শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ১১:৩৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
ভালুকায় শ্রমিক দলের নেতা কর্তৃক শিক্ষকের বাড়িতে হামলা, প্রতিবাদে সাংবাদিক সম্মেলন সীতাকুণ্ডের ঘোড়ামরা যুব সমাজের উদ্দ্যোগে ১৫০ পরিবারের মাঝে ভর্তুকি মূল্যে পণ্য বিক্রয় সুন্দরগঞ্জে গণ ইফতার মাহফিল ও আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে জয়পুরহাটে বিএনপির দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত শিশু আসিয়া হত্যাকাণ্ডে জড়িত সকলের বিচারের দাবিতে গাজীপুরে বিক্ষোভ সমাবেশ কোনাবাড়ীতে মহানবীকে নিয়ে কটুক্তি,যুবককে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে দিলো জনতা কোনাবাড়ীতে মুদি দোকানের গোডাউনে অগ্নিকাণ্ড নাটোরে বিএসটিআইয়ের অভিযানে সেমাই কারখানাকে জরিমানা ও মালামাল জব্দ যশোরে প্রশিক্ষণ বিমান দুর্ঘটনায়, দুই পাইলট অক্ষত নাগেশ্বরীতে কমিউনিটি নেতা ও যুব ফোরামের সদস্যদের সাথে অরিয়েন্টেশন সভা অনুষ্ঠিত

দেশের শান্তি বজায় রাখতে সরকার বদ্ধপরিকর: প্রধানমন্ত্রী

রিপোর্টারের নাম : / ১৩৭ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : শুক্রবার, ২ ডিসেম্বর, ২০২২

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বর্তমান সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশের সর্বত্র শান্তি বজায় রাখতে বদ্ধপরিকর। আমি আশা করি, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা পার্বত্য শান্তিচুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়ন করতে এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়নের মাধ্যমে জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা, দারিদ্র্যমুক্ত সুখী-সমৃদ্ধ ও শান্তিপূর্ণ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সক্ষম হব, ইনশাআল্লাহ।’

আজ শুক্রবার পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তির ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে গতকাল বৃহস্পতিবার দেওয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। খবর বাসসের।

শেখ হাসিনা বলেন, ’৭৫-পরবর্তী অগণতান্ত্রিক সরকারগুলো পার্বত্য অঞ্চলের সামাজিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার পরিবর্তে নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য বাঙালি-পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর মধ্যে পরিকল্পিতভাবে বিভেদ সৃষ্টি করে। খুন, অত্যাচার-অবিচার, ভূমি জবরদখল এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপব্যবহার এ অঞ্চলকে আরও অস্থিতিশীল করে তোলে। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারও ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে ঐতিহাসিক এই শান্তিচুক্তির চরম বিরোধিতা করে পার্বত্য অঞ্চলকে পুনরায় অস্থিতিশীল করতে চেয়েছিল। তাদের হীন উদ্দেশ্য সফল হয়নি।

তিনি বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের দীর্ঘদিনের সংঘাতময় পরিস্থিতি নিরসনের লক্ষ্যে ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর কোনো তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতা ছাড়াই আওয়ামী লীগ সরকার ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির মধ্যে এই ঐতিহাসিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। বিশ্ব ইতিহাসে এটি একটি বিরল ঘটনা।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তির মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের দীর্ঘদিনের জাতিগত হানাহানি বন্ধ হয়। অনগ্রসর ও অনুন্নত পার্বত্য অঞ্চলে প্রতিষ্ঠিত হয় শান্তি ও উন্নয়নের ধারা। ইউনেস্কো শান্তি পুরস্কার অর্জন এই চুক্তির আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির স্মারক।’

তিনি বলেন, ‘সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সর্বপ্রথম আধুনিকতার ছোঁয়াবিবর্জিত পশ্চাৎপদ পার্বত্য জনগোষ্ঠীকে উন্নয়নের মূলধারায় ফিরিয়ে আনেন এবং পার্বত্যবাসীর জীবনমান উন্নয়নে নানামুখী কর্মসূচি গ্রহণ করেন। আঞ্চলিক উন্নয়নের পাশাপাশি শিক্ষাক্ষেত্রে পাহাড়ি ছাত্রছাত্রীদের সমসুযোগ প্রদানের ব্যবস্থা নেন। এ লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ১৯৭৩ সালের জুন মাসে কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও কারিগরি প্রতিষ্ঠানসমূহে পাহাড়ি ছাত্রছাত্রীদের জন্য সুনির্দিষ্ট আসন সংরক্ষণের জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন।’

পার্বত্য জেলাগুলোর নৈসর্গিক সৌন্দর্য সংরক্ষণ ও পর্যটন শিল্পের প্রসারে নানামুখী উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের সময়োচিত পদক্ষেপের ফলে আজ পার্বত্য জেলাগুলো পিছিয়ে পড়া কোনো জনপদ নয়। দেশের সার্বিক উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় এ অঞ্চলের জনগণ সমঅংশীদার।’

তিনি বলেন, ‘২০০৯ সাল থেকে বাংলাদেশের জনগণের বিপুল সমর্থন নিয়ে ধারাবাহিকভাবে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেয়ে আওয়ামী লীগ সরকার শান্তিচুক্তির আলোকে পার্বত্য অঞ্চলের সার্বিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের উন্নয়নে পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড ও তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ গঠন করা হয়েছে। এ অঞ্চলের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ, যোগাযোগ, অবকাঠামো, মোবাইল নেটওয়ার্কসহ সব খাতের উন্নয়নে ব্যাপক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।’

তিনি বলেন, আমরা ইতোমধ্যে পার্বত্য অঞ্চলে ৪২টি সেতু উদ্বোধন করেছি। আমরা পার্বত্য অঞ্চলের সকল বেইলি ব্রিজ অপসারণ করে অচিরেই নতুন সেতু নির্মাণ করে দেব। রাঙামাটিতে একটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং একটি মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। ভূমিিষয়ক বিরোধ নিষ্পত্তির লক্ষ্যে গঠিত ভূমি কমিশন কর্তৃক বিভিন্ন কার্যক্রম চলমান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড ও পার্বত্য জেলা পরিষদগুলোর মাধ্যমে তিন পার্বত্য জেলায় উন্নয়ন কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। পার্বত্য এলাকার যেসব এলাকায় বিদ্যুৎ পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না, সেসব এলাকায় সোলার প্যানেল স্থাপনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহের কাজ অব্যাহত রয়েছে। পাড়াকেন্দ্রের মাধ্যমে এ অঞ্চলের নারী ও শিশুদের মৌলিক স্বাস্থ্যসেবা ও শিশুদের প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা প্রদানের জন্য টেকসই সামাজিক সেবা প্রদান করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, পার্বত্যবাসীর সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সংরক্ষণ এবং গবেষণাসহ তাদের সঙ্গে সমতলভূমির জনগণের সেতুবন্ধ স্থাপনের লক্ষ্যে ঢাকার বেইলি রোডে প্রায় দুই একর জমির ওপর একটি শৈল্পিক ও নান্দনিক কমপ্লেক্স ‘শেখ হাসিনা পার্বত্য চট্টগ্রাম ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্র’ নির্মাণ করা হয়েছে।

পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তির ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে শেখ হাসিনা পার্বত্য জেলাগুলোর জনগণ ও দেশবাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে শান্তি ও সমৃদ্ধির লক্ষ্যে সবার সহযোগিতা কামনা করেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
এক ক্লিকে বিভাগের খবর