রবিবার, ০৯ মার্চ ২০২৫, ০৮:০০ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণ, যুবককে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে দিলো জনতা ওসির অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন, হামলায় পুলিশসহ আহত ৫ জন রংপুরের তারাগঞ্জে সাংবাদিক নাজিমের ওপর সন্ত্রাসী হামলা! লালমনিরহাটের আলোচিত হাসিনার কাটা মাথা উদ্ধার গ্রেপ্তার-১ ‎পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী প্রাইভেট পড়তে এসে শিক্ষক কর্তৃক ধর্ষনের স্বীকার জামিয়া উসমান গণী (রা.) মাদরাসার শিক্ষার্থীদের বিভাগীয় কৃতিত্ব যশোরের চৌগাছায় ছেলের হাতে পিতা খুন ফুলবাড়ীতে অবৈধ ইটভাটার চিমনি ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিলো প্রশাসন কাজিপুরে বালু নিংড়ানো পানিতে ডুবে একই পরিবারের দুই শিশুর মৃত্যু  ভারতীয় ৬ পাসপোর্টধারী ভ্রমণ কর জালিয়াতির অভিযোগ আটক

ইউক্রেনে-রাশিয়া যুদ্ধে নিহত বেতাগী’র প্রকৌশলী হাদিসুর হারানোর এক বছর

খাইরুল ইসলাম মুন্না বেতাগী বরগুনা / ১৫০ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : শুক্রবার, ৩ মার্চ, ২০২৩

হাদিস নেই,আনন্দও নেই। বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমানের পরিবারে বিষাদের ছায়াা। এরই মধ্যে কেটে গেছে হাদিসুর নিহত হওয়ার এক বছর। তবুও এগিয়ে চলছে হাদীসুরের স্বপ্নের কুটির নির্মাণ।

গত বছর ২৪ ফ্রেরুয়ারি থেকে ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরু হলে অলভিয়া বন্দরের বাণিজ্যিক কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যাওয়ায় বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ ‘বাংলার সমৃদ্ধি’-টি ২৯ জন নাবিক ও ক্রু নিয়ে সেখানেই নোঙর করা অবস্থায় আটকা পড়ে।

পরে গত ২ মার্চ ইউক্রেনে বাংলাদেশ সময় রাত ৯টা ২৫ মিনিটে জাহাজে রকেট হামলা হয়। এতে জাহাজটিতে আগুন ধরে যায়। ২ মার্চ এ রকেট হামলার শিকার হয়ে গোলার আঘাতে নিহত হন হাদিসুর রহমান।

হাদীসুরের বাড়ি উপজেলার কদমতলা গ্রামে বৃদ্ধ বাবা-মা, বড় এক বোন ও ছোট দুই ভাইসহ অসংখ্য আত্মীয় স্বজন রয়েছে।

গত ডিসেম্বরের প্রথম দিকে হাদীসুর গ্রামের বাড়িতে এসে তাঁর একটি বাড়ি নির্মাণ ও বিয়ে করার কথা ছিলো। কিন্ত আজ হাদিসুর নেই। হাদিসুরের অনুপস্থিতিতেই এগিয়ে চলছে তাঁর স্বপ্নের কুটির নির্মাাণ কাজ।

হাদিসুর হারিয়ে যাওয়ার এক বছর হলেও তাঁর পরিবার এখনো শোক কাটিয়ে উঠতে পারেনি। বৃহাস্পতিবার (২ মার্চ) প্রিয় স্বজনকে স্মরন করতে গিয়ে নিহত হাদিসুরের মা-বাবা দু’জনেই বাকরুদ্ধ হয়ে যায়। তাদের সাথে কথা বলতে গিয়ে মনে হয় তাদের বেদনাকে যেন বাড়িয়ে দিয়েছে আরও বহুগুন। হাদিসকে ছাড়া যেন কোনো কিছু কল্পনা করতে পারেনা তাঁরা। কারণ পবিবারের সব কিছুতেই ছিল তাঁকে ঘিরে।

হাদীসুরের মা রাশিদা বেগম কাঁদতে কাঁদতে বলেন,‘ মা তোমার মুখটা আর ছবি দেখতে ভাল লাগে। এ কথা কেউ আর এখন শোনায় না। হাদিস দরজায় মাটির ভেতরে শুয়ে রয়েছে। অনেক আশাইতো ছিলো তাঁর। আমারে আজ শোকের সাগরে ভাসিয়েগেছে। হাদীসুর মারা যাওয়ার পর অনেকে খোঁজ নিলেও এখন তাঁর অনেকেই তাঁদের পাশে নেই।’

প্রকৌশলী হাদিসুরের বাবা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মো. আব্দুর রাজ্জাক। শোক আর চোখে-মুখে হতাশার ছাপ। কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘হাদীসুর ছাড়া আজ আমাদের জন্য সবই বিষাদ। আমাদের সবার জন্য কেনাকাটা করে কেউ এখন বাড়ীতে পাঠায় না।’

পরিবারের পাশা পাশি প্রতিবেশিরাও শোকাহত। তারাও যেন মেনে নিতে পারছেন না হাদীসুরকে হারানোর বেদনা। কারণ তাদের সাথেও নানা স্মৃতি জড়িয়ে আছে । এমনই একজন স্কুল শিক্ষিকা শাহিদা বেগম ঢলি জানান, হাদিস বাড়িতে আসলে সবার সাথে এক সাথে খাওয়া-ধাওয়া করতো। বড়দের কাছে দোয়া চাইতো ছোটদের ¯েœহ করতো। এখন আর কেউ খাওয়ায় না ও দোয়া চায়না।

হাদিসুরের ছোট ভাই গোলাম মাওলা প্রিন্স বলেন, গতবছরেও ভাই ছিলো। আজ ভাই নাই, বুকটা ফাইটটা যায়। ইতোমধ্যে ভাইয়ের স্বপ্নের বাড়ি তৈরির কাজ এগিয়ে চলছে। গত ডিসেম্বরের প্রথম দিকে বাড়িতে এসে বৃদ্ধ পিতা-মাতাকে স্বপ্নের কুটির উপহার আর বিয়ে করে ঘরে বউ আনার কথা ছিল। তবে স্বপ্ন ঠিকই পূরণ হতে চলেছে। আমাদের মাঝে নেই শুধু প্রিয় ভাই। নতুন ঘরে ঠিকই যাচ্ছি। নেই কোন আনন্দ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
এক ক্লিকে বিভাগের খবর