বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ১০:২৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ডিসপ্লে-তে ভেসে উঠেলো ‘ছাত্রলীগ আবার ভয়ংকর রূপে ফিরবে আদম ব্যবসায়ী শাহীন ও মশিয়ারের বিরুদ্ধে প্রতারণা মামলা সৌদি আরবে অবৈধ অভিবাসী! কুড়িগ্রামে এম আর বি ইকো ব্রিকসকে পাঁচ লক্ষ টাকা জরিমানা শার্শা সরকারি টেকনিকেল স্কুল এন্ড কলেজ ২ দিনব্যাপি বিজ্ঞান মেলা নারীদের স্বাস্থ্য সচেতনতা ও টেকসই উন্নয়নে টিম চিহ্নের ব্যতিক্রমী উদ্যোগ কোনাবাড়ীতে টিনশেড বাসায় অগ্নিকাণ্ড,৫ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি ভারত যাওয়ার পথে ইডেন ছাত্রলীগ নেত্রীসহ গ্রেফতার ২ শিক্ষককে মারধোর,সেই যুবদল নেতা দল থেকে বহিষ্কার গাজীপুরে অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্নে দিনব্যাপী দুদকের অভিযান গাজীপুরে স্কুল শিক্ষককে মারধোরের অভিযোগ যুবদল নেতার বিরুদ্ধে

১০, ৫০ ও ১শ’ টাকার ব্যাংক হিসাবে রেকর্ড

রিপোর্টারের নাম : / ১৩৩ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : শুক্রবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২২

অল্প টাকায় ব্যাংক হিসাব খোলার সুযোগ গ্রহণ করছে কৃষক-শ্রমিক ও শিক্ষার্থীরা। ফলে ১০ টাকা, ৫০ টাকা ও ১০০ টাকার ব্যাংক হিসাবে রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। এতে আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল বাংলাদেশ। বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, চলতি বছরের জুন পর্যন্ত ১০, ৫০ ও ১০০ টাকার অ্যাকাউন্ট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে দুই কোটি ৮৫ লাখ ১৮ হাজার ২৬০টি। এসব হিসাবে জমাকৃত অর্থের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে পাঁচ হাজার ৮১৫ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। মূলত নিম্ন আয়ের মানুষ ও ১৮ বছরের নিচের শিক্ষার্থীরা এসব হিসাব খুলেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক ২০১০ সালে কৃষকদের জন্য ১০ টাকায় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার সিদ্ধান্ত নেয়। এটি সাধারণ মানুষকে আর্থিক অন্তর্ভুক্তির মধ্যে নিয়ে আসার গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত কৃষকদের ১০ টাকার অ্যাকাউন্ট সংখ্যা ৯৮ লাখ ২০ হাজার ৬৯৯টি। কৃষকদের অ্যাকাউন্টে জমাকৃত অর্থের পরিমাণ ৫৬৯ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। টাকা জমার পরিমাণ ২০২১ সাল থেকে এ বছর ২১.৫৪ শতাংশ বেশি।

দারিদ্র্য বিমোচন বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি অন্যতম উদ্দেশ্য। এজন্য অতি দরিদ্র মানুষকেও ১০ টাকার হিসাব খোলার নির্দেশ দেয় ব্যাংকগুলোকে। এখানেও সফলতা এসেছে। ৩২ লাখ ৬১ হাজার ৪০০ অতি দরিদ্র মানুষের ব্যাংক হিসাব রয়েছে। এসব অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে করোনা মহামারির সময় সরকারের আর্থিক সহায়তা বিতরণ করা হয়েছে।

তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিকদের জন্য ১০০ টাকায় ব্যাংক হিসাব খোলার নির্দেশ দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তৈরি পোশাক শ্রমিকদের হিসাব খোলার প্রবণতা আগের বছরের চেয়ে ৩১.৭১ শতাংশ বেড়েছে। পাশাপাশি ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবা গ্রহণের আগ্রহও বেড়েছে।

বাংলাদেশে স্কুল ব্যাংকিংয়ে ব্যাপক সাফল্য এসেছে। মূলত ১৮ বছরের নিচের শিক্ষার্থীরা এসব অ্যাকাউন্ট খুলেছে। আগের বছরের চেয়ে ৮.১১ শতাংশ বেড়েছে শিক্ষার্থীদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট।

অল্প টাকার এসব অ্যাকাউন্ট দিয়ে প্রবাসীদের রেমিট্যান্সও আসছে। যাদের আত্মীয়-স্বজন বিদেশে অবস্থান করছে তারা এখন হুন্ডির মাধ্যমে টাকা না পাঠিয়ে ব্যাংকিং চ্যানেলে টাকা পাঠাচ্ছে। এপ্রিল থেকে মে পর্যন্ত ৫২৯ কোটি টাকা রেমিট্যান্স এসেছে এই স্বল্প টাকার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে।

এসব অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে সরকারের সামাজিক সুরক্ষা খাতের অর্থ সরাসরি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে পাচ্ছে। এছাড়া পেনশন সুবিধাও গ্রহণ করছে অনেক হিসাবধারী। সরকারের সামাজিক সুরক্ষা খাতের সুবিধা নিতে শুধু জাতীয় পরিচয়পত্র দেখালেই ব্যাংক হিসাব খোলার নির্দেশ রয়েছে। বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, দুস্থ ও অসহায় রোগীদের চিকিৎসা সহায়তার মতো বিভিন্ন সুবিধা পাচ্ছে ১০ টাকার ব্যাংক হিসাবে।

পথশিশু বা অল্পবয়সি শ্রমিকদের অর্থ জমানোর মানসিকতা তৈরির জন্য ব্যাংক হিসাব খোলার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। যেসব পথশিশুর বাবা-মা বা অভিভাবক নেই, তাদের কয়েকটি বেসরকারি এনজিওর মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট খোলার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এনজিওগুলো তাদের অভিভাবক হিসেবে কাজ করে। দরিদ্র শিশুদের মধ্যে যাদের বয়স ১৮ বছরের নিচে তাদের অ্যাকাউন্ট খুলতে কোনো টাকার প্রয়োজন হয় না। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ডক্টর আতিউর রহমান যায়যায়দিনকে বলেন, ‘নিম্ন আয়ের মানুষকে

আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতে নিয়ে আসার জন্য আমি সর্বপ্রথম ১০ টাকায় কৃষকদের অ্যাকাউন্ট খোলার উদ্যোগ নিয়েছিলাম। এরপর স্কুল শিক্ষার্থী, পথশিশু, পরিচ্ছন্ন কর্মী ও পোশাক শ্রমিকসহ সব ধরনের নিম্ন আয়ের মানুষকে অন্তর্ভুক্ত করার সুফল মিলতে শুরু করেছে। আমি মনে করি, আর্থিক অন্তর্ভুক্তি মানেই আর্থিক স্থিতিশীলতা। এ বিষয়টি এখন প্রমাণিত। বৈশ্বিক মহামারি বা আর্থিক সংকটের মধ্যেও বাংলাদেশের মানুষ এখন অনেকটাই স্বস্তিতে আছে। সবার সামান্য হলেও টাকা ব্যাংক হিসাবে জমা আছে। এই কারণে অভ্যন্তরীণ সংকট দেখা দেয়নি।’

ডক্টর আতিউর রহমান মনে করেন, যদি মোবাইল ব্যাংকিংসহ ধরা হয় তাহলে সেটার পরিমাণ অনেক বেশি। এক কথায় বলতে গেলে, প্রতিটি মানুষই এখন ব্যাংকিং সেবার মধ্যে আছে। আগে একজন পোশাক শ্রমিক বা রিকশাওয়ালা বাড়িতে না গেলে টাকা পাঠাতে পারত না বা ডাকে অন্য উপায়ে পাঠালে সময় লাগত। এখন সেই টাকা মুহূর্তের মধ্যেই বাড়িতে পাঠিয়ে দিচ্ছে। এর ফলে সবাই এক ধরনের স্বস্তিতে আছে।

এ ছাড়াও বর্তমানে কৃষি ঋণ বা কৃষকদের ভর্তুকি যাচ্ছে এসব ব্যাংক হিসাবে। ফলে দুর্নীতি বা সময়ের অপচয় কমছে। বাংলাদেশ বর্তমানে আর্থিক অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে বিশ্বের একটি উদাহরণ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর

এক ক্লিকে বিভাগের খবর