বৃহস্পতিবার, ০৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৬:৫৭ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার:ধর্মঘটে দ্বিতীয় দিনেও বেনাপোল বন্দর দিয়ে ফল আমদানি বন্ধ লালমনিরহাটে জুই হত্যার বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ- পুলিশের সাথে ধস্তাধস্তি টেন্ডার বাক্স লুটের মিথ্যা অপপ্রচারের বিরুদ্ধে রাজশাহীতে ব্যবসায়ীর সংবাদ সম্মেলন লাইসেন্স ব্যতীত ভাটা পরিচালনা করায় কুড়িগ্রামের ৫টি ভাটা বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন উল্লাপাড়ায় পানি নিষ্কাশনের দাবীতে রাস্তা অবরোধ করে মানববন্ধন আগামী ৭ দিনের মধ্যে হৃদয় এর লাশ পরিবারের নিকট হস্তান্তরের দাবি ভারত থেকে ফল আমদানি বন্ধ দ্বিতীয় ধাপের আখেরী মোনাজাত শেষ,৫৯ তম বিশ্ব ইজতেমার তারিখ ঘোষণা ইজতেমা ময়দানে চলছে হেদায়েতি বয়ান,আখেরী মোনাজাত দুপুর ১২ টায় ইজতেমায় আরও দুই মুসল্লীর মৃত্যু

যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে জেল হত্যা দিবস পালন 

গাজীপুর সংবাদদাতাঃ / ১৫০ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : শুক্রবার, ৩ নভেম্বর, ২০২৩

যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে জেল হত্যা দিবস ২০২৩ পালন করেছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। শুক্রবার (৩ নভেম্বর) এ উপলক্ষে ধানমন্ডিস্থ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর কার্যালয়ে বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশ গবেষণা ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আলোচক হিসেবে উপস্থিতছিলেন বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মেজবাহ কামাল।
সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান বলেন, ‘উন্নত দেশ গঠনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং জাতীয় চার নেতার আদর্শ প্রতিষ্ঠা করাই আমাদের স্বপ্ন। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের সমাজে লুটেরা রয়েছে, ধর্মান্ধতা রয়েছে। এসব নির্মূল করে আদর্শনিষ্ঠা সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এক্ষেত্রে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।
উপাচার্য ড. মশিউর রহমান আরো বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর খুনিরা নভেম্বর পর্যন্ত নিভৃত হল না কেন? আমরা অনেক সময় বলি এটি বাংলাদেশ হত্যার শামিল। আমাদের চেতনা হত্যার শামিল। আলোচনার গভীরে গেলে সেটিইতো আরো গভীরভাবে প্রতীয়মান হয় যে, এসব হত্যাকাণ্ড ছিল সুপরিকল্পিত। অত্যন্ত ঠাণ্ডা মাথায় এই হত্যার নীলনকশা করা হয়েছে। হত্যার পরে যারা এই চেতনাকে পুনরায় উজ্জীবিত করতে সক্ষমহতেন, তাঁদের বাঁচিয়ে না রাখার জন্য পৃথিবীর নিষ্ঠুরতম উপায়ে কারাগারে চার জাতীয় নেতাকে হত্যা করা হয়। আমার কাছে মনে হয়, সেই সময়ের খন্দকার মোস্তাক চরিত্র অথবা জিয়াউর রহমানের চরিত্র- জিয়াউর রহমান সেনা প্রধান না হতে পারার আক্ষেপ বঙ্গবন্ধুর উপর ছিল। ঠিক একই চিত্র কিনা আজকে সোহরাওয়ার্দীর বেলায় স্পষ্ট। তাকে কারাগারে নেয়া হয়েছে। তিনিও একইরকম উচ্চাকাঙ্ক্ষী ছিলেন। সেনা প্রধান বা আরও কোনো বড় পদে তিনি যেতে চেয়েছিলেন। সেই অভিলাষ তার মেটেনি। তিনি একজন মার্কিনিকে এনে নাটক করেছেন। যে কিনা কিছু দিন আগেও সরকারের সঙ্গে থেকে কাজ করেছেন। চরিত্রগতভাবে তারা একই। তাই মৌলবাদ যেমন সংকট, ধর্মান্ধতা যেমন সংকট, লুটেরা শ্রেণি, ক্ষমতাভোগী, সামরিক পোশাক পরিহিত অবস্থায় আরো বেশি লোভী হওয়া- মূলত সংকটটি আদর্শগত।
দেশের প্রথিতযশা এই সমাজবিজ্ঞানী বলেন, ‘শুধুমাত্র জ্ঞানভিত্তিক, দর্শনভিত্তিক, বুদ্ধিবৃত্তিক আলোকিত সমাজ তৈরি করার জন্য আমরা নিজেদেরকে নিবেদিত করতে পারি। অন্ধকারের বিরুদ্ধে আলো নিয়েই লড়তে হয়। সমাজ থেকে ধর্মান্ধতা, অশুভ দূর করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সমাজ বিনির্মাণ করতে একযোগে কাজ করতে হবে। আমাদের সকল বুদ্ধিবৃত্তিক শক্তি দিয়ে, সাংস্কৃতিক জাগরণ দিয়ে, বাংলাদেশ বিরোধী অপশক্তিকে সম্মিলিতভাবে প্রতিরোধ করতে হবে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চা দিয়ে জ্ঞানের আলোয় মুক্তবুদ্ধির মানুষ তৈরি করবে।
আলোচকের বক্তব্যে রামেন্দু মজুমদার বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ঘতকরা অসমাপ্ত কাজ করেছে জাতীয় চারনতোকে হত্যার মধ্য দিয়ে। বর্তমানে মুক্তিযুদ্ধের সরকার ক্ষমতায় থাকলেও সমাজটা চলে গেছে ধর্মান্ধদের হাতে। আমাদের দেশে যেসব কলঙ্কজনক ঘটনা রয়েছে তার মধ্যে জাতীয় চারনেতা হত্যাকাণ্ড অন্যতম। আজকে আমাদের আদর্শের লড়াইটা রয়ে গেছে। ধর্মের নামে মানুষকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। ধর্ম নিয়ে রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। তানাহলে সমস্যা থেকেই যাবে। মানুষের চিন্তা এবং বিবেকের জাগরণ ঘটাতে হবে। মানুষের মধ্যে যৌক্তিক বোধ তৈরি করতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় তরুণদের মধ্যে সেই বোধ জাগ্রত করার কাজটি করবে।
আলোচকের বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মেজবাহ কামাল বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যাকাণ্ড এবং জেলখানায় জাতীয় চার নেতা হত্যাকাণ্ড একই সূত্রে গাঁথা। মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে দেশ থেকে মুছে ফেলার উদ্দেশেই বঙ্গবন্ধু এবং জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়েছে। জাতীয় চার নেতাকে হত্যার উদ্দেশে যখন হত্যাকারীরা জেলখানায় প্রবেশ করে তখন জেলার বাধা দিয়েছিলেন। কিন্তু তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ফোন করে জেলারকে তাদেকে (হত্যাকারীদের) প্রবেশে বাধা না দেয়ার জন্য নির্দেশ দেন এবং তারা যা করতে চায় তা করতে দেয়ার জন্য বলেন। এভাবে একজন রাষ্ট্রপতি
হত্যার নির্দেশ দেন। কী নির্মম ছিল ঘটনা!’
আলোচনা সভায় অন্যাদের মধ্যে বক্তব্য প্রদান করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর আবদুস সালাম হাওলাদার, বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশ গবেষণা ইনস্টিটিউটের ডিস্টিংগুইশ প্রফেসর ড. মাহবুবর রহমান প্রমুখ।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই জাতীয় ৪ তার প্রতি সম্মান জানিয়ে ১ মিনিট দাঁড়িয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোল্লা মাহফুজ আল-হোসেন। আলোচনা সভায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অঙ্গীভূত বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশ গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজগুলোর অধ্যক্ষ, শিক্ষক, গবেষক, শিক্ষার্থী এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন,বিভিন্ন দপ্তরের বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর

এক ক্লিকে বিভাগের খবর