তিস্তার পানির বিপদসীমার ১৭ সেঃমিঃ উপর দিয়ে প্রবাহিত নিন্মাঞ্চল প্লাবিত!
![](https://kolomerbatra.com/wp-content/uploads/2023/07/received_985771529440907-700x390.jpeg)
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও ভারী বর্ষণে তিস্তা নদীতে পানি প্রবাহ আবারও বেড়ে গেছে। এজন্য দেশের বৃহত্তর সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারেজের সব কটি জলকপাট খুলে দেওয়া হয়েছে। পানি নিয়ন্ত্রণে তিস্তা ব্যারেজের ৪৪ টি জলকপাট খুলে দেওয়া হয়েছে। এ ভাবে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আতংকিত হয়ে পড়েছে তিস্তা পাড়ের মানুষ। ফলে ৫ টি উপজেলার তিস্তা তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে বন্যা দেখা দিয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) সকাল ৬ টা থেকে দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজে বিপদ সীমার ১৭ সেঃ মিঃ উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এতে করে নদীপারের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে পানি কিছুটা কমলেও দেখা দিয়েছে জনগনের দুর্ভোগ। নতুন করে বন্যায় তলিয়ে গেছে বিভিন্ন ফসল পানি বন্ধি হয়েছে কয়েকশত পরিবার।
দুপুর ৩ টায় তিস্তা নদীর ডালিয়া পয়েন্ট পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ডালিয়া পয়েন্ট – পানির সমতল ৫২.৩২ মিটার (বিপদসীমা = ৫২.১৫ মিটার) যা বিপদসীমার ১৭ সে.মি উপরে। কাউনিয়া পয়েন্ট -পানির সমতল ২৮.২২ মিটার, (বিপদসীমা =২৮.৭৫ মিটার) যা বিপদসীমার ৫৩ সেঃমিঃ নিচে। ধরলা নদীর পানির পরিমাণ রেকর্ড করা হয় শিমুলবাড়ি পয়েন্ট -পানি সমতল ৩০.৮০ মিটার (বিপদসীমা = ৩১.০৯ মিটার) যা বিপদসীমার ২৯ সেঃমিঃ নিচে। পাটগ্রাম পয়েন্ট – পানি সমতল ৫৯.০০ মিটার ,
(বিপদসীমা = ৬০.৩৫ মিটার) যা বিপদসীমার ১৩৫ সেঃমি নিচে।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদ্দৌলা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মঙ্গলবার শেষ রাত থেকে আবারও বাড়তে শুরু করে পানি। এতে হাতীবান্ধাস্থ তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে বিপৎসীমার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়। ফলে জেলার পাঁচ উপজেলার তিস্তার চরাঞ্চলে ও তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে ধীরে ধীরে পানি প্রবেশ করতে শুরু করে। পানি বাড়ায় তিস্তা নদীর বুক জুড়ে থাকা ফসলি জমি পানিতে ডুবে যাওয়ার কারণে মরিচ, পেঁয়াজ, বাদাম, বীজতলা, ধানসহ বিভিন্ন ফসলের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে।
জেলার পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম, হাতীবান্ধার সানিয়াজান, গড্ডিমারী, সিন্দুর্না, পাটিকা পাড়া, সিংগিমারী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, কাকিনা, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, পলাশী, সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, রাজপুর, গোকুন্ডা ইউনিয়নে বেশ কিছু এলাকায় পানি বন্ধি হয়ে পড়েছেন কয়েকশত পরিবার।
এদিকে ধরলা নদীর পানিও বাড়া-কমার মধ্যে আছে বলে জানিয়েছেন লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শুনীল কুমার। বর্ষা মৌসুমে জুন মাসের শুরু থেকে তিস্তার পানি বাড়া-কমার মধ্যে আছে। প্রথম দফা স্বল্পমাত্রার বন্যার পর পানির গতি অনেকটা স্বাভাবিক থাকলেও গত মঙ্গলবার ভোর থেকে বাড়তে শুরু করে পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে। তবে বিকেল হতেই নেমে যায়।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্যাহ এবিষয়ে বলেন, তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জরুরি প্রয়োজনসহ যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করার প্রস্তুতি নেওয়া রয়েছে। আমরা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও ইউএনওদের মাধ্যমে সব সময় পরিস্থিতির খোঁজখবর রাখছি।