সোমবার, ০৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৫:০০ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
সিরাজগঞ্জের সলঙ্গায় হেরোইনসহ দুই মাদক ব্যাবসায়ী গ্রেফতার বেনাপোলে মামলায় একজনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড পাবনায় গ্রেফতার আ.লীগ নেতাকে ছিনিয়ে নিলেন স্থানীয়রা লালমনিরহাটে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সভাপতি জিহান আটক! জয়পুরহাটে ওসির বদলি আদেশ ঠেকাতে মানববন্ধন কুড়িগ্রামে ২ টি অবৈধ ইটভাটার সকল কার্যক্রম বন্ধ করে দিলো প্রশাসন  বশেমুরকৃবি’তে টিএইচই র‍্যাঙ্কিংয়ে ১ম স্থান অর্জন উৎসব ও বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপিত রাজশাহীতে ‘গ্রীন প্লাজা’র ষষ্ঠ প্রকল্পের উদ্বোধন কোম্পানীগঞ্জে মাঝিরটেক টি-টেন ক্রিকেট টুর্নামেন্টর ফাইনাল অনুষ্ঠিত ভাঙ্গুড়ায় জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সভা অনুষ্ঠিত 

ব্যাংক খাতে আমানত বেড়েছে : বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন

রিপোর্টারের নাম : / ৫০ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : শনিবার, ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

ব্যাংক খাতের আমানত আবারো বাড়ছে। সমাপ্ত ২০২৩ সালের ডিসেম্বর শেষে ব্যাংক খাতে মোট আমানত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬ লাখ ৫৪ হাজার কোটি টাকা। যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ১৪ লাখ ৮৯ হাজার কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ব্যাংক খাতে আমানত প্রবৃদ্ধির হার বেড়ে পৌঁছায় ১১ দশমিক ৪ শতাংশে। এ হার গত ২৮ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর আগে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে করোনা মহামারির বৈশ্বিক লকডাউন ও সে কারণে হওয়া অর্থনৈতিক গতিমন্থরতার প্রভাবে আমানত প্রবৃদ্ধির হার ১১ দশমিক ২৬ শতাংশে পৌঁছেছিল।

এ ব্যাপারে নাম না প্রকাশের শর্তে, বেসরকারি একটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, স্মার্ট রেট অনুযায়ী সুদহার বাড়ানো হচ্ছে। ফেব্রুয়ারি মাসের জন্য ব্যাংকের বিনিয়োগে (ঋণে) সর্বোচ্চ সুদহার ১২ দশমিক ৪৩ শতাংশ বেধে দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর মধ্যে তারল্য সংকটে থাকা ইসলামী ব্যাংক আরো প্রতিযোগিতামূলক হারে, সর্বোচ্চ ১১ থেকে ১২ শতাংশ সুদে আমানত নিচ্ছে। আমানতে প্রবৃদ্ধির যা অন্যতম প্রধান কারণ।

তথ্য মতে- ২০২০ সালের এপ্রিলে ঋণের সুদহারে এক অংকের যে সীমা বেধে দেয়া হয়েছিল, তা প্রত্যাহারের পরেই আমানতে সুদহার বাড়তে শুরু করে। গত বছরের জুনে তা ৭ দশমিক ৫ শতাংশ থাকলেও ডিসেম্বরে সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ হয়। তবে ডিসেম্বরে মূল্যস্ফীতির হার ৯ দশমিক ৪৮ শতাংশ হওয়ার পরেও প্রধান প্রধান ব্যাংকগুলো আমানতে সর্বোচ্চ ৮ শতাংশ সুদ দিয়েছে।

এ ব্যাপারে গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, ঋণের সুদহারে সীমা তুলে নেয়ার কারণে গ্রাহকের আমানতের সুদহার বাড়ছে। আমাদের অর্থনীতির জন্য এটি একটা পজেটিভ দিক।তিনি বলেন, পলিসি রেট (নীতি সুদহার) বৃদ্ধির কারণে সব ধরণের সুদহারে কিছুটা প্রতিফলন তৈরি হয়েছে। যদিও এখনো মুল্যস্ফীতি রেটের তুলনায় আমানতের রেট কম। আমানতের রেট আরো বাড়াতে হলে লেন্ডিং রেট (ঋণের সুদহার) আরো বাড়তে হবে।

জানা যায়- ২০২৩ সালের জুলাই থেকে ব্যাংক ঋণের সুদহার সীমা তুলে নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক স্মার্ট রেট ঘোষণা করেছে। সেপ্টেম্বরে সুদহারের ব্যবধানের (স্প্রেড) সীমাও তুলে নেয়া হয়। সুদহারের ব্যবধান হলো- ব্যাংকগুলো বেসরকারি গ্রাহকদের যে সুদে ঋণ দেয়, তা থেকে বাণিজ্যিক বা অন্যান্য ব্যাংক ডিমান্ড, মেয়াদি, বা সঞ্চয়ী আমানতের বিপরীতে আমানতকারীকে যে হারে সুদ দেয় তা বাদ দিলে যা পাওয়া যায়, সেই পার্থক্য। ব্যাংকাররা বলছেন, এসব পদক্ষেপের কারণে ব্যাংকগুলো এখন উচ্চ সুদহারে আমানত নিতে পারছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা বলেন, বর্তমানে গ্রাহকের ঋণের রেট পরিবর্তন হচ্ছে ছয় মাসের ট্রেজারি-বিল বন্ডের গড় রেটের (স্মার্ট) ওপর ভিত্তি করে। এরসঙ্গে আরো ব্যাংকগুলো ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ মার্জিন যোগ করে গ্রাহকে ঋণ দিতে পারে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য মতে- গত বছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর সময়ে ব্যাংকের বাইরে থাকা টাকার পরিমাণ কমেছে ৩৭ হাজার ৫৩ কোটি টাকা।এদিকে গত জানুয়ারিতে চলতি অর্থবছরের শেষ ছয় মাসের জন্য মুদ্রানীতির ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। মূল্যস্ফীতির হার ৭ দশমিক ৫ শতাংশে নামিয়ে আনতে যেখানে বাজারে অর্থের জোগান কমানোর পদক্ষেপ ছিল। অর্থের সরবরাহ আরো আঁটসাঁট করা হলে তখন আমানতের সুদহার আরো বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। এতে সঞ্চয়ের ওপর ভালো সুদ পেয়ে আমানতকারীরাও লাভবান হবেন।

চলতি অর্থবছরের জন্য বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ১১ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে ঋণের প্রবৃদ্ধি ১০ শতাংশেরও কম হয়েছিল। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, ২০২৩ এর জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে ভোক্তা ঋণের প্রবৃদ্ধি হয়েছে নেতিবাচক শূন্য দশমিক ৬৮ শতাংশ। সে তুলনায় আগের এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৮ দশমিক ৬৭ শতাংশ।দেশের অর্থনৈতিক প্রতিকূলতার মধ্যে মানুষ ভবিষ্যতের কথা ভেবে খরচ কমিয়ে সঞ্চয়ে আগ্রহী হচ্ছে– এমন চিত্রই উঠে এছে মোটরযান, মোবাইল, পোশাক, জুতা, সিমেন্ট, সিরামিকস ইত্যাদি পণ্যের বিক্রি কমার তথ্যে। যে কারণে ভোক্তা ঋণের চাহিদাও কমেছে।

তবে আমানত বাড়লেও, ব্যাংকগুলো এখনো গভীর তারল্য সংকটের মধ্যে আছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে তারা দৈনিক ৩০ থেকে ৩৫ হাজার কোটি টাকা ধার করছে। এদিকে সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতি সুদহার বাড়ানোর পরে এক ব্যাংকের অন্য ব্যাংক থেকে একদিনের জন্য সুদে টাকা ধারের হার অর্থাৎ গড় কল মানি রেট দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৬০ শতাংশে। এটি ১২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রদত্ত তথ্য অনুযায়ী, ২৮ জানুয়ারি কল মানিতে ৩ হাজার ২৫১ কোটি টাকা ধার নেয় ব্যাংকগুলো। এ চাহিদার ফলে কল মানি বাজারে গড় সুদহার পৌঁছায় ৯ দশমিক ৬০ শতাংশে। ২০১৩ সালের পর যা সবচেয়ে বেশি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর

এক ক্লিকে বিভাগের খবর