রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫, ০৯:২৭ অপরাহ্ন

১৮ বছর পর শরীয়তপুর-ঢাকা বাস সার্ভিস চালু

রিপোর্টারের নাম : / ২৫১ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : সোমবার, ২৭ জুন, ২০২২

শরীয়তপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে ১৮ বছর পর শরীয়তপুর-ঢাকা বাস সার্ভিস চালু হলো। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর শরীয়তপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে রোববার সকাল ৮টা ৩০ মিনিটের সময় শরীয়তপুর সুপার সার্ভিসের ১৫টি গাড়ি ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। এরপর আর কোনো বাস ছাড়েনি।

তবে পর্যাপ্ত গাড়ি না পেয়ে আগের মতোই লঞ্চ, ফেরি, সি-বোট দিয়ে পার হয়ে ঢাকা যেতে হয়েছে যাত্রী সাধারণের। শরীয়তপুর সুপার সার্ভিস পরিবহনের সভাপতি ফারুক আহম্মেদ তালুকদার বলেন, আমরা আরও গাড়ি নামাব। তখন আর যাত্রী সাধারণের কোনো সমস্যা হবে না।

শরীয়তপুর সুপার সার্ভিস পরিবহনের লাইন সেক্রেটারি বিল্লাল তালুকদার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০০৪ সালে ঢাকার সঙ্গে সরাসরি বাস চলাচল বন্ধ হয় শরীয়তপুরের। দীর্ঘদিনের ভোগান্তি শেষে রোববার শরীয়তপুরের যাত্রীরা বাসে করে পদ্মা সেতু পার হয়ে ঢাকায় গেলেন।

প্রায় ১৮ বছর পর রোববার সকাল সাড়ে ৮টায় শরীয়তপুর পৌর বাস টার্মিনাল থেকে ঢাকার সঙ্গে সরাসরি বাস চলাচল শুরু হয়েছে। পদ্মা সেতু পেরিয়ে প্রথম বাসটি ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে পৌঁছায় বেলা সাড়ে ১১টার দিকে। দীর্ঘ অপেক্ষার পর পদ্মা সেতু পার হতে পেরে উৎফুল্ল চালক ও যাত্রীরা।

পদ্মা সেতু চালু হওয়ার শরীয়তপুর বাস মালিক গ্রুপের পক্ষ থেকে সরাসরি শরীয়তপুর থেকে ঢাকা রুটে শরীয়তপুর সুপার সার্ভিস নামে উন্নতমানের বিলাসবহুল ১৫টি গাড়ি চালু করা হয়। রোববার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে পর্যায়ক্রমে বাসগুলো রাজধানীর উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। সেখানে যাত্রীপ্রতি ২৫০ টাকা হারে ভাড়া নেওয়া হয়।

এদিকে রোববার সকাল থেকেই শরীয়তপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় ছিল। মাত্র ১৫টি গাড়ি ছেড়ে যাওয়ায় অনেক যাত্রীকে আগের মতো লঞ্চ, ট্রলার ও সি-বোটে পার হয়ে যেতে হয়েছে।

শরীয়তপুর সুপার সার্ভিসের প্রথম বাসের উদ্বোধন করেন শরীয়তপুর সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও শরীয়তপুর বাস মালিক গ্রুপের সভাপতি ফারুক আহাম্মেদ তালুকদার।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- জাজিরা পৌরসভার মেয়র মো. ইদ্রিস মাদবর, শরীয়তপুর পৌরসভার প্যানেল মেয়র ও বাস মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক বাচ্চু বেপারী, শরীয়তপুর বাস শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আলী আজম মাদবর, সাবেক সাধারণ সম্পাদক এলিম পাহাড় প্রমুখ।

ফেরিতে পদ্মা নদী পার হয়ে আগে শরীয়তপুর থেকে ঢাকায় বাস চলাচল করত। কিন্তু ফেরিতে অতিরিক্ত সময় লাগা, যাত্রীদের দুর্ভোগসহ নানা কারণে বাস মালিকেরা লোকসানের মুখে ২০০৪ সালে ঢাকার সঙ্গে সরাসরি বাস চলাচল বন্ধ করে দেন। দীর্ঘদিনের ভোগান্তি শেষে আজ শরীয়তপুরের যাত্রীরা বাসে করে পদ্মা সেতু পার হয়ে ঢাকায় গেলেন।

শরীয়তপুর সদর উপজেলার পালং ইউনিয়নের বাসিন্দা আবুর হোসেন ও আতাউর রহমান বলেন, আমাদের ঢাকায় যেতে হলে নৌ-পথে পদ্মা নদী পাড়ি দিয়ে দুই দফা বাস পাল্টাতে হতো। আজ বাসের প্রথম যাত্রী হিসেবে পদ্মা পাড়ি দিয়ে আমি উচ্ছ্বসিত, আনন্দিত। পদ্মা নদী পার হতে প্রতিবারই ভয়ে আর আতঙ্কে কুঁকড়ে যেতাম। আজ সেই পদ্মা পাড়ি দেওয়ার সময় মনে আনন্দ ছিল, স্বস্তি ছিল। বারবার জানালা দিয়ে উঁকি দিয়ে নদীর রূপ দেখার চেষ্টা করেছি। হাত নেড়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছি।

শরীয়তপুর সুপার সার্ভিস পরিবহনের চালক মতি বলেন, শরীয়তপুরের তিনিই প্রথম চালক, যিনি বাস চালিয়ে পদ্মা সেতু পাড়ি দিয়েছেন। এটা এক অন্যরকম অনুভূতি, যা বলে বোঝাতে পারব না। আমার ২০ বছরের গাড়ি চালানোর জীবনে এমন আনন্দময় মুহূর্ত আসেনি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর

এক ক্লিকে বিভাগের খবর