পাহাড়ের জীবনে সমতলের স্বাচ্ছন্দ্য
![](https://kolomerbatra.com/wp-content/uploads/2023/08/Screenshot_7-4.jpg)
বর্তমান সরকারের আমলে ৯২ কোটি ১৯ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে মহালছড়ি-সিন্দুকছড়ি-জালিয়াপাড়া সড়কের সিন্দুকছড়ি থেকে মহালছড়ি পর্যন্ত সড়ক। এটি বাস্তবায়ন করেছে সেনাবাহিনীর ২০ ইসিবি। ১৯ কোটি ৩৭ লাখ টাকা ব্যয়ে খাগড়াছড়ি-দীঘিনালা-বাঘাইহাট সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। এটি পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের ছয়টি সড়ক নির্মাণ উন্নয়ন প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত। ৮৫ কোটি ৩৪ লাখ টাকা ব্যয়ে বাঘাইহাট-মাচালং-সাজেক সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। দীঘিনালা-ছোটমেরুং-চাংড়াছড়ি-লংগদু সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে ৩৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে। পাঁচ কোটি ৫৫ লাখ টাকা ব্যয়ে দীঘিনালা-মারিশ্যা সড়কের অবশিষ্ট কাজ শেষ করা হয়েছে। এসব সড়ক নির্মাণ করেছে সেনাবাহিনীর ১৯ ইসিবি। এ ছাড়া আরো বেশ কিছু সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে।
জানা গেছে, তিন পার্বত্য জেলাকে এক সড়কে সংযুক্ত করতে বর্তমান সরকার এক হাজার ৩৬ কিলোমিটার সীমান্ত সড়ক নির্মাণ করছে। রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান পার্বত্য জেলার সীমান্তে পাহাড়ের চূড়ায় নির্মিত হচ্ছে এই সড়ক। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।
শিক্ষা-স্বাস্থ্যে উন্নয়ন
খাগড়াছড়িতে গত এক দশকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা অনেক বেড়েছে। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর শিশুরাও এসেছে শিক্ষার আওতায়। জেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, ২০০৫-০৬ অর্থবছরে এ জেলায় ৪০টি মাধ্যমিক স্কুল ছিল। ২০২২-২৩ অর্থবছরে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪০। শিক্ষকের সংখ্যা ৩৯৮ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ১০৫। ২০০৫-০৬ অর্থবছরে এ জেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিল ৬৬ হাজার, বর্তমানে তা বেড়ে হয়েছে ৮৯ হাজার।
খাগড়াছড়ি জেলার মানিকছড়ি, রামগড়, দীঘিনালা ও লক্ষ্মীছড়ি উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১০ থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়েছে। আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালটি ১০০ থেকে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট করা হচ্ছে। রাস্তাঘাটের ব্যাপক উন্নয়ন হওয়ায় সেখানে বসবাসকারীরা বর্তমানে সহজে চিকিৎসাসেবা নিতে হাসপাতালে আসতে পারছে।
জানতে চাইলে খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি ডিগ্রি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সজীব মিয়া কালের কণ্ঠকে বলেন, সিন্দুকছড়ি এলাকায় নতুন রাস্তা হয়েছে। এতে খাগড়াছড়ি এলাকার যোগাযোগব্যবস্থা পাল্টে গেছে। এলাকায় অনেকে সরকারি ঘর (আশ্রয়ণ প্রকল্প) পেয়েছে। ছোট ছোট কালভার্ট হয়েছে।
খাগড়াছড়ির পংখী মুড়া এলাকার বাসিন্দা টিটং ত্রিপুরা কালের কণ্ঠকে বলেন, আগে সহজে স্কুলে যাওয়া যেত না। সিন্দুকছড়ির এই রাস্তা ছিল না। তখন খুব কষ্ট হতো। এখন সহজে গাড়িতে করে স্কুলে যেতে পারি।
মাটিরাঙ্গা উপজেলার দলিয়া এলাকার বাসিন্দা শিয়াংশু মারমা বলেন, কেউ অসুস্থ হলে আগে সহজে হাসপাতালে নেওয়া যেত না। রাস্তা হওয়ায় এখন রোগীদের সহজে স্বল্প সময়ে ডাক্তারের কাছে নেওয়া যায়। এর চেয়ে বড় উন্নয়ন আর কী লাগে!
রামগড় স্থলবন্দর পাল্টে দেবে সীমান্তের চিত্র
আশা করা হচ্ছে, খাগড়াছড়ি জেলায় গড়ে ওঠা রামগড় স্থলবন্দর পার্বত্য চট্টগ্রাসহ দেশের অর্থনীতির চিত্র পাল্টে দেবে। চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সাত রাজ্যের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়বে। রামগড় স্থলবন্দর চালু হলে ভারতের সঙ্গে পণ্য আনা-নেওয়া আরো সহজ হবে। কমবে পরিবহন ব্যয়ও।
খাগড়াছড়ি সদরে ফোর পয়েন্টস ক্যাফে অ্যান্ড রেস্টুরেন্টের মালিক শওকত বাহারের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, খাগড়াছড়ি বদলে গেছে। এখানে নতুন নতুন অনেক রেস্টুরেন্ট হয়েছে। দিন দিন পর্যটকও বাড়ছে।