বৃহস্পতিবার, ০৬ মার্চ ২০২৫, ০৮:০১ অপরাহ্ন

শেখ রাসেল নির্মলতার প্রতীক, দুরন্ত প্রাণবন্ত নির্ভীক

রিপোর্টারের নাম : / ১৪১ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : মঙ্গলবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২২

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট ছেলে শহিদ শেখ রাসেলের ৫৯তম জন্মদিন আজ। ১৯৬৪ সালের এই দিনে ঐতিহাসিক ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবনে শেখ রাসেল জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট ঘাতক চক্রের নির্মম বুলেটের হাত থেকে রক্ষা পায়নি বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেল।বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে ঘাতকেরা নিষ্ঠুরভাবে তাকেও হত্যা করেছিল।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট ভাই শেখ রাসেল ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র ছিল। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, গত বছর থেকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলের জন্মদিন ‘শেখ রাসেল দিবস’ হিসেবে পালিত হচ্ছে। এই দিবসের এবারের মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে, ‘শেখ রাসেল নির্মলতার প্রতীক, দুরন্ত প্রাণবন্ত নির্ভীক’।

১১ বছরের শিশু রাসেল প্রতিদিনের মতো সেদিনও ঘুমিয়ে ছিল। আকস্মিক গুলির শব্দে তার ঘুম ভেঙে যায়। বেগম মুজিব আদরের দুলাল রাসেলকে রক্ষার জন্য কাজের লোকসহ পেছনের দরজা দিয়ে চলে যেতে বলেন। গেট দিয়ে বাইরে যাওয়ার সময় ঘাতকেরা তাকে আটক করে। এ সময় বাড়ির ভেতরে মুহুর্মুহু বুলেটের শব্দ আর আর্তচিত্কার শুনে অবুঝ শিশু রাসেল কান্নাজড়িত কণ্ঠে ঘাতকদের বলেছিল, ‘আমি মায়ের কাছে যাব।’ কিন্তু মায়ের কাছে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে রাসেলকেও গুলি করে হত্যা করে ইতিহাসের ঘৃণ্যতম এই ঘাতকেরা।জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট ছেলে শহিদ শেখ রাসেল।

রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী
শেখ রাসেল দিবস উপলক্ষ্যে পৃথক বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাণীতে রাষ্ট্রপতি বলেন, রাসেল ছিল সবার ছোট, অনেক আদরের। রাজনৈতিক কারণে বঙ্গবন্ধুকে জীবনের দীর্ঘ সময় কাটাতে হয়েছে কারাগারে। এজন্য শিশু রাসেল পিতার সান্নিধ্য ও আদর-যত্ন থেকে বঞ্চিত হয়েছে। রাসেল বেঁচে থাকলে হয়তো জাতির নেতৃত্ব দিত, দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করত। কিন্তু বাঙালি জাতির দুর্ভাগ্য, ঘাতকেরা ছোট্ট রাসেলকেও সেদিন রেহাই দেয়নি। ঘাতকেরা বঙ্গবন্ধুর রক্তের উত্তরাধিকারদের নিশ্চিহ্ন করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু তারা সফল হয়নি। রাসেল আজ বিশ্বে অধিকারবঞ্চিত শিশুদের প্রতীক ও মানবিক সত্তা হিসেবে বেঁচে আছে সবার মাঝে। রাষ্ট্রপতি শহিদ শেখ রাসেলের জন্মবার্ষিকীতে তার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।

বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, রাসেল নামটি শুনলেই প্রথমে যে ছবিটি সামনে আসে তা হলো—হাস্যোজ্জ্বল, প্রাণচঞ্চল এক ছোট্ট শিশুর দুরন্ত মুখ। যে শিশুর চোখগুলো হাসি-আনন্দে ভরপুর। মাথাভর্তি অগোছালো চুলের সুন্দর একটি মুখাবয়ব, যে মুখাবয়ব ভালোবাসা ও মায়ায় মাখা। এই কোমলমতি শিশু রাসেলকে আমরা হারিয়েছি ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্টের ইতিহাসের এক নির্মম, জঘন্য ও বিভীষিকাময় রাতে। সেই রাতের প্রতিটি ক্ষণ, প্রতিটি মুহূর্ত এখনো গভীর শোকের সঙ্গে স্মরণ করি। রাসেল যদি বেঁচে থাকত, তাহলে আজ হয়তো মহানুভব, দূরদর্শী ও আদর্শ নেতা আমরা পেতাম, যাকে নিয়ে দেশ ও জাতি গর্ব করতে পারত। প্রধানমন্ত্রী ‘শেখ রাসেল দিবস ২০২২’ উপলক্ষ্যে গৃহীত সব কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে তার ছোট ছেলে শহিদ শেখ রাসেল।

শেখ রাসেলের জন্মদিন উপলক্ষ্যে সারা দেশে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এছাড়া আজ বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশ দূতাবাসসমূহেও দিবসটি পালিত হবে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এক বিবৃতিতে ‘শেখ রাসেল দিবস’ উপলক্ষ্যে সারা দেশে আয়োজিত কর্মসূচিতে যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে অংশগ্রহণের জন্য আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনসমূহের নেতা-কর্মী, সমর্থক ও সর্বস্তরের জনগণের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন। দিবসটি উপলক্ষ্যে জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের উদ্যোগে চিত্রাঙ্কন, দাবা, জাতীয় ফুটবল টুর্নামেন্ট ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর

এক ক্লিকে বিভাগের খবর