বুধবার (২০ মার্চ) দুপুরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে গাজীপুর মহানগরীর গাছা এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করে র‍্যাব-১।

গ্রেফতারকৃতরা হলো,মোঃ আস্তাকুল আমিন আনাম (৩০), মোঃ তৌফিক (২৪), মোঃ ইমরান হোসেন (১৯), মোঃ জুনায়েদ (২১), মোঃ রনি আহমেদ (২১), সালাউদ্দিন সরকার (২০), মোঃ জিসান হোসেন (২১), মোঃ রায়হান (১৮), মোঃ আতিক হাসান (১৯), আজিজুল হাকিম (২৩), সম্পা আক্তার (২৪),মোছাঃ বিউটি খাতুন (২১), বর্ষা খাতুন (১৯) ও তাহসিন আক্তার মীম (২০)।

র‍্যাব-১ জানায় গত (১৯ মার্চ) বেস্ট এ্যাকশন সিকিউরিটি সার্ভিস লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠানের অনলাইনে চাকুরীর বিজ্ঞপ্তি দেখতে পেয়ে সাকিব হোসেন ও তার পূর্ব পরিচিত ফারজানা আক্তার পাখি উভয়েই চাকুরীর প্রত্যাশায় উক্ত কোম্পানীতে আসলে কোম্পানীর লোকেরা তাদেরকে আটক করে শারিরীকভাবে নির্যাতন করে এবং ভিকটিমের পরিবারের নিকট ফোন দিয়ে মুক্তিপন বাবদ ৫ লক্ষ টাকা দাবি করে।

এই বিষয়ে একই তারিখে ভুক্তভোগীর বাবা ছেলেকে উদ্ধারের জন্য র‌্যাব-১, সিপিএসসি, গাজীপুর এর নিকট আইনি সহায়তা কামনা করেন। পরে র‌্যাব-১, সিপিএসসি, গাজীপুর উক্ত প্রতারক চক্রকে গ্রেফতারের লক্ষে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। পরে র‍্যাব-১ এর সদস্যরা

বুধবার ২০ মার্চ গাজীপুর মহানগরীর গাছা এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রতারক চক্রের মূলহোতাসহ ১৪ জনকে গ্রেফতার করে।

র‍্যাব- আরো জানায় এসময় ভুক্তভোগী সাকিব ও ফারজানা ছাড়াও ২৫ জন সহ সর্বমোট ২৭ জন ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা বিভিন্ন প্রতারণার সাথে তাদের সম্পৃক্ততার বিষয়ে তথ্য প্রদান করে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, তারা একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র। দীর্ঘদিন যাবৎ এই চক্রটি বিভিন্ন সময়ে বেস্ট এ্যাকশন সিকিউরিটি সার্ভিস লিমিটেড নামক প্রতিষ্ঠান এবং তাদের ব্যবহৃত মোবাইল এর মাধ্যমে অনলাইনে ভুয়া চাকুরীর বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণার মাধ্যমে বিপুল অংকের অর্থ হাতিয়ে নেয়। চক্রটি প্রায় ৩ মাস যাবৎ এই প্রতারণা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। চক্রটির মোট সদস্য সংখ্যা ২০ জন এবং চক্রটির মূলহোতা গ্রেফতারকৃত ৫ জন। চক্রের অন্যান্য সদস্যরা বিভিন্ন এলাকার চাকুরী প্রত্যাশীদের অর্থের বিনিময়ে চাকুরী দেয়ার কথা বলে এই চক্রের মূলহোতা মোঃ আস্তাকুল আমিন আনাম, মোঃ তৌফিক, ইমরান হোসেন,জুনায়েদ এবং  মোঃ রনি আহমেদ দের নিকট নিয়ে আসত।

গ্রেফতারকৃত ১৪ জন চাকুরী প্রত্যাশীদের বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে এমনকি আটক করে রেখে তাদের পরিবারের নিকট থেকে বিপুল অংকের নগদ অর্থ হাতিয়ে নিত। তারা প্রতারণার মাধ্যমে চাকুরী দেয়ার নামে অসংখ্য ব্যক্তির নিকট হতে প্রতারণার মাধ্যমে প্রায় কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এছাড়াও চক্রটির স্থায়ীভাবে কোন অফিস ছিল না। তারা গাছাধীন রশিদ মার্কেট, হারিকেন রোড এলাকায় ভাড়া বাসাকে তারা অস্থায়ী অফিস হিসেবে ব্যবহার করে আসছিল। আত্মগোপনের জন্য তারা প্রায়শই নিজেদের মোবাইল নম্বর বন্ধ রেখে নিকট আত্মীয় ও বন্ধু-বান্ধবের বাসায় অবস্থান করত বলে জানিয়েছে র‍্যাব-১।

র‌্যাব-১ এর সহকারী পুলশি সুপার ও সহকারী পরিচালক (মিডিয়া অফিসার) অধিনায়কের পক্ষে মোঃ মাহফুজুর রহমান জানান, আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায় যে, ভুক্তভোগী সাকিব ও ফারজানা আক্তার উক্ত কোম্পানীতে চাকুরীর জন্য আসলে তারা তাদেরকে প্রথমে আটকে রেখে গাজীপুরের একটি অজ্ঞাত বাড়ীতে নিয়ে যায় এবং তাদের  পরিবারের নিকট ফোন করে ৫ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন র‍্যাবের ওই কর্মকর্তা।