সরকারের পদক্ষেপে নিত্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতি রোধ হয়েছে

ঢাকার একটি হোটেলে দৈনিক ইত্তেফাক আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে পত্রিকাটির নির্বাহী পরিচালক ও প্রকাশক তারিন হোসেনও বক্তব্য দেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমস্যা প্রসঙ্গে শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘অবশ্যই আমাদের মধ্যে কিছু সমস্যা আছে।
যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসানীতি প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আশা করি, ওই নীতির যথেচ্ছ ব্যবহার হবে না। ভিসানীতি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে একটি স্বচ্ছ প্রক্রিয়া অনুসরণ করার বিষয়টি আমাদের নিশ্চিত করতে হবে।’
শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সব রাজনৈতিক দলের সমান রাজনৈতিক অঙ্গীকার প্রয়োজন। আমরা আশা করি, সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নেবে।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি বলেছে, পুলিশ, প্রশাসন এবং যারা নির্বাচনের সঙ্গে জড়িত, তাদের দেখে নেওয়া হবে এবং এটি বড় ধরনের হুমকি। আমি আশা করব, যুক্তরাষ্ট্র বিষয়টি বিবেচনা করবে। তবে আমরা আশা করি, বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে।’
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি প্রশ্নে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিষয়টি আদালতের রায়ে শেষ হয়ে গেছে। আমরা সেটিতে ফিরে যাব না।’
তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দাবি করাটা এখন হবে অবৈধ এবং এটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতিবন্ধকতা হিসেবে বিবেচিত হবে।’
যুক্তরাষ্ট্র থেকে নতুন কোনো নিষেধাজ্ঞা আসছে কি না জানতে চাইলে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা নতুন নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার কোনো যুক্তি দেখি না।’
তিনি বলেন, ‘২০২১ সালের পর নতুন কোনো নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়নি। আমি এমন কিছু দেখি না, যার কারণে সামনের বছরগুলোতে কোনো ধরনের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে।’
নিষেধাজ্ঞা এলে ব্যবসা ও বাণিজ্যের কোনো ক্ষতি হয় কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘পৃথিবীর অনেক শক্তিশালী দেশ আরেক দেশের সঙ্গে চরম উত্তেজনার মুহূর্তেও বাণিজ্য বন্ধ করেনি। এটি যদি সত্যি হয়, তবে বাংলাদেশের নিষেধাজ্ঞার সঙ্গে বাণিজ্যকে কেন জড়িয়ে ফেলা হবে।’
র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের জন্য আমরা রাজনৈতিকভাবে যোগাযোগ করছি। ২০২১ সালের পর পরিস্থিতির অনেক উন্নতি হয়েছে বলে যুক্তরাষ্ট্র নিজেই স্বীকার করে নিয়েছে। এ ছাড়া যে আইনি প্রক্রিয়া আছে তা বাংলাদেশ অনুসরণ করছে বলে তিনি জানান।
বাংলাদেশ-জাপান সম্পর্কের প্রশংসা করেন প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক জাপান, যুক্তরাষ্ট্র ও কাতার সফর অত্যন্ত সফল হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর চীন সফর সম্পর্কে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী চীন যাবেন কি না জানি না। একটি বন্ধু দেশে তিনি যেতেই পারেন। আমরা বিভিন্ন দেশে যেতে পারি নির্বাচনের আগে। আমাদের সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়া নির্বাচনের কারণে থেমে থাকবে না। সফরই দেশের জন্য ভালো কিছু নিয়ে আসে।’
চীনা উদ্যোগ জিডিআইতে বাংলাদেশ যোগ দিচ্ছে কি না জানতে চাইলে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ চীনের ‘বেল্ট অ্যান্ড রোডে (বিআরআই)’ যুক্ত হয়েছে। আরো অনেক দেশ এর সঙ্গে যুক্ত। কিন্তু জিডিআই নতুন উদ্যোগ।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত না নেওয়া পর্যন্ত এ বিষয়ে বলার মতো কিছু নেই। এ বিষয়ে একটি কমিটি করা হয়েছে, যারা বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।’
রোহিঙ্গা সংকট প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, সংকট সমাধানে সরকার যথাসাধ্য চেষ্টা করছে। তিনি এ ব্যাপারে বড় বড় দেশগুলোর সহযোগিতাও আশা করেন।
বিভিন্ন দেশের সঙ্গে নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা চুক্তির বিষয়ে শাহরিয়ার আলম বলেন, নিরাপত্তা সহযোগিতা মানে এই নয় যে আমরা কোনো কৌশলগত জোটে যুক্ত হয়ে গেছি। প্রতিরক্ষা চুক্তি মানে এই নয় যে আমরা কারো সঙ্গে মিলে যুদ্ধ করব।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ যুদ্ধ চায় না এবং যুদ্ধ করবে না। কিন্তু বাংলাদেশের স্বাধীনতায় আঘাত এলে, সার্বভৌমত্বে আঘাত এলে, সেটিকে প্রতিরোধের জন্য আমাদের সরঞ্জাম লাগবে।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ফোর্সেস গোল ২০৩০’-এর অংশ হিসেবে বাংলাদেশের কিছু কৌশলগত পরিকল্পনা আছে। এটি শেষ হওয়ার জন্য আরো কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।’
শাহরিয়ার আলম বলেন, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম কিনছে বাংলাদেশ। কিন্তু বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশ বড় ধরনের কোনো সরঞ্জাম কিনবে না।