লালমনিরহাট বুড়িমারী স্থলবন্দরে ১৮জন কর্মকর্তা’র মধ্যে ১৬জনকেই বদলি!
দুর্নীতি আর অনিয়মের অভিযোগ ওঠায় লালমনিরহাটের বুড়িমারী স্থলবন্দরের ১৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে ১৬ জনকে এক আদেশেই বদলি করেছে ঢাকা স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ।
বুধবার (৩১ আগস্ট) এর মধ্যে নিজ নিজ নতুন কর্মস্থলে যোগদানের জন্য আদেশ দিয়ে ২৫ আগস্ট চিঠি দেওয়া হয় তাদের।
বদলির আদেশ প্রাপ্তরা হলেন- বুড়িমারী স্থলবন্দরের সহকারী পরিচালক (ট্রাফিক) রুহুল আমীন, ট্রাফিক পরিদর্শক জাহিদুর রহমান, সালাউদ্দিন, শাহিন মাহমুদ, আমিনুল হক, ওয়্যারহাউজ সুপারেনটেনডেন্ট মানিকুর রহমান, মাছুদ রানা, ফিদা হাসান, এসএম মাসুম বিল্লাহ, মিনহাজ উদ্দিন, হারুন অর রশিদ, আবুল বাসার, হিসাব রক্ষক আদনান খলিল বসুনিয়া, ক্যাশিয়ার ভ্রমর কুমার সরকার, কম্পিউটার অপারেটর হাসমত উল্লাহ ও অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর সেলিম রেজা।
স্থলবন্দরের ব্যবসায়ী ও ভুক্তভোগীরা জানান, ত্রিদেশিয় বাণিজ্যিক রুট পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী স্থলবন্দর।
ভারত, ভুটান ও নেপালের সঙ্গে বংলাদেশের বাণিজ্যিক প্রাণ কেন্দ্র এ স্থলবন্দর। বন্দরটিতে দুর্নীতি আর অনিয়মের কারণে প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছেন বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা।
একই ভাবে অসাধু কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীর কারণে সরকারও রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বন্দরের নানান অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে ভুক্তভোগীরা দুর্নীতি দমন কমিশনসহ(দুদক)সহ বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগের মধ্যে রয়েছে, ওজন স্টেশনে ভারতীয় ট্রাক থেকে অবৈধ টাকা আদায়, খাদ্যশস্যের ট্রাকে চাঁদা, বিল শাখায় জালিয়াতি করে সরকারি রাজস্ব আত্মসাৎ, আগত পণ্যবাহী গাড়ির আর ওজন গাড়ির গরমিল, রাত্রীকালীন ট্রাক চার্জ আদায় করে আত্মসাৎ, ছুটি ছাড়াই কর্মস্থলের বাইরে থাকা।
অভিযোগ আমলে নিয়ে গোপনে তদন্ত করে স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ চেয়ারম্যানের কাছে গত ৭ আগস্ট তদন্ত প্রতিবেদন পাঠায় দুদক। স্থলবন্দ কর্তৃপক্ষ ১৪ আগস্ট প্রতিবেদন পেয়ে ১৬ আগস্ট আমলে নেয়। এরপর গত ২৫ আগস্ট এ স্থলবন্দরের ১৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে ১৬ জনকে বিভিন্ন বন্দরে বদলির আদেশ দিয়ে চিঠি পাঠায় স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ।
স্থলবন্দরের যাত্রা শুরুর পর থেকে এবারই প্রথম একই আদেশে ১৬ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বদলি হচ্ছে। নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ স্থলবন্দরের পরিচালক ডি এম আতিকুর রহমান স্বাক্ষরিত এ আদেশে বদলিকৃতদের ৩১ আগস্টের মধ্যে নতুন কর্মস্থলে যোগদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বদলির আদেশপ্রাপ্ত বুড়িমারী স্থলবন্দরের সহকারী পরিচালক (ট্রাফিক) রুহুল আমীন বলন, অনেকেই বেনামি চিঠি দিয়ে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে থাকেন। এখানে দুর্নীতির কিছুই নেই। সরকারি চাকরির নিয়মানুযায়ী বদলির আদেশ এসেছে। তবে ১৮ জনের মধ্যে ১৬ জনকে একই আদেশে বদলির বিষয়টি কর্তৃপক্ষই ভালো জানে। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিজেদের মধ্যে কাঁদা ছেটানোর কারণেও এমনটা হতে পারে।