এখনও অসচ্ছল। অনেকের থাকার ভালো ব্যবস্থা নেই। এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে পাঁচ হাজার ‘বীর নিবাস’ নির্মাণ করা হয়েছে। প্রতিটি বাড়িতে তিন বেডরুম ও একটি করে ড্রয়িং-ডাইনিং রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে এই কার্যক্রম উদ্বোধনের পর সারাদেশে পাঁচ হাজার মুক্তিযোদ্ধার কাছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা বাড়ির চাবি বুঝিয়ে দেবেন।”

আ ক ম মোজাম্মেল হক আরও বলেন, ‘আগে অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের আমরা ফ্ল্যাট নির্মাণ করে দিয়েছি। সমস্যা হলো, অধিকাংশ মুক্তিযোদ্ধা বসতভিটা ছেড়ে যেতে চান না। অনেকে বরাদ্দ পেয়ে ফ্ল্যাটগুলো অন্যভাবে (ভাড়া বা বিক্রি) ব্যবহার করেন। এজন্য অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের নিজ ভিটাতেই বাড়ি নির্মাণ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। এর আওতায় মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ৩০ হাজার বাড়ি নির্মাণ করা হবে।’

হস্তান্তরের জন্য ঢাকায় ৫৭, গাজীপুরে ৩৮, মানিকগঞ্জে ৫১, নরসিংদীতে ৩৯, নারায়ণগঞ্জে ৩২, মুন্সীগঞ্জে ৬, টাঙ্গাইলে ২০২, কিশোরগঞ্জে ১০৪, ফরিদপুরে ১২০, গোপালগঞ্জে ৫১, রাজবাড়ীতে ৫৮, শরীয়তপুরে ১২৫, মাদারীপুরে ৪৫, চট্টগ্রামে ৭৮, কক্সবাজারে ১৭, রাঙামাটিতে ৩, খাগড়াছড়িতে ৪৫, বান্দরবানে ৮, কুমিল্লায় ১৮৬, চাঁদপুরে ৮১, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ২৩০, নোয়াখালীতে ৬৪, ফেনীতে ৮১, লক্ষ্মীপুরে ৩৬, বরিশালে ৬৭, ভোলায় ৯৮, পিরোজপুরে ৮১, পটুয়াখালীতে ৪২, বরগুনায় ৩৯, ঝালকাঠিতে ৩০, খুলনায় ৮৮, বাগেরহাটে ২৭৫, সাতক্ষীরায় ১০১, যশোরে ৭৫, মাগুরায় ৩৫, ঝিনাইদহে ১৩৩, নড়াইলে ৭৭, কুষ্টিয়ায় ১৭৯, চুয়াডাঙ্গায় ৯১, মেহেরপুরে ৪৬, রাজশাহীতে ৭২, নওগাঁয় ৮০, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৪১, নাটোরে ৪৩, বগুড়ায় ৬৯, জয়পুরহাটে ৫২, পাবনায় ৯৯, সিরাজগঞ্জে ৭১, দিনাজপুরে ৯৮, ঠাকুরগাঁওয়ে ৩৮, পঞ্চগড়ে ৫৯, নীলফামারীতে ২২, রংপুরে ৬৫, গাইবান্ধায় ৯৩, লালমনিরহাটে ৩৬, কুড়িগ্রামে ৪১, ময়মনসিংহে ১৯১, নেত্রকোনায় ১২৬, জামালপুরে ৯৮, শেরপুরে ১০৬, সিলেটে ১৯, মৌলভীবাজারে ৫৯, হবিগঞ্জে ৫০ ও সুনামগঞ্জে ১৪৮টি বাড়ি প্রস্তুত করা হয়েছে।

মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, মুজিববর্ষ এবং স্বাধীনতার সুর্বণজয়ন্তী উপলক্ষে ২০২১ সালে সারা দেশে ৩০ হাজার বীর নিবাস নির্মাণের কার্যক্রম শুরু করে সরকার। প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয় ২০২৩ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত। এ পর্যায়ে পাঁচ হাজার বাড়ি নির্মাণ শেষে হস্তান্তর করা হচ্ছে। বাড়িতে দুই বেডরুম, একটি ড্রইং ও একটি ডাইনিং, দুটি বাথরুম এবং একটি বারান্দা রয়েছে। চার শতাংশ জমিতে ৭৩২ বর্গফুট আয়তনের এক-একটি বাড়ির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ১৪ লাখ ১০ হাজার ৩৮২টাকা।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
এক ক্লিকে বিভাগের খবর