দিনাজপুরে বই বিতরণ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

দিনাজপুরে বই বিতরণ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।শহীদ আসাদুল্লাহ স্মৃতি সংসদের ৪৫ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে দিনাজপুরে বই বিতরণ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
১০ ডিসেম্বর সকাল ১১ টায় আফতাব প্লাজার নিচ তলায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভা ও শহীদ আসাদুল্লাহ স্মৃতি সংসদের সাহিত্য ও লাইব্রেরী সম্পাদক মাসউদ রানা কতৃক প্রকাশিত ‘প্রাথমিক শিক্ষা’ নামক বই বিতরণ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শহীদ আসাদুল্লাহ স্মৃতি সংসদের এবং মুক্তিযুদ্ধ ও শহীদ স্মৃতি সংগ্রহ কমিটির সভাপতি ডা. মু. শহীদুল্লাহ। স্বাগত বক্তব্য দেন ,প্রকৌশলী আলহাজ্ব আবু আহমেদ জাফরুল্লাহ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, প্রাক্তন অধ্যক্ষ আব্দুল জব্বার । বরেণ্য অতিথি ছিলেন ,খালিদ চিশতী।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা লেখক এমএকাফি সরকার ও সাহিত্য ও পাঠাগার সম্পাদক মাসউদ রানার সঞ্চালনায় অভ্যাগত অতিথিদের মধ্যে বক্তব্য দেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মোঃ হুমায়ুন কবির, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব আশিকুর রহমান চৌধুরী, মো. নুরুল ইসলাম সরকার , জেলা শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও জেলা স্কাউটের কমিশনার মোঃ মাতলুবুল মামুন, মো.কুতুব উদ্দিন ,শংকরপুরের মো. মোজাম্মেল হক সরকার, মোঃ আব্দুর রশিদ সরকার, সানরাইজিং নার্সিং ইনস্টিটিউটের পরিচালক মোঃ নাজমুল মোল্লা, নাগরিক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোঃ রবিউল ইসলাম, ও কবি রবিউল ইসলাম, প্রমুখ।
প্রধান অতিথি বক্তব্যে স্মৃতিচারণ করে বলেন, শহীদ আবু আহমেদ আসাদুল্লাহ ছিলেন- প্রখর মেধাবী, অদম্য সাহসী আর বিনম্র স্বভাবের। ছিলেন সত্যের প্রতীক। তিনি জীবনকে উপভোগ না করে দেশের স্বাধীনতার জন্য- মানুষের মুখে হাঁসি ফোটানোর জন্য জীবনকে উৎসর্গ করেছেন। তিনি ছিলেন জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। দেশের জন্য তাঁর অবদান জাতির সামনে তুলে ধরতে হবে। তিনি আরো বলেন, আসাদুল্লাহ দেশের মানুষের জন্য এক অনুপম আদর্শ স্থাপন করে গেছেন। তা অনুকরণীয় ।
প্রসঙ্গত, শহীদ আসাদুল্লাহ ১৯৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানে ২১ জানুয়ারি ঢাকা পলাশী নিউমার্কেট মোড়ে স্বাধিকার আন্দোলনে ছাত্রদের ১১ দফার মিছিলে পশ্চিমা ইপিআর বাহিনী গুলিতে নির্মমভাবে আহত হন। আসাদ এইড ফান্ড গঠন করে তাকে চিকিৎসার জন্য লন্ডনে পাঠানো হয়। সত্তরের প্রথমার্ধে দেশে ফেরে।” ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোল”বঙ্গবন্ধুর এই নির্দেশে স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য ও দিনাজপুরের সভাপতি নির্বাচিত হয়ে দিনাজপুরে এসে সাংগঠনিক কার্যক্রম শুরু করেন। ১৩ এপ্রিল ‘৭১ এ হানাদার বাহিনী ট্যাংক, সাঁজোয়া বাহিনী সহ দশ মাইল ও বিভিন্ন স্থানে হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে দিনাজপুর শহরে প্রবেশ করেন। তখন রাজনৈতিক নেতারা শহর ছেড়ে চলে যায়। কিন্তু আসাদুল্লাহ বলেন, নেতৃত্ব আর অস্ত্র নিয়ে সরে পড়লে সাধারণ মানুষ দাঁড়াবে কোথায়? তিনি শহর ছাড়েননি! মৃত্যুকে বরণ করে নিয়েছিলেন। ১৪ এপ্রিল দিনাজপুর পৌরসভা ও জেলা স্কুলের সামনে জাতির এই শ্রেষ্ঠ সন্তান কে হানাদার বাহিনী ও অবাঙালিদের সহায়তায় নির্মমভাবে গুলি বর্ষন করে তাকে হত্যা করেন ।তার এই স্মৃতি ও আদর্শকে ধরে রাখতে ‘৭৮ সালে ১০ ডিসেম্বর তৎকালীন জেলা প্রশাসক মোঃ জহুরুল ইসলাম ,সেক্টর কমান্ডার বীর বিক্রম মোঃ নজরুল হক ,জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোখলেসুর রহমান সহ শুভাকাঙ্ক্ষীদের পৃষ্ঠপোষকতায় ও প্রচেষ্টায় স্বেচ্ছাসেবী এই সংগঠনটি গঠিত হয়।