পরিত্যক্ত গোডাউন ঘর ভাড়া নিয়ে রাতারাতি গড়ে উঠলো অনুমোদনহীন কিন্ডারগার্টেন!

করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ পরিস্থিতিতে অনেক কিছু নিয়ন্ত্রণ করা গেলেও থামানো যাচ্ছে না যত্রতত্র কিন্ডারগার্টেন গড়ে তোলার প্রবণতাকে।অনুমোদনহীন এসব প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা লাগামহীনভাবে বেড়েই চলেছে। পিছিয়ে নেই লালমনিরহাট জেলাও।
ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা এসব প্রতিষ্ঠান পাড়া-মহল্লায় চটকদার ভর্তি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে আসছে। এসব বিজ্ঞাপনে প্রলুব্ধ হয়ে অভিভাবকরাও তাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে তুলে দিচ্ছেন অনুমোদনহীন কিন্ডারগার্টেনগুলোর সংশ্লিষ্টদের হাতে। অস্বাস্থ্যকর ঘিঞ্জি পরিবেশে ক্লাস রুম। নেই পর্যাপ্ত শিক্ষকও।
জানা গেছে, লালমনিরহাট জেলা শহরের হাড়িভাঙ্গা বাজারে পরিত্যক্ত অস্বাস্থ্যকর গোডাউন ঘর ভাড়া নিয়ে রাতারাতি সাটানো হয় মাতৃছায়া আদর্শ বিদ্যা নিকেতন নামে স্কুলের সাইনবোর্ড। অথচ এ বিষয়ে কিছুই জানেন না লালমনিরহাট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস। নতুন শিক্ষা বর্ষে বই কিভাবে পাবে এখানে ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীরা? এমন শঙ্কায় ক্ষুব্ধ স্থানীয় মহল।
শিক্ষাবীদরা বলছেন, ভুঁইফোঁড় এসব স্কুলে ভর্তি হয়ে কোমলমতি শিশুরা শিক্ষাজীবনের শুরুতেই যথাযথ শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হবে। অনভিজ্ঞ শিক্ষক, সঠিক সিলেবাসের অভাব এবং উপযুক্ত গাইডলাইন না থাকায় মানসম্মত শিক্ষার ছিটেফোঁটা পাবে না তারা। ফলে উচ্চস্তরে গিয়ে ঝরে পড়বে সেসব শিক্ষার্থীরা। দ্রুত কথিত এসব কিন্ডারগার্টেনের লাগামহীন ‘শিক্ষাবাণিজ্য’ নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য লালমনিরহাট জেলা শিক্ষা অফিসের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন শিক্ষাবীদরা ।
ইচ্ছেমতো ভর্তি ফি, টিউশন ফি ভর্তির প্রচারে উল্লেখ করেছে কথিত কিন্ডারগার্টেন মাতৃছায়া আদর্শ বিদ্যা নিকেতন। গোডাউন ঘর ভাড়া নিয়ে পরিচালনা হবে এই কথিত স্কুলটি। স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, অন্ধকারাচ্ছন্ন ক্লাসরুমে পর্যাপ্ত আলো বাতাস ঢুকতে পারবে না, অনেকেই না বুঝে চটককদার বিজ্ঞাপন দেখে শিক্ষার্থী ভর্তি করাবে এ স্কুলে । পরে অনুমোদন না থাকায় এই স্কুল সরকার বন্ধ করলে এ দায় কে নেবে? এমন প্রশ্ন রাখেন সচেতনমহল।
অনুমোদনহীন স্কুলটির কথা স্বীকার করে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক মোস্তফা কামাল জানান,আমরা এখানো শিক্ষা অফিসে আবেদন করি নি। অনুমোদনের পূর্বে কার্যক্রম চালানো এবং নতুন বছরে কিভাবে শিক্ষার্থীরা বই পাবে এমন প্রশ্নের উত্তরের দায়ভার কথিত স্কুলটির পরিচালক মাইদুল ইসলামের ওপর চাপিয়ে দিয়ে ফোনের সংযোগ কেটে দেন তিনি। অন্য দিকে পরিচালককে একাধিকবার কল করেও তাকে পাওয়া যায় নি।
লালমনিরহাট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার স্বপন কুমার রায় চৌধুরী জানান, মাতৃছায়া আদর্শ বিদ্যানিকেতন নামের কোনো বিদ্যালয় সম্পর্কে জানেন না তিনি। তিনি গণমাধ্যমকে আরো জানান,তারা মূলত ব্যবসায়ীক পরিকল্পনায় স্কুল সাইনবোর্ড লাগিয়েছে। তদন্ত করে সেই স্কুলের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।