আট বছর পর কর্মী যাচ্ছে লিবিয়ায়

দীর্ঘ সাত বছর বন্ধ থাকার পর ২০২২ সালের শেষ দিকে বাংলাদেশ-লিবিয়া কর্মী পাঠানোর বিষয়ে সমঝোতা স্মারক সই করে। এরপর ওই বছরই লিবিয়ায় কর্মী পাঠানোর কার্যক্রম হাতে নেয় প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি)। ৮ ডিসেম্বর ১৫ জন কর্মী দেশটিতে পাঠানো হয়। তাঁদের পাঠায় রিক্রুটিং এজেন্সি ফাইম এম ইন্টারন্যাশনাল ও সুফী ইন্টারন্যাশনাল। এরপর আর কোনো কর্মী লিবিয়ায় যাননি। চলতি বছর আবারও ৩৫ জন কর্মী লিবিয়ায় পাঠানো হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এসব কর্মী প্রায় দেড় লাখ টাকার মতো খরচ করে লিবিয়ায় যাচ্ছেন। ত্রিপোলির সিটি করপোরেশনে তাঁদের বেতন নির্ধারণ করা হয়েছে টাকায় ২৬ হাজার থেকে ২৮ হাজার পর্যন্ত।
কবে নাগাদ এসব কর্মী লিবিয়ায় যেতে পারবেন—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘লিবিয়ায় যাঁরা যাবেন তাঁদের প্রয়োজনীয় সব ধরনের কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। আমরা বিমানের টিকিট বুকিং দিয়ে দিয়েছি। আশা করি ছয় থেকে সাত দিনের মধ্যে আমরা তাঁদের পাঠাতে পারব।’
এই কর্মীরা চুক্তি অনুযায়ী প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকলে লিবিয়ার শ্রমবাজার ঘুরে দাঁড়াবে বলে মনে করেন বিএমইটির মহাপরিচালক শহিদুল আলম এনডিসি। কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, ‘৩৫ জন কর্মীর সবাই লিবিয়ায় সরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করবেন। যদি এভাবে সরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মী পাঠানো যায় এবং আমাদের কর্মীরা যদি চুক্তি অনুযায়ী প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকেন, তাহলে এই শ্রমবাজার আবার ঘুরে দাঁড়াবে।’
তবে লিবিয়ার পরিস্থিতি এখনো স্বাভাবিক না হওয়ায় দেশটির আশানুরূপ শ্রমবাজার হয়ে ওঠার সম্ভাবনা কম বলে মন্তব্য করেন ব্র্যাকের অভিবাসন কর্মসূচির প্রধান শরিফুল হাসান। কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, ‘লিবিয়ায় এখনো রাজনৈতিক কোন্দল টিকে আছে। এর ফলে আমাদের কর্মীরা নানা ঝুঁকির মধ্যে পড়বেন। তখন এ ঝুঁকি এড়াতে তাঁরা ইউরোপে যাওয়ার চেষ্টা করবেন। এ ক্ষেত্রে কর্মীদের খুব ভালোভাবে কাউন্সেলিং করতে হবে। এ ছাড়া লিবিয়া ও সিরিয়ায় সবচেয়ে বেশি মানবপাচার হয়ে থাকে। ফলে সেখানকার কর্মীরা এই চক্রের মধ্যে পড়ে প্রচুর দুর্ভোগের শিকার হতে পারেন। এসব বিবেচনা করলে লিবিয়ার শ্রমবাজার ঘুরে দাঁড়ানোর মতো এখনো কোনো আশা দেখা যায় না।’