রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫, ১০:২০ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
সুন্দরগঞ্জের মজুমদারহাটে পিকআপ ভর্তি চাল জনতার হাতে আটক লালমনিরহাটে টিনের চালা কেটে দোকানে দুর্ধর্ষ চুরি! কাজিপুরে চাঁদা না দেয়ায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আগুন; পুড়ে ছাই ১৫ লক্ষ টাকার মালামাল অধ্যক্ষ কতৃক শিক্ষার্থীকে কুপ্রস্তাব বিচার চেয়ে জেলা প্রশাসক বরাবরে অভিযোগ লালমনিরহাটে দাদন ব্যবসায়ীর রাতভর নির্যাতন সকালে দিনমজুরের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার! ভালুকায় চাঁদাবাজির প্রতিবাদে মানববন্ধন ও মহাসড়ক অবরোধ রায়গঞ্জে পূর্ব শত্রুতার জেরধরে সাংবাদিকের হাত-পা ভেঙ্গে দিলো সন্ত্রাসীরা ঈদ বাজার বেনাপোলে দর্জি কারিগরদের ব্যস্ততা, ছিট কাপড়ের দোকানে ভীড় ভাঙ্গুড়ায় ট্রাকের নিচে পিষ্ট পূত্র বাবা আহত সিরাজগঞ্জে গাঁজাসহ দুই মাদক কারবারি আটক

মার্কিন রাষ্ট্রদূতের ‘পক্ষপাতদুষ্ট’ আচরণের নিন্দায় ঢাবি শিক্ষক সমিতি ও বিশিষ্ট নাগরিকেরা

রিপোর্টারের নাম : / ১১৬ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : শুক্রবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২২

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষক সমিতি ও ৩৪ বিশিষ্ট নাগরিক অভিযোগ করেছেন, ঢাকাস্থ মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস ১৪ ডিসেম্বর মানবাধিকারের দোহাই দিয়ে একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের পক্ষের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) পৃথক দুই বিবৃতিতে তার আচরণকে ‘দৃষ্টিকটু’ ও ‘কূটনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত’ বলে মন্তব্য করেন তারা।

বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) বুদ্ধিজীবী দিবসে সাবেক ছাত্রদল নেতা সাজেদুল ইসলাম সুমনের রাজধানীর শাহীনবাগের বাসায় যান মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস। এ সময় ‘মায়ের কান্না’ নামে একটি সংগঠনের সদস্যরা তাদের দাবি সংবলিত একটি স্মারকলিপি দিতে গেলে ‘নিরাপত্তা শঙ্কায়’ সেই স্থান ত্যাগ করেন বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানান এই মার্কিন রাষ্ট্রদূত।
ঢাবি শিক্ষক সমিতি:

এ ঘটনায় ঢাবি শিক্ষক সমিতি এক বিবৃতিতে জানায়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মান্যবর রাষ্ট্রদূত বিএনপি সমর্থিত ‘মায়ের ডাক’ নামক একটি সংগঠনের আহ্বানে ২০১৩ সালে একজন বিশেষ ব্যক্তির নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ শুনতে ঢাকা শহরের একটি বাড়িতে উপস্থিত হন। একই সময়ে খবর পেয়ে ‘মায়ের কান্না’ নামক সংগঠনের কর্মীরা তাদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি তাঁকে অবহিত করার জন্য একটি স্মারকলিপি প্রদানের চেষ্টা করেন। এ বিষয়ে তিনি কোনো কর্ণপাত করেননি। মায়ের কান্না নামক সংগঠনটি সামরিক স্বৈরাচার জেনারেল জিয়ার সময়ে ১৯৭৭-৭৮ সালে বিচারের নামে হত্যা ও গুমের যে ঘটনা ঘটেছে, এতে যারা স্বজন হারিয়েছেন তাদের মানবাধিকার রক্ষার আবেদন নিয়ে রাষ্ট্রদূতের শরণাপন্ন হয়েছিলো। এদের কথা শুনতে অপারগতা মার্কিন রাষ্ট্রদূতের দ্বৈত আচরণের বহিঃপ্রকাশ, যা দুঃখজনক।

এই বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সম্প্রতি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিষয়ে কয়েকটি দেশের কূটনীতিকগণ যেভাবে বক্তব্য রাখছেন ও অংশগ্রহণ করছেন তা দৃষ্টিকটু ও কূটনৈতিক শিষ্টাচারের লঙ্ঘন। পরিতাপের বিষয় হলো যে, পশ্চিমা দেশগুলো যেমন- যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও যুক্তরাজ্য আমাদেরকে বিভিন্ন সময়ে মানবাধিকারের কথা বলে। অথচ তারাই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের স্বঘোষিত খুনি ও একাত্তরের বুদ্ধিজীবী হত্যাকারীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে যাচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি যেকোনো ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে সর্বদা সোচ্চার। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথিতযশা শিক্ষকসহ দেশের শ্রেষ্ঠ বুদ্ধিজীবীদের পরিকল্পিত হত্যার ঘটনা, ৭১-এর গণহত্যা ও মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং বিভিন্ন সামরিক শাসনামলে হত্যা ও গুমের যে ঘটনা ঘটেছিল আমরা সেসব বিষয়েও মার্কিন রাষ্ট্রদূতসহ যারা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার রক্ষার দাবি করেন তাদের সুস্পষ্ট বক্তব্য দাবি করছি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি বিদেশি কূটনীতিকদের শিষ্টাচার বজায় রেখে পেশাগত দায়িত্ব পালনে ও সমাজের সকল শ্রেণি-গোষ্ঠীর মানুষের মানবাধিকার রক্ষায় সরকারকে সহযোগিতার আহ্বান জানায়।
বিশিষ্ট নাগরিকদের বিবৃতি:
‘মায়ের কান্না’ নামে একটি সংগঠনের সদস্যরা তাদের মানবাধিকারের দাবি সংবলিত একটি স্মারকলিপি দিতে গেলে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস তাদের কথা না শুনে এড়িয়ে যাওয়ার ঘটনায় সমালোচনা করেছেন দেশের ৩৪ জন বিশিষ্ট নাগরিক। বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়, ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস গত ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে সাবেক ছাত্রদল নেতা সাজেদুল ইসলাম সুমনের রাজধানীর শাহীনবাগের বাসায় যান। সে সময় তিনি বেরিয়ে আসার পর ‘মায়ের কান্না’ নামে একটি সংগঠনের সদস্যরা তাদের দাবি সংবলিত একটি স্মারকলিপি দিতে গেলে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস তাদের কথা না শুনে এড়িয়ে যান বলে দাবি করেন তারা।
বিবৃতিতে বলা হয়, পিটার হাসের এ আচরণকে বিশিষ্টজনেরা কূটনৈতিক শিষ্টাচার-বহির্ভূত আচরণ হিসেবে দেখছেন, যা কিনা ভিয়েনা কনভেনশনের (১৯৬১) পরিপন্থী। একই সঙ্গে তার এ ধরনের আচরণ কূটনৈতিক দায়িত্বের পর্যায়ে ফেলা যায় কিনা, নাকি এর মধ্য দিয়ে তিনি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে সরাসরি জড়িয়ে পড়লেন এবং বাংলাদেশের একটি রাজনৈতিক দলের পক্ষভুক্ত হলেন কিনা, এ নিয়ে দেশের জনগণের মনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
ওই বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন- নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, দেশবরেণ্য চিত্র শিল্পী অধ্যাপক ড. রফিকুন নবী রনবী, অধ্যাপক অধ্যাপক ড. হাশেম খান, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. নাসরীন আহমাদ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রো-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সহিদ আখতার হোসেন, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. অহিদুজ্জামান,  চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী, সাবেক ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মান্নান, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. এ এ মামুন, অধ্যাপক ড. শরীফ এনামুল কবির, সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুল বায়েস, অধ্যাপক ড. অজিত কুমার মজুমদার, সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সনৎ কুমার সাহা,বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ,কবি,সাহিত্যিক অধ্যাপক চৌধুরী জুলফিকার মতিন, একুশে পদকপ্রাপ্ত বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও নাট্যব্যক্তিত্ব বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক মলয় কুমার ভৌমিক, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল খালেক, দেশবরেণ্য অভিনেত্রী অরুনা বিশ্বাস, ডিবিসি নিউজের চেয়ারম্যান  ইকবাল সোবহান চৌধুরী, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার এমডি আবুল কালাম আজাদ, দৈনিক ভোরের কাগজের সম্পাদক  শ্যামল দত্ত, বিএফউজের সভাপতি ওমর ফারুক, ডিইউজে’র সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী, দৈনিক কালেরকণ্ঠের সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন, ডেইলি সান সম্পাদক এনামুল হক চৌধুরী, মঞ্চ সারথি আতাউর রহমান, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুস এবং একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক অজয় দাশগুপ্ত।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
এক ক্লিকে বিভাগের খবর