শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫, ০৮:৫৮ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
কোনাবাড়ীতে মহানবীকে নিয়ে কটুক্তি,যুবককে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে দিলো জনতা কোনাবাড়ীতে মুদি দোকানের গোডাউনে অগ্নিকাণ্ড নাটোরে বিএসটিআইয়ের অভিযানে সেমাই কারখানাকে জরিমানা ও মালামাল জব্দ যশোরে প্রশিক্ষণ বিমান দুর্ঘটনায়, দুই পাইলট অক্ষত নাগেশ্বরীতে কমিউনিটি নেতা ও যুব ফোরামের সদস্যদের সাথে অরিয়েন্টেশন সভা অনুষ্ঠিত কোম্পানীগঞ্জে চরহাজারী ইউনিয়ন ছাত্রদলের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত লালমনিরহাটে ২ লক্ষ শিশুকে ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে! জাতীয় ভিটামিন এ-প্লাস ক্যাম্পেইন উপলক্ষে ঠাকুরগাঁওয়ে সাংবাদিকদের নিয়ে ওরিয়েন্টেশন উল্লাপাড়ায় নারী প্রতিনিধিদের নিয়ে মতবিনিময় সভা ভাঙ্গুড়ায় ট্রেনে কাটা পড়ে যুবকের মৃত্যু

লালমনিরহাটে ক্লিনিকের-সিএইচসিপি-বিরুদ্ধে সরকারি ঔষধ বিক্রি ও মাদকসেবনের অভিযোগ!

আশরাফুল হক, লালমনিরহাট: / ১৬৯ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : বুধবার, ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

লালমনিরহাটের প্রত্যন্ত পল্লী এলাকার ছেকনাপাড়া কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি শরিফুল ইসলাম সুজনের বিরুদ্ধে অফিস ফাঁকি ও মাসের পর মাস ক্লিনিক বন্ধ এবং সরকারের বরাদ্দকৃত ২৭ প্রকার ওষুধ সহ সেবা বঞ্চিত স্থানীয় মানুষ। হতদরিদ্রদের সরকারি ওষুধগুলো বিক্রি করে সিএইচসিপি’র মাদক সেবনের অভিযোগ উঠেছে।

ছেকনাপাড়া কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি শরিফুল ইসলাম সুজন জেলার আদিতমারী উপজেলার খাতাপাড়া মাজার এলাকার গিয়াস উদ্দিনের পুত্র।

জানা গেছে, ২০০১ সালে সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের ছেকনাপাড়া এলাকার হতদরিদ্র মানুষের স্বাস্থ্যসেবা’র জন্য ছেকনাপাড়া কমিউনিটি ক্লিনিকের কার্যক্রম শুরু হয়। এ ক্লিনিকে একজন সিএইচসিপি শরিফুল ইসলাম সুজন, স্বাস্থ্য সহকারী খাইরুল ইসলাম তোকদার ও এফ-ডাব্লু পদে সিন্দু রাণী যোগদান করেন। ক্লিনিকটি সপ্তাহে ৬দিন, সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত একজন সিএইচসিপি, একজন স্বাস্থ্য সহকারী ও একজন এফ-ডাব্লু দায়িত্ব পালনের কথা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। নিয়মিত কর্তব্যে অবহেলা, মাসের পর মাস ক্লিনিক বন্ধ। মাসে ২/৩ দিন ক্লিনিক খোলা রাখলেও তিনজনই ক্লিনিক ছাড়েন নির্ধারিত সময়ের আগে। ফলে সরকারের কাঙ্খিত গ্রামীণ স্বাস্থ্যসেবায় উন্নয়নের ছোয়া লাগেনি ওই এলাকায়।

লালমনিরহাট সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা সুত্র জানান, সরকার ২ মাসের জন্য কমিউনিটি ক্লিনিকে ২৭ প্রকার ঔষধ দেওয়া হয়।ট্যাবলেট এন্টাসিড ৬৫০ মিলিগ্রাম-ট্যাবলেট প্যারাসিটামল ৫০০ মিলিগ্রাম-ট্যাবলেট কোরামফেনি- রামিন ৪ মিলিগ্রাম-ট্যাবলেট মেট্রোনিডাজল ৪০০ মিলিগ্রাম-ট্যাবলেট ফিরাস ফিউমারেট এন্ড ফলিক এসিড-ট্যাবলেট ক্যালসিয়াম ল্যাকটেট ৩০০ মিলিগ্রাম-ট্যাবলেট ভিটামিন বি কমপ্লেক্স-ট্যাবলেট এ্যালবেন্ডাজল ৪০০ মিলি গ্রাম-ট্যাবলেট জিংক ডিসপারসিবল ২০ মিলি গ্রাম-ট্যাবলেট সালবিটামল ২ মিলিগ্রাম-ট্যাবলেট কো-ট্রাইমোক্সাজল ১২০ মিলিগ্রাম-ট্যাবলেট কো-ট্রাইমোক্সাজল ৯৬০ মিলিগ্রাম-ট্যাবলেট পেনিসিলিন ভি ২৫০ মিলিগ্রাম-ট্যাবলেট হাইওসিন বিউটাইল ব্রমাইড ১০ মিলিগ্রাম-ক্যাপসুল এ্যামোক্সাসিলিন ২৫০ মিলিগ্রাম-ক্যাপসুল ভিটামিন এ-সিরাপ এ্যামোক্সাসিলিন ড্রাই ১০০ মিঃলিঃ-সিরাপ প্যারাসিটামল ৬০ মিঃলিঃ-সিরাপ কোরামফেনিরামিন ৬০ মিঃলিঃ-সিরাপ সালবিটামল ৬০ মিঃলিঃ-সিরাপ এ্যামোক্সাসিলিন পেঃ ড্রাপ ১৫ মিঃলিঃ- বেনজাইল বেনজোয়েট অ্যাপি¬কেশন ১০০ মিলিঃ- কোরাম ফেনিকল আই ড্রপ ০.৫%, ১০ মিঃলিঃ-জেনসন ভায়োলেট ২%, ১০ মিঃলিঃ-বেনজাইল এন্ড সেলিসাই- লিক এসিড ১ কেজি-নিউমাইসিন অয়েন্টমেন্ট-১০ গ্রাম ও আর এস-৪৪০ দুই কার্টুন। ক্লিনিক বন্ধ থাকায় প্রত্যন্ত পল্লী এলাকার মানুষ ২৭ প্রকার ওষুধসহ সেবা সুবিধা থেকে বঞ্চিত। তাহলে এসব ঔষধ যাচ্ছে কোথায়।

সেবা বঞ্চিত ছেকনাপাড়ার বাসিন্দা এরশাদ (৪২) ও সবুজ (৫০) জানান, কমিউনিটি ক্লিনিক নামে মাত্র এখানে আছে। সব সময় এ ক্লিনিকটির দরজা বন্ধ থাকে। মাঝে মধ্যে ক্লিনিকের দরজা খোলা হলেও ঔষধ মিলে না। সিএইচসিপি সুজনের শ্বশুর বাড়ি ক্লিনিকের পাশে। সেই দাপটে চলে ক্লিনিক ফাঁকি। সুজন একজন মাদকাসক্ত। সাধারণ মানুষকে ঔষধ না দিয়ে বাহিরে তা বিক্রি করে। তাছাড়া এলাকার অনেক মানুষকে বিভিন্ন প্রলোভন দিয়ে টাকা হাতিয়ে নিয়ে আর অফিস আসেন না।

ছেকনাপাড়া কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্য সহকারী খাইরুল ইসলাম তোকদার বলেন, ক্লিনিকের চাবি থাকে সিএইচসিপি সুজনের কাছে। তিনি অফিস না আসলে আমার কি করার আছে। তিনি ওই এলাকার জামাই এ সুবাদে অনেক লোকের নিকট টাকা নিয়েছেন। সেই পাওনাদ্বারদের ভয়ে অফিস আসেন না।

ছেকনাপাড়া কমিউনিটি ক্লিনিক সিএইচসিপি শরিফুল ইসলাম সুজন বলেন, মাদক সেবনের বিষয়টি আমার একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপার। তাছাড়া আমি আপনার কোন প্রশ্নের উত্তর দিতে বাধ্য নই।

ছেকনাপাড়া কমিউনিটি ক্লিনিক সিএইচসিপি শরিফুল ইসলাম সুজনের মাদক সেবনের বিষয়টি শুনেছি কিন্তু দেখিনি স্বীকার করে খুনিয়াগাছ ইউনিয়ন সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমি ক্লিনিক পরিদর্শন গিয়ে সমস্যা পেয়েছি। ওই ক্লিনিকের দায়িত্ব প্রাপ্ত ব্যক্তিদের কর্তব্যে অবহেলা, ক্লিনিক বন্ধ রাখার বিষয়টি বার বার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে জানিয়েছি। যা ব্যবস্থা নেওয়ার তিনি নিবেন।

এ বিষয়ে লালমনিরহাট সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ দীপংকর রায় বলেন, ছেকনাপাড়া কমিউনিটি ক্লিনিকের কথা কি আর বলব। তাদের বিরুদ্ধে অনেকদিন ধরে অনেক অভিযোগ। আমি ২৬ জানুয়ারী নিজেই ক্লিনিক পরিদর্শনে গিয়ে কাউকে পাইনি। তাই তাদের তিনজনকে শোকজ করা হয়েছে।
সাধারণ মানুষকে ঔষধ না দিয়ে বাহিরে বিক্রি ও ক্লিনিকের সিএইচসিপি’র মাদকসেবনের বিষয়ে উপজেলা কর্মকর্তা আরোও বলেন, একজন মাদক সেবনকারীর দ্বারায় সবকাজেই সম্ভব। সরকারি ঔষধ বাহিরে বিক্রি ও মাদকসেবনের বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
এক ক্লিকে বিভাগের খবর