লালমনিরহাটে সাংবাদিককে হুমকি, থানায় জিডি!
তথ্য অধিকার আইনে তথ্য না পেয়ে আপিল করায় লালমনিরহাটের এক সাংবাদিককে হুমকী দিয়েছেন জেলা মার্কেটিং অফিসার। জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে থানায় সাধারন ডায়েরী (জিডি) করেছেন ওই সাংবাদিক।
সোমবার(১৮ জুলাই) রাতে লালমনিরহাট সদর থানায় নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে সাধারন ডায়েরী (জিডি) করেন সাংবাদিক জাহেদুল ইসলাম সমাপ্ত।
সাংবাদিক জাহেদুল ইসলাম সমাপ্ত লালমনিরহাট পৌরসভার থানা পাড়া এলাকার মৃত শাহাদাত হোসেনের ছেলে। তিনি দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার লালমনিরহাট প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত।
থানায় দায়ের করা জিডি সুত্রে জানা গেছে, পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে জেলা কৃষি বিপনন কর্মকর্তা আব্দুর রহিমের নিকট প্রয়োজনীয় তথ্য চেয়ে তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করেন সাংবাদিক জাহেদুল ইসলাম সমাপ্ত। কিন্তু সময় শেষ হলেও কিংখিত তথ্য না দেয়ায় তথ্য পেতে তথ্য অধিকার আইনের আপিল ফরমে আবেদন করেন সাংবাদিক সমাপ্ত। যার প্রেক্ষিতে তাকে দ্রুত কাংখিত তথ্য দিতে নির্দেশনা দেন রংপুর কৃষি বিপনন অধিদফতরের উপ পরিচালক আনোয়ারুল ইসলাম। এতে সাংবাদিক সমাপ্তের উপর ক্ষিপ্ত হন লালমনিরহাট জেলা কৃষি বিপনন অফিসার আব্দুর রহিম।
আপিল কর্মকর্তার দেয়া নির্দেশনা অনুযায়ী সোমবার (১৮ জুলাই) সেই তথ্য পেতে জেলা কৃষি বিপনন অফিসারকে তার ০১৭৯৮০১০০১৫ নম্বরে ফোন করেন সাংবাদিক সমাপ্ত। এ সময় ওই অফিসার ক্ষিপ্ত হয়ে সাংবাদিক সমাপ্তকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করে মেরে ফেলাসহ নানান ভাবে হুমকী দেন। যার অডিও রেকর্ডসহ সোমবার (১৮ জুলাই) রাতে সদর থানায় একটি জিডি (নং-৮৬৬) করেন সাংবাদিক সমাপ্ত।
লালমনিরহাট জেললা কষি বিপণন অফিসার আব্দুর রহিম বলেন, আমার অফিসে তো তেমন কোন বরাদ্ধ আসে না। তারপরও আমার কাছে তথ্য চেয়ে আবেদন করেছে। আমার ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে আমার বিরুদ্ধে অনেক বলেছে এবং পত্রিকায় লিখেছে। তাই রাগ হয়ে তাকে কিছু বলেছি। এজন্য জিডি করার কি আছে। জিডি করে কি করতে পারবে। আমি ভাসি আসি নি।
তথ্য অধিকার আইনে তথ্য চেয়ে সাংবাদিককে হেনস্থা ও হুমকীর ঘটনায় সাংবাদিক সংগঠনের নেতারা নিন্দাসহ প্রতিবাদ জানান।
এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম (বিএমএসএফ) ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান আহমেদ আবু জাফর বলেন, লালমনিরহাটের ঐ কর্মকর্তাকে ঢাকায় ডেকে তথ্য অধিকার আইন কি, তথ্যদাতা সাংবাদিকদের সাথে কেমন ব্যবহার করা উচিৎ সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট দপ্তর প্রশিক্ষণ দিয়ে মাঠে ছাড়া উচিৎ। নয়তো এরুপ কর্মকর্তাদের কারণে সরকারের অর্জন বিসর্জন হতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
লালমনিরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এরশাদুল আলম জানান, জিডি গ্রহন করা হয়েছে। তদন্ত করে পরবর্তি ব্যবস্থা নেয়া হবে।