শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৫, ১০:৫৪ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
বিশ্ব ইজতেমায় বয়ান শুনে ধ্যানে মগ্ন মুসল্লিরা সলঙ্গায় অসহায়দের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ টঙ্গী বিশ্ব ইজতেমায় লাখো মুসল্লির জুমার নামাজ আদায় টঙ্গী বিশ্ব ইজতেমায় এক মুসল্লীর মৃত্যু কোনাবাড়ীতে হোটেল হ্যাভেন ফ্রেসে চলছে রমরমা দেহ ব্যবসা গাজীপুরে ১০ হাজার পিস ইয়াবাসহ নারী মাদককারবারি গ্রেপ্তার গ্লোবাল র‍্যাঙ্কিংয়ে বশেমুরকৃবি’র প্রথম স্থান অর্জন উৎসব ও বিশ্বদ্যিালয় দিবস উদযাপন ১ ফেব্রুয়ারি স্বাধীনতার পর জাতির জন্য ভালো কিছু হয়নি তাতে একমত হবো না” ডাঃ শফিকুর রহমান কুড়িগ্রামে অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযান- ১টির কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে বন্ধ ভাঙ্গুড়া দিয়ার পাড়া দাখিল মাদ্রাসার ২১ তম বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শক দল শনাক্ত করতে পারবে ইচ্ছাকৃত খেলাপি

রিপোর্টারের নাম : / ৪৯ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : রবিবার, ২৪ মার্চ, ২০২৪

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শক দল বাণিজ্যিক ব্যাংকের যেকোনো শাখায় পরিদর্শনে গিয়ে কোনো ঋণখেলাপি গ্রাহককে ইচ্ছাকৃত খেলাপি হিসাবে চিহ্নিত করতে পারবে। এক্ষেত্রে পরিদর্শক দল গ্রহীতার খেলাপি হওয়ার কারণ, ঋণ পরিশোধের আগের রেকর্ড, ব্যাংক-গ্রাহকের মধ্যকার সম্পর্কের ধরন, ঋণের বিপরীতে জামানতের পর্যাপ্ততা বিবেচনায় নেবে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক ১২ মার্চ বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ঋণখেলাপিদের মধ্যে থেকে ইচ্ছাকৃত খেলাপি শনাক্ত করার নীতিমালা জারি করেছে। ওই নীতিমালায় বাণিজ্যিক ব্যাংকের ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি শনাক্তকরণ ইউনিটকে কোনো ঋণখেলাপি ইচ্ছাকৃত খেলাপি হবেন তা শনাক্ত করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শক দলকেও ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি শনাক্ত করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এই নীতিমালার আলোকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রণীত ম্যানুয়াল অনুযায়ী পরিদর্শন দল উল্লি­খিত নির্দেশনা অনুসরণ করবে।

ম্যানুয়ালে উল্লে­খ করা হয়, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শক দল বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর যে শাখা পরিদর্শনে গিয়ে তারা ঋণখেলাপিদের কেস স্টাডি পর্যালোচনা করতে পারবে। ওই পর্যালোচনায় যদি দেখা যায়, ঋণের বিপরীতে পর্যাপ্ত জামানত নেই, গ্রাহকের সম্পদ থাকা সত্ত্বেও ঋণ পরিশোধ করছেন না, অথচ অন্য নামে অন্য ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন, ঋণের টাকা পাচার করার নজির পেলে, ঋণের টাকা অন্যত্র স্থানান্তর করলে, ঋণের জামানত সরিয়ে নিলে, কোনো জাল-জালিয়াতি বা প্রতারণার আশ্রয় নিলে ওই গ্রাহককে ইচ্ছাকৃত খেলাপি হিসাবে চিহ্নিত করতে পারবে।

এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, এটি ভালো উদ্যোগ। তবে এর প্রয়োগ কতটুকু সম্ভব হবে সেটি এখন দেখার বিষয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওপর রাজনৈতিক চাপ না থাকলে এটি করা সম্ভব। কিন্তু রাজনৈতিক চাপ এলে কিছুই হবে না। অনেক আইনের মতো এটি শুধু কাগুজে আইন হিসাবেই সীমাবদ্ধ থেকে যাবে। খেলাপিরা সবাই সম্পদশালী। আইনের প্রয়োগ হলে খেলাপি ঋণ আদায় হবে। কিন্তু ঋণ বাড়িয়ে বা অবলোপন করে খেলাপি কমানো ঠিক হবে না। আদায় করেই কমানো উচিত।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শক দল কোনো খেলাপিকে ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণ গ্রহীতা হিসাবে শনাক্ত করলে ব্যাংকের ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি শনাক্তকরণ ইউনিট গ্রাহককে শনাক্তকরণের কারণ উল্লেখপূর্বক তার বক্তব্য উপস্থাপনের জন্য ১৪ কর্মদিবস সময় দিয়ে নোটিশ দেবে। ওই সময়ের মধ্যে গ্রাহক জবাব না দিলে বা গ্রাহকের দেওয়া জবাব গ্রহণযোগ্য না হলে তিনি ইচ্ছাকৃত খেলাপি হিসাবে চিহ্নিত হবেন। এক্ষেত্রে ওই ইউনিট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের অনুমোদন নিয়ে তা চূড়ান্ত করবে। এরপর ৭ কার্যদিবসের মধ্যে তা গ্রাহককে জানাতে হবে। গ্রাহক এক্ষেত্রে ভিন্নমত পোষণ করলে ৩০ দিনের মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে আবেদন করতে পারবে। ওই সময়ের মধ্যে গ্রাহক আবেদন না করলে বা কেন্দ্রীয় ব্যাংক তার বক্তব্য গ্রহণ না করলে তিনি চূড়ান্তভাবে ইচ্ছাকৃত খেলাপি হিসাবে চিহ্নিত হবে।

এরপর ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি হিসাবে তার তালিকা কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিভিন্ন সরকারি সংস্থার কাছে পাঠাতে পারবে। একই সঙ্গে ওইসব সংস্থার দেওয়া সেবা থেকে বিরত রাখার ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করতে পারবে। আইন অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। এর মধ্যে ওই গ্রাহক বিমানে চড়তে পারবেন না, নতুন ব্যবসা করার জন্য কোনো ট্রেড লাইসেন্স করতে পারবেন না, জয়েন্ট স্টক কোম্পানি অ্যান্ড নিবন্ধন ফার্মস থেকে কোনো কোম্পানির নিবন্ধন নিতে পারবেন না, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন থেকে বাজার থেকে পুঁজি সংগ্রহ বা বন্ড ছাড়ার অনুমোন পাবেন না। এ ছাড়া জমি, প্লট, ফ্ল্যাট, গাড়ি কিনে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো থেকে কোনো নিবন্ধন পাবেন না। তবে গ্রাহক যদি আদালতে মামলা করে ব্যাংক বা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওই সিদ্ধান্তকে স্থগিত করতে আদালতের আদেশ পান, তবে এসব বিষয় স্থগিত থাকবে।

প্রচলিত আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্তৃক পরীক্ষান্তে ওই গ্রাহক ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি হিসাবে চিহ্নিত না হলে তা চূড়ান্ত করার পূর্বে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট পরিদর্শন বিভাগের কাছে শনাক্তকৃত না হওয়ার কারণ উল্লেখ করে পত্র দিতে হবে। এর বিপরীতে পরিদর্শন বিভাগের মতামতের ভিত্তিতে ব্যাংককে তা চূড়ান্ত করতে হবে। অর্থাৎ কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকের ব্যাখ্যা গ্রহণ করলে ওই গ্রাহক ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপির তালিকা থেকে মুক্ত হবেন। আর কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকের ব্যাখ্যা গ্রহণ না করলে তিনি ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি হিসাবে চিহ্নিত হবেন। এক্ষেত্রে আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ওইসব ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

প্রচলিত আইন অনুযায়ী বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শক দল যেকোনো ব্যাংকের শাখায় পরিদর্শনে গিয়ে যে কোনো গ্রাহককে খেলাপি হিসাবে চিহ্নিত করতে পারে। এখন তারা সাধারণত গ্রাহকের ঋণের বিপরীতে যথেষ্ট জামানত না থাকলে, ঋণ পরিশোধের রেকর্ড খুব দুর্বল থাকলে বা ব্যাংকের সঙ্গে গ্রাহকের কোনো যোগাযোগ না থাকলে, ঋণের টাকা পাচার হওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেলে ওই ঋণগ্রহীতাকে খেলাপি হিসাবে চিহ্নিত করেন। ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণ কম দেখাতে এই ধরনের গ্রাহককে খেলাপি না করলেও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শক দল পরিদর্শনে গিয়ে ওই সব ঋণগ্রহীতাকে খেলাপি হিসাবে চিহ্নিত করে। কোনো গ্রাহককে কেন্দ্রীয় ব্যাংক একবার খেলাপি করলে তাদের অনুমোদন ছাড়া ওই গ্রাহককে ব্যাংক আর নবায়ন করতে পারে না। এখন পরিদর্শক দল কোনো খেলাপিকে ইচ্ছাকৃত খেলাপি হিসাবে চিহ্নিত করার ক্ষমতাও পেল। তারা কোনো খেলাপিকে ইচ্ছাকৃত খেলাপি হিসাবে চিহ্নিত করলে তাদের অনুমোদন ছাড়া ওই গ্রাহককে ইচ্ছাকৃত খেলাপির তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার সুযোগ নেই।

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর

এক ক্লিকে বিভাগের খবর