লালমনিরহাটে প্রতিবেশী’র প্রলোভনে দুকূল হারা গৃহবধূ

লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা শহর আলী (৪৮)। শহর আলী হলেও গ্রামের সহজ সরল মানুষ তিনি। প্রায় এক বছর হতে চলেছে তার স্ত্রীকে প্রতিবেশী এক প্রভাবশালী ফুসলিয়ে জমি আর নগদ টাকার প্রলোভন দেখিয়ে ঢাকায় নিয়ে যায়।
রেলওয়ের সরকারি জমিতে বসবাস করা শহর আলীর দুই মেয়ে এক ছেলেকে নিয়ে সুখেই ছিলেন। মেয়ে দুইজনের বিয়ে দিয়েছেন, ছেলে ঢাকায় কাজ করেন।
৮/৯ মাস আগে তার স্ত্রীকে ফুসলিয়ে নিয়ে ঢাকায় চলে যান প্রতিবেশী ফজর আলী (৫০)। মধ্য বয়সে স্ত্রীকে হারিয়ে বড়ই নিঃসঙ্গ একা হয়ে পড়েন শহর আলী। এত কিছুর পরেও স্ত্রীকে পুনরায় ঘরে তুলতে চান শহর আলী নামের এই দিনমজুর।
দীর্ঘ ৯ মাস পরে তার স্ত্রীর সাথে প্রতারনা করে প্রতিবেশী ফজর আলী গ্রামে চলে আসেন। স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায়, ফজর আলী ৪ মেয়ে ও ১ ছেলের জনক। পরিবারের এমন অপ্রীতিকর ঘটনায় মর্মাহত হয়ে ফজরে বিয়ের বউ বাপের বাড়ি চলে যান। এমন খবর জানতে পেয়ে ফজরের দ্বিতীয় স্ত্রী দাবী করা ঐ ভুক্তভোগী মহিলা ঢাকা থেকে গ্রামে ফিরে আসেন। পড়ে ১৯ জুন বেলা ১১ টার দিকে দুরাকুটি গ্রামের প্রতিবেশী ফজর আলীর বাড়িতে গিয়ে স্ত্রীর মর্যাদা দাবী করেন ভুক্তভোগী মহিলা। ঐ গৃহবধূকে ভাগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি গ্রামবাসীর আগেই যানা ছিলো, তাই, উৎসুক মানুষের সংখ্যাও কম ছিলো না সেদিন ফজর আলীর বাড়িতে।
বিকেল ঘনিয়ে সন্ধা পেড়িয়ে গেলেও অধিকার আদায়ে ব্যর্থ হন ওই গৃহবধূ। স্থানীয় দুলাল মেম্বার দীর্ঘক্ষণ চেষ্টাও করেন আপোষ মিমাংসা করার। সালিশ দরবারে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যাক্তিরাও উপস্থিত ছিলেন। মহিলাকে ১০ হাজার টাকায় আপোষের প্রস্তাব দিয়ে সাক্ষর চাইলে মাতব্বরদের সাথে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূ।
শালিসে উপস্থিত থাকা স্থানীয়রা জানান, তাদের সাথে কথা বার্তার এক পর্যায়ে উচ্চস্বরে চিৎকার দিলে অচেতন হয়ে পরেন ঐ গৃহবধূ। পরে জনৈক প্রতিবেশীর বাড়িতে সেবাশশ্রুসার পর ক্ষুধার্ত গৃহবধূকে খাবার খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে দেন সে বাড়ির নারী সদস্যরা। পরদিন সকালে ঐ গৃহবধূ দুকূল হারিয়ে সদর উপজেলার তিস্তায় তার মেয়ে জামাই বাড়িতে চলে যান।
এবিষয়ে জানতে অভিযুক্ত ফজর আলীর বাড়িতে গিয়ে ডাকলে তার জামাই বেরিয়ে এসে বলেন, তার সাথে যোগাযোগ করার কোনো উপায় নেই।
বউ হারানো শহর আলী বলেন, আমার বউকে আমি ঘড়ে তুলবো কি না? আমার কাছে শোনেনাই শালিস দার’রা কেউ আমার কাছে জিজ্ঞেসও করে নাই। বয়স তো শেষ। সে যদি আসে আমি তাকে (স্ত্রীকে) ঘরে তুলে নেব।
সালিশে উপস্থিত থাকা দুরাকুটি ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে সদস্য দুলাল হোসেন বলেন, মহিলা টাকা নেয়নি, মহিলা যেন ন্যায় বিচার পায় এটাই আমাদের চাওয়া।
এবিষয়ে মোগলহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ হাবিবুর রহমান হাবিব এঁর সাথে কথা বলতে তার মোবাইল নম্বরে কল করা হলে, তিনি রিসিভ করেননি।
আর ভুক্তভোগী গৃহবধূ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচার দাবী করেন।