বুধবার (১৬ আগস্ট) কারা মহাপরিদর্শকের পক্ষে অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক কর্নেল শেখ সুজাউর রহমান স্বাক্ষরিত এক আদেশে এ তথ্য জানানো হয়। বদলী আদেশে বলা হয় সুষ্ঠ প্রশাসন পরিচালনার স্বার্থে তাদের বদলি করা হয়। জনস্বার্থে এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা জেল সুপার শাহজাহান আহমেদ জানান,আমি অফিসের বাহিরে আছি। অফিসে যেতে এক ঘন্টা সময় লাগবে। প্রতিবেদক একঘন্টা পরে ফোন দিতে চাইলে তিনি বলেন, একটু রেস্ট নিতে দিয়েন।
এর আগে দায়িত্বে অবহেলার কারণে ৩০ জুলাই কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারের ৬ জন কারারক্ষীকে দেশের বিভিন্ন কারাগারে বদলি করা হয়। গত ২ আগস্ট জেল সুপার ওবায়দুর রহমানকে বদলি করে রাজশাহী প্রশিক্ষন কেন্দ্রের প্রধান প্রশিক্ষক হিসাবে পাঠানো হয়েছে। গত (২ আগষ্ট) বুধবার সরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের (কারা-১ শাখা) উপসচিব তাহনিয়া চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক পত্রে ওই বদলির আদেশ দেয়া হয়।
কারা কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, মহিলা কারাগারের কারারক্ষীর দায়িত্ব পালনকালে দায়িত্বে অবহেলার কারণে ৩০ জুলাই পাঠানো একটি আদেশে একযোগে ছয়জন কারারক্ষীকে তাৎক্ষণিক বদলি করা হয়েছে। বদলি করা ব্যক্তিদের মধ্যে কারারক্ষী আলেয়া চৌধুরীকে লক্ষ্মীপুর, শাম্মী আক্তারকে সুনামগঞ্জ, মোছা. সোহেলা আক্তারকে ঝালকাঠি, সেলিনা আক্তারকে শেরপুর, ঝর্ণা আক্তারকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও লাকী আক্তারকে কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাঁদের তাৎক্ষণিক কর্মমুক্তির (স্ট্যান্ড রিলিজ) আদেশে কারা মহাপরিদর্শকের পক্ষে স্বাক্ষর করেন অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক কর্নেল শেখ সুজাউর রহমান।
গত ৩১ জুলাই ডেপুটি জেলার জান্নাতুল তাইয়িবাকে কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগার
থেকে শরিয়তপুর জেলা কারাগারে বদলী করা হয়।
উল্লেখ ঢাকায় আদালতে নথিচুড়ির অভিযোগে এক শিক্ষানবিশ আইনজীবীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে কাশিমপুর মহিলা কারাগারে পাঠায়। কারাগারে থাকা অবস্থায় তাকে নির্যাতন করা হয়। গত ২৫ জুন কারাগারে বন্দী নারীকে নির্যাতনের ঘটনায় তার ভাইয়ের অভিযোগের মাধ্যমে যুব মহিলালীগের সাবেক নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়ার নির্যাতনের ঘটনা প্রকাশ পায়। লিখিতভাবে ভুক্তভোগীর ভাই গাজীপুর জেলা প্রশাসকের (ডিসি) কাছে কারাগারের ভেতর তার বোনকে নির্যাতনের ঘটনার বিচার দাবি করেন। গত ১৬ জুন থেকে কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে ঢাকার কোতোয়ালি থানায় নথি চুরির মামলায় বন্দী ছিলেন ভুক্তভোগী নারী। ২৭ জুন তিনি জামিনে মুক্তি পান।
বিভিন্ন কারণে আলোচিত যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়াকে গ্রেপ্তারের পর গাজীপুরের কাশিমপুর কারা কমপ্লেক্সের অভ্যন্তরে কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগারে রাখা হয়। তিনি অপরাধ কার্যক্রম শুরু করেন কারাগারের ভেতর। সেখানে তার কর্তৃত্ব বিস্তারে গড়ে তোলেন অনুগত বাহিনী। কারাগারে বন্দি ও অন্য নারীদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিতেন তাদের টাকা-পয়সা ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। তাদের ওপর চালাতেন অমানুষিক নির্যাতন। কয়েকজন কারারক্ষী এবং নারী বন্দি তার এসব কাজে সহযোগিতা করতেন বলে জানা গেছে। ওই ঘটনার পর পাপিয়াকে কুমিল্লা কারাগারে পাঠানো হয়।