এখন থাকি হামরা রিক্সা চালে খামো! ভিক্ষা আর করবার নই!
এখন থাকি হামরা রিক্সা চালে খামো। আর ভিক্ষা করবার নই বাহে। কামাই(কাজ) করার বুদ্ধি না পেয়া ম্যালা(অনেক) দিন ভিক্ষা করেছি। মানুষ ভিক্ষা দিবার চায় না, গালি দেয়। রিক্সা চালালে কেউ গালি দিবে না।
শনিবার(৩০ এপ্রিল) বিকেলে সরকারী ভাবে বিনামুল্যে রিক্সা উপহার পেয়ে বৈধ কর্মসংস্থানের সুযোগ পেয়ে এমন ভাবে কথাগুলো বলেন ভিক্ষুক তোফাজ উদ্দিন(৭০)।
জানা গেছে, ভিক্ষুক মুক্ত বাংলাদেশ গড়তে সমাজকল্যান পরিষদের মাধ্যমে ভিক্ষুকদের পুনবাসনের উদ্যোগ নেয় সরকার। সেই লক্ষ্যে ভিক্ষুকদের তালিকা প্রনয়ন করে সমাজসেবা অধিদফতর। এরই ধারবাহিকতায় তিস্তার বাম তীরের জেলা লালমনিরহাটের প্রতিটি উপজেলায় দুইটি করে ইউনিয়নকে ভিক্ষুকমুক্ত করার প্রকল্প নেয়া হয়।
এরই অংশ হিসেবে আদিতমারী উপজেলার তিস্তার তীরবর্তি মহিষখোচা ইউনিয়নকে ভিক্ষুকমুক্ত করতে প্রথম পর্যয়ে ১২জন ভিক্ষুককে স্বালম্বী করতে বরাদ্ধের ৬ লাখ টাকায় ১২টি ব্যাটারী চালিত রিক্সা ক্রয় করা হয়। এসব রিক্সা ১২জন ভিক্ষুকের মাঝে শনিবার(৩০ এপ্রিল) বিকেলে আনুষ্ঠানিক ভাবে বিতরন করেন প্রধান অতিথি সমাজকল্যান মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি। এ সময় প্রান্তিক জনগোষ্ঠির জীবনমান উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পের সুফলভোগীদের মাঝে অনুদানের চেকও বিতরন করেন মন্ত্রী।
ভিক্ষাবৃত্তি ছাড়তে বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্য প্যাডেলহীন ব্যাটারী চালিত রিক্সা পেয়ে খুব খুশি ভিক্ষুকরা। এদের একজন তোফাজ উদ্দিন বলেন, কাম না পেয়ে পেটের দায়ে ভিক্ষা করেছি। এখন রিক্সা চালে খামো। কেউ আর গালি দিবে না। হামরা আর কোন দিন ভিক্ষা করবার নই বাহে।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফরের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, আদিতমারী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুক ইমরুল কায়েস, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) জি আর সরোয়ার, লালমনিরহাট সমাজসেবা অধিদফতরের উপ পরিচালক আব্দুল মতিন, উপজেলা আওয়ামীলীলীগের সাধারন সম্পাদক রফিকুল আলম, উপজেলা সমাজসেবা অফিসার রওশন আলী মন্ডল, থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মোক্তারুল ইসলাম প্রমুখ।