রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫, ০৩:০০ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
লালমনিরহাটে দাদন ব্যবসায়ীর রাতভর নির্যাতন সকালে দিনমজুরের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার! ভালুকায় চাঁদাবাজির প্রতিবাদে মানববন্ধন ও মহাসড়ক অবরোধ রায়গঞ্জে পূর্ব শত্রুতার জেরধরে সাংবাদিকের হাত-পা ভেঙ্গে দিলো সন্ত্রাসীরা ঈদ বাজার বেনাপোলে দর্জি কারিগরদের ব্যস্ততা, ছিট কাপড়ের দোকানে ভীড় ভাঙ্গুড়ায় ট্রাকের নিচে পিষ্ট পূত্র বাবা আহত সিরাজগঞ্জে গাঁজাসহ দুই মাদক কারবারি আটক ভালুকায় শ্রমিক দলের নেতা কর্তৃক শিক্ষকের বাড়িতে হামলা, প্রতিবাদে সাংবাদিক সম্মেলন সীতাকুণ্ডের ঘোড়ামরা যুব সমাজের উদ্দ্যোগে ১৫০ পরিবারের মাঝে ভর্তুকি মূল্যে পণ্য বিক্রয় সুন্দরগঞ্জে গণ ইফতার মাহফিল ও আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে জয়পুরহাটে বিএনপির দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত

লালমনিরহাটে এসিড আক্রান্ত মেয়ের মামলা আর চিকিৎসায় নিঃস্ব বিধবা জাহানারা

 আশরাফুল হক, লালমনিরহাট: / ১৭৬ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : বৃহস্পতিবার, ২৬ জানুয়ারি, ২০২৩

দীর্ঘ ৫ বছর ধরে এসিড আক্রান্ত মেয়ের মামলা চালাতে আর উন্নত চিকিৎসা ব্যয়ে নিঃস্ব হয়ে এখন অন্যের বাশঁঝারে ছাপরা ঘড়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন জাহানারা (৫০) নামের এক বিধবা মা। তিনি দুই সন্তানের জননী। একমাত্র ছেলে জাকির হোসেন (২৮) লালমনিরহাট সরকারি কলেজ থেকে স্নাতক পাস করে অটো চালান। থাকেন শশুর বাড়িতে। স্বামীর মৃত্যুর পর অনেক কষ্টে অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে ছেলে মেয়েকে লালন-পালন করেছেন জাহানারা।

গত ২৫/১০/২০১৬ ইং তারিখে আদিতমারী উপজেলার বড় কমলাবাড়ী গ্রামের মুসা মিয়ার ছেলে আফজাল হোসেন (৩০) এর সাথে ৫ লাখ টাকা দেনমোহরে বিয়ে দেন একমাত্র মেয়ের। কিন্তু বিয়ের পড়ে ৩ লাখ টাকা যৌতুক বাবদ দাবী করেন অর্থলোভী জামাই আফজাল হোসেন আপন। অতিকষ্টে ধারদেনা করে ৫০ হাজার টাকা সাথে ২ভরি স্বর্ন যৌতুক বুঝিয়ে দেন জামাইকে। বাকী টাকার জন্য শুরু হয় অমানবিক নির্যাতন। লোভি স্বামি বাকি টাকার জন্য চাপ দিতে থাকলে, মায়ের দৈন্যতা দেখে স্বামীকে টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানান মেয়ে।

দাবীকৃত যৌতুকের টাকা না পেয়ে জামাই আফজাল, শশুর মুছা মিয়া (৬০), শাশুড়ি আছিয়া বেগম (৫৩), দেবর আনোয়ারুল (২৭), ও ননদ মাহাফুজা খাতুন (২৫) মিলে অমানবিক নির্যাতন চালায় অসহায় মেয়েটির ওপর। মামলার আরজি ও ভুক্তভোগীর কাছ থেকে জানাযায়, ২০১৭ সালের মার্চের ২ তারিখে রাতের খাবার খেয়ে শয়ন ঘড়ে গেলে স্বমীর সাথে যৌতুকের টাকা নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। সারাদিন মারপিটের পর অসুস্থ্য স্ত্রীকে পাষণ্ড স্বামি রাত ১১ টার দিকে পুর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী শয়নকক্ষে থাকা একটি এসিড ভর্তি বোতলের মুখ খুলে মেয়েটির গুপ্তাঙ্গে নিক্ষেপ করে। প্রচন্ড যন্ত্রণায় মেয়েটি চিৎকার করলে প্রতিবেশীরা বিষয়টি জেনে ফেলে এবং প্রতিবেশীরা বিষয়টি তার পরিবারকে অবগত করেন। ঘটনার পরদিন মামলার সাক্ষী জমিলা বেওয়া (৬৫) ও কাশেম আলী (৫০) ঘটনাস্থলে গিয়ে মেয়েটিকে উদ্ধার করে লালমনিরহাটের সাবেক সিভিল সার্জন ডাঃ জাহাঙ্গীর আলমের হাড়িভাঙ্গা এলাকার বাড়িতে নিয়ে চিকিৎসা করান।

পড়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে লালমনিহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধিন অবস্থায় মেয়েটি নিজে বাদি হয়ে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের, নারী নির্যাতন প্রতিরোধকল্পে মাল্টিসেক্টরাল প্রোগ্রামের সহযোগিতায় বিজ্ঞ আদালতে মামলা দায়ের করেন। ৫ বছরের বেশি সময় ধরে চলা মামলায় ১ বারের জন্য আদালতে হাজির হয়নি নারী নির্যাতন মামলার প্রধান আসামি আফজাল হোসেন ওরফে (আপন)। আদিতমারী থানায় ২ টি গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে তার নামে।

ভুক্তভোগীর দাবী, চাইলেই আসামি ধরতে পারে পুলিশ, আসামি একাধিকবার মোবালইল ফোনে মামলা তুলে নিতে হুমকি দিয়েছে, যা পুলিশকে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী, কিন্তু পুলিশ অদৃশ্য কারনে তাকে ধরছেনা। খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, ঘটনার দিন থেকে পলাতক রয়েছে ঐ মামলার প্রধান আসামি আফজাল হোসেন আপন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একজন জনপ্রতিনিধি জানান, কিছুদিন আগে আফজালকে তার পরিবারের লোকেরা প্রতিবেশী দেশ ভারতে পাঠানোর পরিকল্পনা করেছে।

সরেজমিনে আফজালের বাড়িতে গেলে একই মামলার আরেক আসামি তার ভাই আনোয়ারুল বলেন, বাবা বাড়িতে নেই। আমরা জামিনে আছি। আফজালের সাথে যোগাযোগ হয় কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, তখন থেকেই আমরা তার কোনো খোঁজ জানি না। এদিকে এমন স্পর্শকাতর মামলার আসামি দীর্ঘদিন ফেরারি থাকায় সমাজের জন্য ঝুঁকি বলে মনে করছেন, নারী নির্যাতন প্রতিরোধ কল্পে কাজ করা বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

বর্তমানে আতংকে দিন কাটছে ঐ পরিবারের। জাহানারা বলেন, সাম্প্রতিক সময় মুঠোফোনে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি দিয়েছে আত্মগোপনে থাকা আসামি আফজাল। মামলার ঘানি টানতে টানতে ক্লান্ত বিধবা জাহানারা ন্যায় বিচারের আকুতি জানিয়েছেন।

এদিকে হুমকি দেওয়ার কথা মামলায় সংশ্লিষ্ট আদিতমারী থানা পুলিশের এক এস আই কে জানালে তিনি মামলা মিমাংসা করার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন। এ বিষয়ে আদিতমারী থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) মোক্তারুল ইসলামের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বললে তিনি জানান , ২০১৭ সালের মামলা হওয়ায় বিষয়টি তিনি জানেন না।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
এক ক্লিকে বিভাগের খবর