বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ০৬:৫২ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
আব্দুল আলীমের মরদেহ দীর্ঘ আড়াই বছর পর ময়নাতদন্তের জন্য উত্তোলন অতীতে ঘরে ঘরে চাকরি দেবার নাম করে হাহাকার দিয়ে গেছে রাজনৈতিক দলগুলো কেন্দ্রীয় জাকের পার্টির নেতা রবিউল ইসলাম রবি ভাঙ্গুড়ায় পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু বেনাপোলে বিজিবি-বিএসএফ সেক্টর কমান্ডার পর্যায়ে সীমান্ত সম্মেলন অনুষ্ঠিত সলঙ্গায় সেচ্ছাসেবকদলের শীতবস্ত্র বিতরণ গাজীপুরে ৯ কেজি গাঁজাসহ গ্রেফতার-১ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ডিসপ্লে-তে ভেসে উঠেলো ‘ছাত্রলীগ আবার ভয়ংকর রূপে ফিরবে আদম ব্যবসায়ী শাহীন ও মশিয়ারের বিরুদ্ধে প্রতারণা মামলা সৌদি আরবে অবৈধ অভিবাসী! কুড়িগ্রামে এম আর বি ইকো ব্রিকসকে পাঁচ লক্ষ টাকা জরিমানা শার্শা সরকারি টেকনিকেল স্কুল এন্ড কলেজ ২ দিনব্যাপি বিজ্ঞান মেলা

ভারতের সাত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে ঢাকায় আমন্ত্রণ

রিপোর্টারের নাম : / ১২৯ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : রবিবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২২

ব্যবসাবাণিজ্য বাড়ানোসহ কূটনৈতিক সম্পর্ক সুদৃঢ় করতে ভারতের উত্তর-পূর্বের ৭ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের ৩ দিনের জন্য ঢাকা সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছে বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সদ্য সমাপ্ত নয়াদিল্লি সফরে এ আমন্ত্রণ জানানো হয়। প্রসঙ্গত, ভারতের উত্তর-পূর্বে বাংলাদেশের বৃহত্তর সিলেট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা ও কুড়িগ্রাম অঞ্চল লাগোয়া সাতটি রাজ্য হয়েছে। এই সাতটি রাজ্যের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও বৃহত্তম হচ্ছে আসাম। আসামের মুখ্যমন্ত্রী ড. হিমন্ত বিশ্বশর্মাকে আগেই ঢাকা সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছিল বাংলাদেশ।

সংশ্লিষ্টদের মতে, সাত মুখ্যমন্ত্রী ঢাকা সফর করলে বাংলাদেশ-ভারতের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের একটি নতুন অধ্যায় উন্মোচনে সাহায্য করবে এবং উভয় অঞ্চল তাদের কূটনৈতিক সম্পর্ককে দৃঢ় করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশ যেমন উত্তর-পূর্ব ভারতে বিশেষ করে আসামের শান্তি প্রক্রিয়ার পথ প্রশস্ত করেছে; তেমনি উত্তর-পূর্ব ভারতের এখন বাংলাদেশের দাবি পূরণের পথ প্রশস্ত করা উচিত। তাতে কানেক্টিভিটি, আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্য, পারস্পরিক আস্থার ক্ষেত্রে দুই পক্ষের ভালো স্বার্থ নিশ্চিত হবে। লাভবান হবে দুই পক্ষই।

ঢাকায় গতকাল শনিবার এডিটরস গিল্ডের সভাপতি মোজাম্মেল বাবু ও ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্তের সঞ্চালনায় ‘প্রতিবেশী কূটনীতির রোল মডেল’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় অংশ নিয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম সাত মুখ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানানোর তথ্য প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ভারত সরকার তাদের এই আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছে। তবে কবে উত্তর-পূর্বের মুখ্যমন্ত্রীরা ঢাকা সফর করবেন তার বিস্তারিত তিনি বলেননি। গোলটেবিল আলোচনায় অংশ নেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আইনুন নিশাত, ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকার সাংবাদিক অগ্নি রায়, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. আমেনা মহসিন, টাইমস অব ইন্ডিয়ার এসিস্ট্যান্ট এডিটর মহুয়া চট্টোপাধ্যায়, সাবেক রাষ্ট্রদূত মুন্সি ফয়েজ আহমদ, টেলিগ্রাফের সাংবাদিক দেবদীপ পুরোহিত, পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের (পিআরআইবি) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর এবং দ্য হিন্দু পত্রিকার প্রতিবেদক কল্লোল ভট্টাচার্য। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের নানা বিষয় নিয়ে এই গোলটেবিল আলোচনা হয়।

আলোচনায় অংশ নিয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, সংস্কৃতি, অর্থনীতি, ভাষা, রাজনৈতিক ইতিহাস এবং ধর্মের দিক থেকে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অনেক মিল রয়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতায় ভারত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করলেও নয়াদিল্লি ও ঢাকার মধ্যে সম্পর্ক কখনোই বিশেষভাবে সৌহার্দ্যপূর্ণ বা ঝামেলামুক্ত ছিল না। এখন রাজনৈতিকভাবে অনেকটাই স্থিতিশীলতা এসেছে। এ অবস্থায় আমরা ভারতের উত্তর-পূর্বের সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের ঢাকা সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছি। তিনি বলেন, গত একযুগের মধ্যে অত্যন্ত সফলতম ছিল এবারের ভারত সফর। যারা এই সফর হওয়ার আগে এবং পরে অণুবীক্ষণ-দূরবীক্ষণ যন্ত্র দিয়ে, রাজনৈতিক মতাদর্শ দিয়ে পর্যবেক্ষণ করেন; তাদের কাছে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক একটি রাজনৈতিক হাতিয়ার। তিনি বলেন, এই সফরে ৩৩ দফার একটি যৌথ ইশতেহার প্রকাশ করা হয়েছে। যেখানে সাতটি সমঝোতার উল্লেখ আছে, ছয়টি প্রকল্পের উদ্বোধন কিংবা কনস্ট্রাকশন শুরু অথবা কোন পর্যায়ে আছে- সেটি দুই জাতিকে অবহিত করা হয়েছে। এই সফরের পরিপ্রেক্ষিতে আমি মনে করি না ‘চাওয়া-পাওয়ার’ কথা একেবারেই বাদ দিয়ে দিতে হবে। একটি সফরে কেউ কম পাবে, কেউ বেশি পাবে। এখানে বাংলাদেশ অবশ্যই একটি পর্যায়ে এসেছে- যা আমরা ডিজার্ভ করে। তিনি আরো বলেন, অর্থনীতির জায়গা থেকে বাংলাদেশ সবারই দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।

আলোচনায় শ্যামল দত্ত বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী যখন ভারত সফরে যান; তখন একটা প্রত্যাশার পারদ তৈরি হয়ে যায়। প্রাপ্তি আর অপ্রাপ্তি নিয়ে অনেক আলোচনা আছে। ফলে একটা প্রকৃত মূল্যায়ন আমরা চাই। বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক এমন একটি জায়গায় চলে গেছে যেটিকে আমি এখন মনে করি যে ‘চাওয়া-পাওয়ার’ মধ্যে নেই। দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে যখন বৈঠক হয় তখন সব বিষয় আলোচনায় আসে। এবার খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে দুই প্রধানমন্ত্রীর একান্ত বৈঠক। তারা একান্তে প্রায় আধঘণ্টা বৈঠক করেছেন। পাশাপাশি দুজন আরো এক ঘণ্টা মধ্যাহ্নভোজে আলোচনা করেছেন। মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ভারতীয় সেনাদের পরিবারকে বৃত্তি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সাতটি সমঝোতা চুক্তি সই হয়েছে, বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। একটি বৈশ্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে আমরা এই সফরটিকে দেখতে চাই।

দেবদীপ পুরোহিত বলেন, ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে লোকজন নানা কথা বলবে। আমি মনে করি, বাংলাদেশ-ভারত প্রতিবেশী। এখানে সম্পর্কের অনেক ডায়নামিক্স আছে। কিছু ভালো হবে কিছু খারাপ হবে। তবে ফোকাসটা যাতে আমরা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি- এটা একটা সম্পর্কের স্পিরিট হওয়া উচিত। তিনি আরো বলেন, ভারত বাংলাদেশ সম্পর্কে ডায়নামিক্সটা এমন হয়ে গেছে, প্রথম প্রশ্নই আসে- বাংলাদেশ কী পেল? আমি ২০১১ সাল থেকে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক কাভার করছি। আমার কাছে এবারের সফর খুব ইন্টারেস্টিং এবং অত্যন্ত ইতিবাচক মনে হয়েছে।

সাবেক রাষ্ট্রদূত মুন্সি ফয়েজ আহমদ বলেন, ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক এখন অনেক পরিণত। যিনি বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করছেন তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন- জাতীয় স্বার্থ নিয়ে আমি যদি এগিয়ে যাই তাহলে আমার দেশ এবং বন্ধু সবাই উপকৃত হয়। ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। যখন এই আস্থা নিশ্চিত হয়ে যায়- ভারত আছে আমার চারপাশে এবং আমার নিরাপত্তা নিশ্চিত, আমরা আছি ভারতের পেটের ভেতরে। আমাদের দিক থেকে ভারতের নিরাপত্তার শঙ্কা নেই। এই আস্থার জায়গা তৈরি হলে আমরা চারদিকে সবার সহযোগিতার হাত গ্রহণ করতে পারি। সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে পারি বিনা দ্বিধায়।

অগ্নি রায় বলেন, আগে এক সময় আমরা দূতাবাসের ঠিকানাই জানতাম না, যাওয়া হতো না। একমাত্র দুদেশের সীমান্তরক্ষীর মিটিং হলে তখন প্রেস কনফারেন্সের একটি কাগজ দিয়ে দিত। আর এখন দূতাবাসে গিয়ে চা খেতে খেতে ভিসা হয়ে গেল, চলে এলাম। এটা কী বুঝিয়ে দেয় না যে সম্পর্ক কতটা বদলে গেছে। সুতরাং ‘চাওয়া পাওয়া’র মধ্যে ভারত বাংলাদেশ সম্পর্ক যদি ফ্রেম করে রাখি, তাহলে মনে হয় একটু অবিচার করা হয়ে যাবে।

আহসান এইচ মনসুর বলেন, প্রতিবেশী কূটনীতির রোল মডেলে আমরা পৌঁছাইনি; তবে সে পথে হাঁটছি। আমাকে যদি বলা হয় রোল মডেল কোথায়, আমি তাহলে বলবো ইউরোপীয় ইউনিয়নে এটা আমি দেখি। সাউথ এশিয়ার প্রেক্ষাপটে অবশ্যই আমরা রোল মডেল, তবে বৈশ্বিক বিবেচনায় আমাদের আরো এগুতে হবে।

মহুয়া চট্টোপাধ্যায় বলেন, দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরের দুই মাস আগেও আমরা ঢাকায় এক রকম তোড়জোড় দেখেছি। আমরা যারা বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক কাভার করি, তাদের মধ্যেও কিন্তু একটা প্রস্তুতি ছিল। এই তিন বছরে বাণিজ্য, অর্থনীতি ছাড়াও রাজনৈতিক অনেক ঘটনা ঘটে গেছে।

অধ্যাপক ড. আমেনা মহসিন বলেন, বৈদেশিক নীতি একটা পদ্ধতিগত বিষয়। সেই জায়গা থেকে বললে আমরা সঠিক পথে আছি। এখানে এত চিন্তা ভাবনার সুযোগ নেই। আমার কাছে এই সফরের সবচেয়ে ইতিবাচক দিক মনে হয়েছে কানেক্টিভিটির জায়গা। এই জায়গা ভীষণভাবে ফোকাসড ছিল।

কল্লোল ভট্টাচার্য বলেন, সফরটি খুবই সফল হয়েছে। এখন যদি ভারতের নর্থইস্টের সঙ্গে ভালো কানেক্টিভিটি হয় তাহলে আরো ফলপ্রসূ হবে। তিনি বলেন, নর্থইস্টের সঙ্গে যদি বাংলাদেশের ট্রানজিট, এনার্জি, ট্যুরিজম চালু করা যায় তাহলে ওই অঞ্চলের চিত্র পাল্টে যাবে।

অধ্যাপক ড. আইনুন নিশাত বলেন, ১৯৭২ সালে মুজিব-ইন্দিরা যে চুক্তি হয়েছিল এবং তাতে নদীর পানি ব্যবস্থাপনার যেসব কথা বলা হয়েছিল তা ২০১১ সালে শেখ হাসিনা আবার ফিরিয়ে এনেছেন। এখন সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে, পুরনো কথায় পড়ে থাকলে হবে না।

তথ্য ঘেঁটে দেখা গেছে, গেল জুন মাসে আসামের রাজধানী গুয়াহাটিতে অনুষ্ঠিত নদী সম্মেলনের ফাঁকে এক বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের কাছে আসামের মুখ্যমন্ত্রী ড. হিমন্ত বিশ্বশর্মা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সন্ত্রাস ও বিদ্রোহের প্রতি তার প্রশাসনের ‘জিরো টলারেন্স নীতি’র জন্য প্রশংসা করে বলেছেন- এই অঞ্চলের সন্ত্রাস দমনে বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এর ফলে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে। এর আগে, ভারতীয় এনএসজি’র (ন্যাশনাল সিকিউরিটি গার্ড) সাবেক মহাপরিচালক জয়ন্ত নারায়ণ চৌধুরী বলেছেন, ভারত তার উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে যে নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জগুলোর মুখোমুখি হয়েছিল তা নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্টদের মতে, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ, জটিল এবং বিস্তৃত সম্পর্ক এবং অংশীদারিত্ব রয়েছে। এই অংশীদারিত্বের অপর অংশীদার আসাম। ভারতের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের বৃহত্তম রাজ্য আসাম এবং বাংলাদেশের মধ্যে প্রায় ২৬৩ কিলোমিটার নদী এবং স্থল সীমান্ত রয়েছে। আয়তন, জনসংখ্যা এবং অবস্থান বিবেচনায় বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসাবাণিজ্য দুই পক্ষেই একে অন্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস. জয়শঙ্কর ২০২০ সালের মে মাসে যখন ঢাকা সফর করেন, তখন শেখ হাসিনা ভারতকে চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহারের প্রস্তাব দেন। কিন্তু ভারত এখনো এটি পুরোদস্তুরভাবে ব্যবহার করা শুরু করেনি। এটা শুরু হলে বাংলাদেশ এবং ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সংযোগে ব্যাপক সাফল্য নিয়ে আসবে। দুই দেশের নীতিনির্ধারকরা মনে করছেন, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের সিংহভাগই পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের সঙ্গে সংযুক্ত। বাণিজ্যিক কার্যক্রমের দিক থেকে, ভারতের এই বাংলাভাষী অঞ্চলের সঙ্গে বাংলাদেশের মানুষের আলাদা টান রয়েছে। ঠিক একইভাবে যদি বাংলাদেশের সঙ্গে উত্তর-পূর্ব ভারতের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ও বাণিজ্যের উন্নতি ঘটে, তাহলে পুরো অঞ্চলের চিত্র পাল্টে যাবে।

নুমালিগড় রিফাইনারি লিমিটেড এবং বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের মধ্যে যৌথ উদ্যোগে, বাংলাদেশ ও ভারত আসামের নুমালিগড় থেকে বাংলাদেশের পার্বতীপুর পর্যন্ত ডিজেল পাইপলাইন নির্মাণের জন্য সমঝোতা স্মারক সই করেছে। এরই মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ি থেকে পার্বতীপুরে ওয়াগনে করে ডিজেল আসছে। তবে বাংলাদেশ এবং আসামের মধ্যে কিছু এনআরসি সংক্রান্ত সমস্যা থাকতে পারে। এসব বিষয় কূটনৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করে বাংলাদেশ ও আসামের মধ্যে উন্নত যোগাযোগ ও বাণিজ্য সম্পর্ক করলে দুই দেশই লাভবান হবে। পাশাপাশি বাংলাদেশের সিলেট থেকে উত্তর-পূর্ব ভারতের আসামে পণ্যের রপ্তানি বাড়ানোর সম্ভাবনাও প্রচুর। ব্রহ্মপুত্র-বরাক-পদ্মা-মেঘনা নদীপথের জলপথগুলোকে অবশ্যই বাংলাদেশের বন্দরগুলোকে আসামের সঙ্গে সংযুক্ত করতে হবে- যাতে আঞ্চলিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রচার এবং বাংলাদেশ ও উত্তর-পূর্বের মধ্যে ট্রেন সংযোগ পুনরুদ্ধার করা যায়। এছাড়া আসাম ও সিলেটের বন্ধুত্ব দীর্ঘদিনের। এই বন্ধুত্বকে কাজে লাগিয়ে ওই এলাকার অর্থনীতি পাল্টে দেয়া সম্ভব বলে মত বিশ্লেষকদের।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর

এক ক্লিকে বিভাগের খবর