সাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে বিদেশি ৫৫ কম্পানিকে আমন্ত্রণ
যুক্তরাষ্ট্রের ১১টি কম্পানি : যুক্তরাষ্ট্রের ১১ কম্পানির মধ্যে রয়েছে শেভরন, কনোকো ফিলিপস, অক্সিডেন্টাল পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (অক্সি), এক্সন মবিল, রেপমল এনার্জি নর্থ আমেরিকা করপোরেশন, মারফি এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রডাকশন কম্পানি, টালিসমান ইউএসএ, সেনোভাস এনার্জি ইনক, সানকোর এনার্জি ইনক, পেট্রোলিয়াম মেক্সিকানোস ও পেট্রোব্রাস।
ইউরোপের ১২ কম্পানি : ইউরোপের ১২ কম্পানির মধ্যে রয়েছে ইকুইনর এএসএ, গাজপ্রম ইন্টারন্যাশনাল, হারবার এনার্জি, শেল, ব্রিটিশ পেট্রোলিয়াম, রোসনেফট, নোভাটেক, টোটাল এনার্জিস, ইনিস্পা, সোনাট্রাচ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন, তাল্লো অয়েল পিএলসি ও কেয়ার্ন এনার্জি পিএলসি।
এশিয়ার ২৭ কম্পানি : এশিয়ার ২৭ কম্পানির মধ্যে রয়েছে সৌদি আরামকো, পেট্রোনাস, কুয়েত অয়েল কম্পানি (কেওসি), আবুধাবি ন্যাশনাল অয়েল কম্পানি, কাতার পেট্রোলিয়াম, পিটিটি এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রডাকশন, পেট্রোভিয়েতনাম, পারটামিনা, অয়েল ইন্ডিয়া, মিত্সুই অয়েল এক্সপ্লোরেশন কম্পানি, ক্রিস এনার্জি, ওএনজিসি বিদেশ, বাহরাইন পেট্রোলিয়াম কোং (বিএপিসিও), দাইয়ু ইন্টারন্যাশনাল করপোরেশন, কোরিয়া ন্যাশনাল অয়েল করপোরেশন (কেএনওসি), চায়না ন্যাশনাল অফশোর অয়েল কম্পানি, সিএনপিসি ইন্টারন্যাশনাল, সিনোপ্যাক, ইদেমিত্সু অয়েল অ্যান্ড গ্যাস কম্পানি, পার্ল এনার্জি, মেডকো এনার্জি গ্লোবাল, প্যাভিলিয়ন এনার্জি, পোসকো ইন্টারন্যাশনাল, জেএক্স নিপ্পন অয়েল অ্যান্ড গ্যাস এক্সপ্লোরেশন করপোরেশন, রিলায়েন্স এনার্জি, ইনপেক্স করপোরেশন ও মুবাডালা এনার্জি।
অস্ট্রেলিয়ার পাঁচ কম্পানি : অস্ট্রেলিয়ার পাঁচ কম্পানির মধ্যে রয়েছে কার্নারভন এনার্জি, সান্তোস, উডসাইড পেট্রোলিয়াম, ক্যালটেক্স অস্ট্রেলিয়া ও বিএইচপি বিলিটন।
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব নূরুল আলম বলেন, ইতিবাচক সাড়া এসেছে। আমদানিনির্ভরতা কমিয়ে নিজস্ব সম্পদ আহরণে জোর দিতে হবে। সমুদ্রের পাশাপাশি স্থলভাগেও বিদেশি কম্পানি দিয়ে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান চালাতে নতুন পিএসসি তৈরি করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার বলেন, কম্পানিগুলো একাধিক ব্লকের দরপত্রে অংশ নিতে পারবে। সংবাদপত্র ও সরকারি বিভিন্ন ওয়েবসাইটে দরপত্র প্রকাশ করা হয়েছে। এ ছাড়া ৫৫টি বিদেশি কম্পানিকে সরাসরি আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে।
চেয়ারম্যান বলেন, নতুন পিএসসিতে বিনিয়োগের খরচ বছরে ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত উদ্ধারের সুযোগ রাখা হয়েছে। আবার বিনিয়োগ তোলার পর পেট্রোবাংলারও লভ্যাংশ বাড়বে। গ্যাসের দাম একই না রেখে ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দামের ১০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে বিশ্ববাজার বুঝে গ্যাসের মূল্য বাড়বে বা কমবে।
দরপত্রে অংশ নিতে হলে নিজ দেশের বাইরে অন্তত একটি কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। দিনে অন্তত ১৫ হাজার ব্যারেল তেল বা ১৫ কোটি ঘনফুট গ্যাস উৎপাদনের অভিজ্ঞতা লাগবে। অগভীর সমুদ্রে সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রডাকশন কম্পানির ১০ শতাংশ মালিকানা সংরক্ষিত থাকবে।
বঙ্গোপসাগরের অগভীর ও গভীর অংশকে মোট ২৬টি ব্লকে ভাগ করা হয়েছে। এর মধ্যে অগভীর অংশে ব্লক ১১টি, আর গভীর সমুদ্রে ব্লক ১৫টি। সমুদ্রে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে সর্বশেষ দরপত্র ডাকা হয়েছিল ২০১৬ সালে। ২০১২ সালে ভারত এবং ২০১৪ সালে মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা বিরোধ নিষ্পত্তি হয়। ২০০৮ সালে ডাকা দরপত্রের মাধ্যমে ২০১০ সালে গভীর সমুদ্রে দুটি ব্লকের কাজ নেয় মার্কিন কম্পানি কনোকো ফিলিপস। তারা দ্বিমাত্রিক জরিপ চালালেও পরে গ্যাসের দাম বাড়ানোর দাবি পূরণ না হওয়ায় কাজ ছেড়ে চলে যায়। একইভাবে চুক্তির পর চলে যায় অস্ট্রেলিয়ার সান্তোস ও দক্ষিণ কোরিয়ার পস্কো দাইয়ু। কোরীয় কম্পানিটি কাজ করেছিল গভীর সমুদ্রের ১২ নম্বর ব্লকে। বর্তমানে একমাত্র বিদেশি কম্পানি হিসেবে অগভীর সমুদ্রের দুটি ব্লকে অনুসন্ধান চালাচ্ছে ভারতের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ওএনজিসি বিদেশ লিমিটেড (ওভিএল)। এবার এ দুটি বাদ দিয়ে বাকি ২৪টি ব্লকে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে।