সুনীল অর্থনীতি থেকে বছরে ২৯২ লাখ কোটি আয় সম্ভব
মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রে বিরোধপূর্ণ ১৭ ব্লকের ১২টি এবং ভারতের কাছ থেকে দাবিকৃত ১০ ব্লকের সব কটিই এখন বাংলাদেশের। এসব ব্লক থেকে প্রায় ৪০ ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
সুনীল অর্থনীতির চার ক্ষেত্র যেমন—তেল ও গ্যাস উত্তোলন, মৎস্য আহরণ, বন্দর সম্প্রসারণ ও পর্যটন খাতে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করলে বছরে বাংলাদেশের পক্ষে ২ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ২৯২ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা আয় করা সম্ভব বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
গতকাল ‘বাংলাদেশের মেরিটাইম শিক্ষাব্যবস্থা ও সুনীল অর্থনীতি’ শীর্ষক সেমিনারে অংশ নিয়ে বক্তারা এসব তথ্য তুলে ধরেন। রাজধানীর বিয়াম ফাউন্ডেশনে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এ সেমিনারের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে মেরিটাইম শিক্ষা ও সুনীল অর্থনীতির নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। মৎস্য সম্পদ ছাড়াও সামুদ্রিক প্রাণী, সামুদ্রিক আগাছা, লতা-গুল্মতেও ভরপুর বঙ্গোপসাগর। এসব আগাছা প্রক্রিয়াজাতকরণ করে বিভিন্ন রোগের ওষুধ তৈরি করা যায়। দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে সামুদ্রিক খাদ্যপণ্য রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা সম্ভব।
বঙ্গোপসাগরের তলদেশে ১৩টি স্থানে ইউরেনিয়াম ও থোরিয়াম সমৃদ্ধ বালুর সন্ধান পাওয়া গেছে যা স্বর্ণের চেয়েও দামি জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এ ছাড়া বঙ্গোপসাগরে ইলমেনাইট, টাইটেনিয়াম অক্সাইড, রুটাইল, জিরকন, ম্যাগনেটাইট, কোবাল্টসহ অত্যন্ত মূল্যবান খনিজের সন্ধান পাওয়া গেছে। এসব সম্পদ সঠিক উপায়ে উত্তোলন করতে পারলে হাজার কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা সম্ভব হবে।
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সমুদ্রকে ঘিরে গড়ে উঠেছে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র। বাংলাদেশও অফশোর এবং অনশোরে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা করছে, যা হবে ক্লিন ও গ্রিন এনার্জি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্লু-ইকোনমির ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন জানিয়ে খালিদ মাহমুদ বলেন, সুনীল অর্থনীতির বিপুল সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে প্রণয়ন করা হয়েছে শতবর্ষী ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব দেলোয়ারা বেগম। বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান ড. এ কে এম মতিউর রহমান মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।