শাহজাদপুরে আউশ ধানের বাম্পার ফলনে চাষীদের মুখে হাসি
শাহজাদপুরে চলতি মৌসুমে আউশ ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। তিন মৌসুমে ধান চাষ করেন কৃষকরা- আউশ, আমন ও বোরো। এর মধ্যে বোরো ধান সম্পূর্ণ সেচ নির্ভর।
আমন আর আউশ হলো বৃষ্টি নির্ভর। বোরো ধান কাটার পরপরই আউশ ধান বোপন করা হয়। আউশ মৌসুমে একটি জনপ্রিয় জাত হলো ব্রি ৪৮। এ জাতের আউশ ধান চষে বিঘাপ্রতি গড় ফলন হয় ১৭ মণ। আউশ চাষে সেচ খরচ লাগেনা, সারের পরিমাণও কম লাগে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ কম, রোগ ও পোকা-মাকড়ের আক্রমণও কম হয়। সাড়ে তিন মাসেই এ ফসল কৃষক ঘরে তুলতে পারে। এতে করে খরচ কম, লাভজক হওয়ায় এবং আউশ ধানের খর গো খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করতে পারায় ও বাজার মূল্য ভালো থাকায় আউশ চাষাবাদে ব্যাপক আগ্রহ বেড়ে গেছে এ উপজেলার আউশ চাষিদের।
আউশ চাষীরা জানান, আউশ ধান চাষে বিঘাপ্রতি প্রায় ১০-১২ হাজার টাকা উৎপাদন ব্যয় ও উৎপাদিত ধান বিক্রি করে প্রায় ২০-২২ হাজার ও খর বিক্রি করে প্রায় ৩ হাজার টাকা পাওয়া যায়। এতে আউশ ধান চাষে খরচ বাদে বিঘাপ্রতি কৃষকের প্রায় ১৫ হাজার টাকা লাভ হয়। ফলে আউশ ধান চাষে কৃষক লাভবান হচ্ছে। চলতি মৌসুমে শাহজাদপুরে প্রায় ১৫ হেক্টর জমিতে আবাদকৃত আউশ ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে।
উপজেলার গাড়াদহ ইউনিয়নের গাড়াদহ গ্রামে ব্লক পরিদর্শনের সময় উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার কৃষিবিদ মো. এহসানুল হক বলেন, অল্প দিনে আউশ ধান ঘরে উঠার ফলে কৃষকরা সহজেই আগাম সবজি চাষে যেতে পারে এবং কিছু জমি আমন ধানের জন্যও ব্যবহার করা হয়। ফলে কৃষক যেন জমির সঠিক ব্যবহার করতে পারে।
এই ধানের আবাদকে জনপ্রিয় করতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নানা রকম কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। তেমনি একটি কার্যক্রম হলো এনএটিপি-২ প্রকল্প থেকে কৃষক আব্দুল মালেকের ২ একর জমিতে একটি ক্লাস্টার প্রদর্শনী বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এ প্রদর্শনী দেখে গ্রামের অন্যান্য কৃষক আউশ ধান চাষে আগ্রহী হবেন বলে আশা প্রকাশ করেন, ওই ব্লকে কর্মরত উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. সাজ্জাদ হোসেন। উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোহাম্মদ আব্দুস ছালাম বলেন, আমাদের ভূ-গর্ভস্থ পানি অফুরন্ত না। তাই সেচ নির্ভর চাষাবাদ থেকে বের হয়ে আউশ ধানের আবাদ বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।
আউশ ধানের আবাদ বৃদ্ধির লক্ষে কৃষকদেরকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ সহ প্রণোদনার মাধ্যমে সার ও বীজ দিয়েছি, প্রদর্শনী স্থাপন করেছি, আশাকরি আগামীতে আউশ ধানের আবাদ আরোও বাড়বে।