বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০২৫, ১১:৫৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
কোনাবাড়ীতে নারী মাদককারবারি আটক সিরাজগঞ্জে মহাসড়কে ডাকাতি, গ্রেফতার ৪ সুন্দরগঞ্জে জুয়া ও মাদকদ্রব্য বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন গাজীপুরে বিএনপির দুই গ্রুপের কোন্দল,দলীয় প্রধানের ছবি ভাংচুর যশোরের বেনাপোলের লিটনের ১৭ বছরের সাজা জামিনের কথা বলে টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করায় যশোরে কারারক্ষীর বিরুদ্ধে মামলা চরহাজারীতে ব্যবসায়ী শেখ ফরিদ খোকন এর রমজানের ফুড প্যাকেজ বিতরণ যশোর ঝিকরগাছার সাবেক এসিল্যান্ডকে আহত করা মামলায় দুইজনের কারাদণ্ড দেশব্যাপী নারী ও শিশু নির্যাতন, ধর্ষণ, হত্যার প্রতিবাদ বেনাপোলে ধর্ষক মানুষরুপী পশুদের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন মোটরসাইকেল চোরাচালানীদের ধরতে সড়ক দূর্ঘটনায় এক বিজিবি সদস্য নিহত, আহত এক

আদালত প্রাঙ্গন থেকে পালিয়ে যাওয়া জিএমবি সদস্য সোহেলের বাড়ি লালমনিরহাটে!

আশরাফুল হক, লালমনিরহাট: / ২৫৩ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : বুধবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২২

ঢাকা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত প্রাঙ্গন থেকে পালিয়ে যাওয়া অন্যতম সদস্য আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব ওরফে সাজিদের বাড়ি লালমনিরহাটের আদিতমারী’র কমলাবাড়ি ইউনিয়ন ৩নং ওয়ার্ডের ভেটেশ্বর গ্রামে। ওই গ্রামের আবু তাহের এর ছেলে। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে সাকিব তৃতীয়।

ওই এলাকার স্হানীয়রা জানান, গত ১৫ বছর আগেও ওই পরিবারটি ঠিক মতো সংসার চালতো না। সেই পরিবারটি এখন ২৫-৩০ বিঘা জমির মালিক। টাকা-পয়সাও হয়েছে অনেক। তাদের চলাফেরায় আভিজাত্য দেখা যায়। আদালত প্রাঙ্গণ থেকে সোহেল-সাকিব পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি পুরো আদিতমারী উপজেলা জুড়ে আলোচনার ঝর তুলেছে।

জানা গেছে, সোহেল-সাকিবের বাবা আবু তাহের ওই এলাকায় তাহের নেতা নামেই পরিচিত। সোহেলের বড় ভাই আবু সাঈদ ঢাকায় টিউশনি করেন বলে এলাকায় প্রচার রয়েছে। দুই নম্বর ভাই আব্দুস সাত্তার শাহীন ঢাকার গাজীপুরে গ্রামো ফার্মাসিউটিক্যালস নামে একটি ওষুধ কোম্পানির মালিক ছিলেন। তিনিও সেখানে কয়েকটি মামলায় জেল খেটেছেন বলে এলাকার লোকজন জানান। বোন শিরিন আক্তারের বিয়ে হয়েছে ঢাকায়। ভাইদের মধ্যে সবার ছোট আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব ওরফে সাজিদ ওরফে শাহাব। কয়েক’টি নামে তিনি পরিচিত। তার শৈশব ও স্কুলজীবন কেটেছে আদিতমারী উপজেলার কুমড়ীরহাট দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে। তিনি আদিতমারী ডিগ্রি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করার পর রাজধানী ঢাকায় পারি জমান। আবু সিদ্দিক সোহেল ১০ বছর বয়সী একটি কন্যা সন্তানও রয়েছে। বিয়ের পর খুব কম সময় এসেছেন গ্রামে।

মঙ্গলবার (২২ নভেম্বর) বিকেলে আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব ওরফে সাজিদ ওরফে শাহাবের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। ওই বাড়ির কেয়ার টেকার সাইফুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত ১৫ দিন আগে আবু তাহের ও তার স্ত্রী সালেহা বেগম বাড়িতে এসে দুই দিন অবস্থান করার পর চলে গেছেন। কোথায় গেছেন সে বিষয়ে কিছু জানি না। এরপর আর বাড়িতে কেউ আসেনি।
ভেটেশ্বর গ্রামের আহম্মদ হোসেন জানান, ১৫ বছর আগেও পরিবারটির দৈন্যদশা খুব খারাপ ছিল। এখন অনেক জমিজমার মালিক। তারা কীভাবে এত বিপুল সম্পত্তির মালিক হলেন সেটা বলতে পারব না। আর সেই পরিবারের ছোট ছেলে জঙ্গি এটা আমাদের কল্পনাতেও আসে না।

হাসান মালিক নামে আরেকজন জানান, ছোটবেলায় দেখেছি আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব ওরফে সাজিদ ওরফে শাহাব নামাজ-কালাম পড়ত। কারো সঙ্গে কোনো ঝামেলায় জড়াতো না। আজ সেই ছেলে পুলিশের হাত থেকে পালিয়েছে, এটা ভাবতেই আমাদের গা শিউড়ে উঠছে।

কমলাবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাহমুদ ওমর চিশতি বলেন, আমার জীবদ্দশায় তাদের দেখেছি, এতো অবস্থা খারাপ ছিল সংসার চলতো না। বছর পাঁচেক আগে থেকেই দেখছি তারা অবস্থাশালী হয়ে গেছে। তাছাড়াও সোহেলের বাবা একটু দেওয়ানি টাইপের ছিলেন। আর ছেলেরা ঢাকায় কি করতেন এসব গোপন রেখেছিলেন। এসব খোঁজ রাখা আমাদের পক্ষে সম্ভব হয়নি, মাঝখানে শোনা যাচ্ছিল তার এক ছেলে বিভিন্ন মামলায় ঢাকায় গ্রেপ্তার হয়েছে। এর চেয়ে বেশি আমাদের জানা আর সম্ভব হয়নি।
এদিকে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব ওরফে সাজিদ ওরফে শাহাবের পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় আদিতমারী থানা পুলিশ সব সময় সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।

আদিতমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোক্তারুল ইসলাম বলেন, পুলিশ গোটা আদিতমারীতে কড়া নজরদারি করছে। এছাড়াও ওর বাড়িতে নজর রাখা হয়েছে। যেন কোনো ভাবেই সেখানে আশ্রয় না নিতে পারে।

প্রসঙ্গত, গত রোববার (২০ নভেম্বর) ঢাকার সন্ত্রাস দমন ট্রাইব্যুনালে মোহাম্মদপুর থানার একটি মামলায় দুই জঙ্গি মইনুল হাসান শামীম ওরফে সামির ওরফে ইমরান এবং আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব ওরফে সাজিদ ওরফে শাহাবের হাজিরা ছিল। হাজিরা শেষে তাদের হাজতখানায় নেওয়ার পথে পুলিশের হাত থেকে তারা পালিয়ে যান। রোববার দুপুরে ঢাকা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত প্রাঙ্গণে এ ঘটনা ঘটে। তারা প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপন ও লেখক অভিজিৎ রায় হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ছিলো।

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
এক ক্লিকে বিভাগের খবর