৮২ টাকা কেজি দরে যুক্তরাষ্ট্র থেকে চিনি কিনবে সরকার

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) জন্য যুক্তরাষ্ট্র থেকে ৬৬ কোটি ২৭ লাখ ৩১ হাজার ২৫০ টাকায় সাড়ে ১২ হাজার টন চিনি কিনবে সরকার। এতে প্রতি কেজি চিনির দাম পড়বে ৮২ টাকা ৮৬ পয়সা গতকাল ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ১৭তম সভায় এ-সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। সভা শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
সভায় কমিটির অনুমোদনের জন্য ১০টি প্রস্তাব তুলে ধরা হয় বলে জানান তিনি এসব প্রস্তাবের মধ্যে কৃষি মন্ত্রণালয়ের চারটি, শিল্প মন্ত্রণালয়ের তিন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক, স্থানীয় সরকার বিভাগের এক ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের একটি প্রস্তাব ছিল। সভায় কমিটির উপস্থাপিত ১০টি প্রস্তাবে মোট অর্থের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৪৮৭ কোটি ৯৬ লাখ ৫৪ হাজার ৮৮৬ টাকা। মোট অর্থায়নের মধ্যে গভর্নমেন্ট অব বাংলাদেশের (জিওবি) ফান্ড থেকে ব্যয় হবে ১৩৮ কোটি ৩৬ লাখ ৭৪ হাজার ৫০৬ টাকা এবং দেশীয় ব্যাংক ও বৈদেশিক ঋণ থেকে ব্যয় হবে ১ হাজার ৩৪৯ কোটি ৫৯ লাখ ৮০ হাজার ৩৮০ টাকা।
অতিরিক্ত সচিব জানান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন টিসিবি আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে ১২ হাজার ৫০০ টন চিনি যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাকসেনচুয়েট টেকনোলজি ইনকরপোরেশনের কাছ থেকে কিনবে। তাদের দেশীয় এজেন্ট ওএমসি লিমিটেড।
সভায় স্থানীয় সরকার বিভাগের অধীন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের ‘বাংলাদেশের ২৩টি পৌরসভায় পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন (প্রথম সংশোধিত)’ প্রকল্পে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিয়োজিত জয়েন্ট ভেঞ্চার তিনটি প্রতিষ্ঠানের ভ্যারিয়েশন বাবদ অতিরিক্ত ১১ কোটি ১৩ লাখ ৮৯ হাজার ২৫৬ টাকা ব্যয় বৃদ্ধির ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীন ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের ‘ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভূমি জরিপের মাধ্যমে তিনটি সিটি করপোরেশন, একটি পৌরসভা এবং দুটি গ্রামীণ উপজেলায় ডিজিটাল ভূমি ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি স্থাপন’ প্রকল্পের আওতায় ছয়টি জরিপ লোকেশনে ৬৩৪টি মৌজায় ৯৩৩ বর্গকিলোমিটার এলাকায় ডিজিটাল ক্যাডাস্ট্রাল পদ্ধতিতে ভূমি জরিপ (মৌজা ম্যাপ ও রেকর্ড) কাজ স্যামসাং জেভিএর কাছ থেকে ২ কোটি ৮৮ লাখ ৫৩ হাজার ডলারে ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনকে (বিসিআইসি) চট্টগ্রামের টিএসপি কমপ্লেক্স লিমিটেডের জন্য ১০ হাজার টন ফসফরিক অ্যাসিড ৬০ কোটি ৯৫ লাখ ৫৪ হাজার টাকায় কেনার অনুমোদন দেয়া হয়েছে। বিসিআইসিকে কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (কাফকো), বাংলাদেশের কাছ থেকে ১৭তম লটে ৩০ হাজার টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার ১২০ কোটি ৩ লাখ ৯৯ হাজার ৭৫০ টাকায় কেনার অনুমোদন দেয়া হয়। এছাড়া বিসিআইসিকে সৌদি আরবের এসএবিআইসি এগ্রি নিউট্রিয়েন্টস কোম্পানি থেকে ২২তম লটে ৩০ হাজার টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার ১০৬ কোটি ২৫ লাখ ১৩ হাজার ১৮০ টাকায় কেনার অনুমোদন দেয়া হয়।
অন্যদিকে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনকে (বিএডিসি) রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির আওতায় সৌদি আরব থেকে তৃতীয় লটে ৪০ হাজার টন ডিএপি সার ২২৯ কোটি ৩৩ লাখ ৪৫ হাজার ৬০০ টাকায় কেনার অনুমোদন দেয়া হয়। বিএডিসিকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির আওতায় মরক্কো থেকে দ্বিতীয় লটে ৩০ হাজার টন টিএসপি সার ১২৬ কোটি ৫৭ লাখ ৫৮ হাজার ৬৫০ টাকায় কেনার অনুমোদন দেয়া হয়েছে একই মন্ত্রণালয়ের অধীনে মরক্কো থেকে আরো একটি তৃতীয় লটে ৪০ হাজার টন ডাইঅ্যামোনিয়াম ফসফেট (ডিএপি) সার ২৩৩ কোটি ৪২ লাখ ৯৮ হাজার ২০০ টাকায় কেনার অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
এছাড়া বিএডিসিকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির আওতায় কানাডিয়ান কমার্শিয়াল করপোরেশন থেকে চতুর্থ লটে ৫০ হাজার টন মিউরেট অব পটাশ (এমওপি) সার ২২৫ কোটি ২৩ লাখ ৯৩ হাজার টাকায় কেনার অনুমোদন দেয়া হয়েছে।