শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৫, ০৯:২৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
কোনাবাড়ীতে হোটেল হ্যাভেন ফ্রেসে চলছে রমরমা দেহ ব্যবসা গাজীপুরে ১০ হাজার পিস ইয়াবাসহ নারী মাদককারবারি গ্রেপ্তার গ্লোবাল র‍্যাঙ্কিংয়ে বশেমুরকৃবি’র প্রথম স্থান অর্জন উৎসব ও বিশ্বদ্যিালয় দিবস উদযাপন ১ ফেব্রুয়ারি স্বাধীনতার পর জাতির জন্য ভালো কিছু হয়নি তাতে একমত হবো না” ডাঃ শফিকুর রহমান কুড়িগ্রামে অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযান- ১টির কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে বন্ধ ভাঙ্গুড়া দিয়ার পাড়া দাখিল মাদ্রাসার ২১ তম বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে হৃদরোগ সচেতনতা শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত লালমনিরহাটে ইয়াবাসহ দুই ইউপি সদস্য আটক! জয়পুরহাট প্রেসক্লাবে সঙ্গীতশিল্পী ফাহমিদা নবীকে সংবর্ধনা উল্লাপাড়ায় আসামীকে নির্যাতনের ঘটনায় ওসি সহ ৬ পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা

থার্ড টার্মিনাল পরিচালনা যাচ্ছে বেসরকারি খাতে

রিপোর্টারের নাম : / ১৩৭ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : বুধবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২

ক্রমবর্ধমান যাত্রীদের সেবার মান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল প্রকল্পের নির্মাণকাজ দ্রুত গতিতে চলছে। শুরুর দিকে এ টার্মিনাল পরিচালনা বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) করবে বলে কথা থাকলেও এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে সরকার। বেবিচক নয়, কাজ সমাপ্তের পর তৃতীয় টার্মিনাল পরিচালনার দায়িত্ব বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে বেবিচকের বোর্ড সভায়।

গত ১১ আগস্ট বেবিচকের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত সংস্থাটির ২৮১তম বোর্ড সভায় বিষয়টি নিয়ে বিস্তরিত আলোচনা হয়। আলোচনার পর বেসরকারিভাবে টার্মিনাল পরিচালনার বিষয়ে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বেবিচকের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমানের সভাপতিতে বেবিচক পরিচালনা বোর্ডের সদস্যরা সভায় উপস্থিত ছিলেন। সভার সভাপতি বেবিচক চেয়ারম্যান মফিদুর রহমান গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বলেন, ‘থার্ড টার্মিনাল উদ্বোধনের পর আমরা লাগেজ হ্যান্ডলিং, মালামাল লোড-আনলোডসহ টার্মিনালের যাবতীয় অপারেশনাল কাজ বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে প্রশাসনিক নিরাপত্তা, ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস ব্যবস্থা সংশ্লিষ্ট দপ্তরেই ন্যস্ত থাকবে। বিশ্বের উন্নত বিমানবন্দরে এই ধরনের প্রক্রিয়া রয়েছে। এর ফলে আয় বৃদ্ধির পাশাপাশি যাত্রীরা দ্রুততার সঙ্গে সেবা পাবেন এবং যে কোনো কর্মকা-ের বিষয়ে জবাবদিহিতা থাকবে।’ তিনি জানান, এ বিষয়ে দুই সদস্যের পরামর্শক নিয়োগ দেওয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। পরামর্শক প্রতিবেদন হাতে পেলেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হবে। সর্বোপরি সরকার যে সিদ্ধান্ত দেবে, সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বেবিচকের ২৮১তম বোর্ড সভায় লিখিত প্রস্তাবের বরাত দিয়ে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বেসরকারি খাতের মাধ্যমে শাহজালাল বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল পরিচালনার বিষয়ে এয়ারপোর্ট কাউন্সিল ইন্টারন্যাশনালকে (এসিআই) দিয়ে সম্ভাব্যতা যাচাই করা নিয়ে আলোচনা হয়। এতে বলা হয়, তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণকাজ ২০২৩ সালের শেষ দিকে সম্পন্ন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। টার্মিনালটি নির্মাণ শেষ হলে বিমানবন্দরে যাত্রী ও কার্গো হ্যান্ডলিংয়ের সার্বিক সক্ষমতা দ্বিগুণের বেশি হবে। বর্তমানে বিমানবন্দরের সামগ্রিক কার্যক্রম বেবিচক ও বাংলাদেশ বিমানের মাধ্যমে পরিচালনা করা হয়। বিশে^র বিভিন্ন দেশের বিমানবন্দরে উন্নত গ্রাহকসেবা দেওয়াসহ বাণিজ্যিকভাবে লাভবান করার উদ্দেশ্যে বেসরকারি খাতের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। বিশে^র অন্যান্য দেশের মতো শাহজালাল বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালে বেসরকারি খাতের মাধ্যমে পরিচালনা করলে কতটুকু সুবিধাজনক হবে- এ বিষয়ে একটি সম্ভাব্যতা যাচাই করা প্রয়োজন।

সূত্র জানায়, ইন্টারন্যাশনাল সিভিল অ্যাভিয়েশন অরগানাইজেশনের টেকনিক্যাল কো-অপারেশন ব্যুরো ও এসিআইকে ভিন্ন ভিন্নভাবে অনুরোধ করা হয়েছে। বেবিচকের অনুরোধে সংস্থা দুটি সম্ভব্যবতা যাচাই করার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করে। তাদের কাছ থেকে দুটি প্রস্তাবও পাওয়া গেছে। ইন্টারন্যাশনাল সিভিল অ্যাভিয়েশন অরগানাইজেশন (আইকাও) সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য ৭ লাখ ৫১ হাজার ৩০০ ডলার ও এসিআই আড়াই থেকে সাড়ে ৩ লাখ ডলার বাজেটের পৃথক প্রস্তাব পাঠিয়েছে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বিমানবন্দরের তুলনায় এই প্রস্তাব তুলনামূলক কম বাজেটের। ফলে বেবিচক প্রথমে এসিআইকে সম্ভাব্যতা যাচাই করে দেওয়ার বিষয়ে সম্মতি দেয়।

সভায় উপস্থিত এক কর্মকর্তা বলেন, ‘তৃতীয় টার্মিনাল বেসরকারি খাতে পরিচালনার বিষয়টি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। এই বিষয়ে আমরা নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ চলছে। আন্তর্জাতিক দুটি সংস্থা সম্ভাব্যতা যাচাই করে দেওয়ার পর আমরাও এ বিষয়ে কাজ করব। উন্নত গ্রাহকসেবা নিশ্চিত করার পাশাপাশি বাণিজ্যিকভাবে লাভবান হওয়ার জন্য বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়া ভালো প্রমাণ হলে তা-ই করা হবে।’

বোর্ডে সিদ্ধান্ত হয়েছে, এসিআইর দুই বিশেষজ্ঞের সম্ভাব্যতা যাচাই কার্যক্রমটি সম্পন্ন করার জন্য যোগ্য বিশেষজ্ঞ দল নির্বাচনবিষয়ক প্রস্তাব এবং বেবিচকের সঙ্গে আলোচনাপূর্বক প্রস্তাবিত বিশেষজ্ঞ নির্বাচনের পর এসিআই দ্বারা প্রয়োজনীয় কাজ সম্পন্ন করার প্রাক-অনুমোদনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

সূত্র জানায়, শাহজালাল বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক মানের এই যাত্রী টার্মিনালটির আয়তন হবে ২২ দশমিক ৫ লাখ বর্গফুট। বর্তমানে শাহজালাল বিমানবন্দর দুটি টার্মিনালে ১০ লাখ বর্গফুট স্পেস রয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে বিমানবন্দরের বর্তমান যাত্রী ধারণক্ষমতা ৮০ লাখ থেকে বেড়ে ২ কোটি হবে এবং কার্গো ক্যাপাসিটি বর্তমান দুই লাখ টন থেকে বেড়ে পাঁচ লাখ টন হবে। তিন তলার টার্মিনাল ভবনটির আয়তন ২ লাখ ৩০ হাজার বর্গমিটার। তৃতীয় টার্মিনালে ২৪টি বোর্ডিং ব্রিজের ব্যবস্থা থাকলেও প্রকল্পের প্রথম ধাপে ১২টি বোর্ডিং ব্রিজ চালু করা হবে। বহির্গমনের জন্য ১৫টি সেলফ সার্ভিস চেক ইন কাউন্টারসহ মোট ১১৫টি চেক ইন কাউন্টার থাকবে। ১০টি স্বয়ংক্রিয় পাসপোর্ট কন্ট্রোল কাউন্টারসহ মোট ৬৬টি ডিপারচার ইমিগ্রেশন কাউন্টার থাকবে।

এ ছাড়াও তৃতীয় টার্মিনালের সঙ্গে গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য বহুতল কার পার্কিং ভবন নির্মাণ করা হবে। সেখানে পার্কিংয়ের সুযোগ পাবে ১ হাজার ৪৪টি গাড়ি। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মানের অত্যাধুনিক অগ্নিনির্বাপণব্যবস্থা, লাউঞ্জ, দোকান, রেস্টুরেন্টসহ সংশ্লিষ্ট অত্যাধুনিক ও আন্তর্জাতিক মানের যাত্রীসেবার সুবিধাও রাখা হবে। জাপানের মিৎসুবিশি ও ফুজিতা এবং কোরিয়ার স্যামসাংয়ের একটি কনসোর্টিয়ামের অধীন চলছে তৃতীয় টার্মিনালের নির্মাণযজ্ঞ।

এ দিকে বিমানবন্দরে যাত্রীদের বিভিন্ন কারণে হয়রানির কথা স্বীকার করে গতকাল সচিবালয়ে আয়োজিত এক আলোচনাসভায় বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী বলেন, ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে শাহজালাল বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণকাজ শেষ হবে। তখন মানুষের হয়রানি কমবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর

এক ক্লিকে বিভাগের খবর