রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫, ০৫:১০ পূর্বাহ্ন

শাহজাদপুরে ভাঙনের অযুহাতে কোটি টাকার গুচ্ছগ্রাম উধাও

রিপোর্টারের নাম : / ৪১ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : সোমবার, ১৫ জুলাই, ২০২৪

নুপুর কুমার রায়,শাহজাদপুর(সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি:

সিরাজগঞ্জ শাহজাদপুরে প্রকাশ্য দিবালোকে প্রায় পৌনে ২ কোটি টাকা ব্যায়ে আবাসন প্রকল্পের গুচ্ছগ্রামের ৫০টি ঘর যে যার তো লুট করে নিয়ে গেছে। এখন শুধু খালি জায়গা পড়ে আছে। এমন দিনে দুপুরে ৫০ টি ঘর উধাও হয়ে গেলেও নিরব ভূমিকা পালন করছে প্রশাসন।

তথ্যনুসন্ধ্যানে জানা যায়, ভূমিহীনদের পুনর্বাসন করতে উপজেলার গালা ইউনিয়নের বি-হাতকড়া গ্রামে আবাসন প্রকল্প এর আওতায় প্রায় পৌনে ২ কোটি টাকা ব্যায়ে ১০ বিঘা জায়গার উপর ৫০টি পরিবারকে পুনর্বাসিত করতে নির্মান হয় গুচ্ছগ্রাম। নির্মাণ ও ঘর বন্টনে শুরু থেকে ছিল নানা অনিয়মের অভিযোগ। এ অনিয়মের মধ্যেই গত ২৮ জুন ২০২২ সালে গুচ্ছগ্রামের ঘর ৫০টি পরিবারের মাঝে হস্তান্তর করেন সবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম। সঠিক ভূমিহীনদের ঘর বরাদ্দ না দেওয়া ৮-১০টি ঘর ছাড়া প্রায় সব ঘরগুলোতেই কেউ পরিবার নিয়ে বসবাস করে নাই।

উপজেলা প্রকল্প ব্যাস্তবায়ন কার্যালয়ের সূত্রে জানা যায়, ৫০ টি ঘর বাবদ ৭৫ লাখ টাকা এবং মাটি ভরাটের জন্য ৩০৬ মে.টন. গম বরাদ্দ দেওয়া হয়।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার গালা ইউনিয়নের বি-হাতকড়া গুচ্ছ গ্রামটি যমুনা নদীর মধ্যে দ্বীপের মত ভাসছে। ৫০ টি ঘর লুটপাট করে নিয়েছে যার যার মত। দেখা যায় গুচ্ছ গ্রামের কোন মানুষ না থাকায় নৌকা নিয়ে এসে গুচ্ছ গ্রামের বাড়ির পিলার ভাঙ্গতে দেখো গেছে। কেন ভাঙ্গছে জিঞ্জেস করলে তারা বলেন কেউ নাই তাই ভেঙ্গে নিয়ে যাচ্ছি। এখন শুধু খালি জায়গা পড়ে আছে। নদী ভাঙ্গবে এই অজুহাতে সমস্ত ঘর ভেঙ্গে নিয়ে গেছে। অভিযোগ রয়েছে এলাকার প্রভাবশালী রাতে নৌকা নিয়ে এসে জোর করে ঘর ভেঙ্গে নিয়ে গেছে। অনেকে প্রভাব খাটিয়ে অন্যের ঘর নিয়ে গেছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু প্রভাবশালীদের ভয়ে কেউ মুখ খুলছে না।

এবিষয়ে অত্র ইউনিয়নের ৪নং ইউপি সদস্য আব্দুল লতিফ বলেন, নদী ভাঙ্গবে তাই যে যার ঘর ভেঙে নিয়ে যাচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন এবং যার যার ঘর তাকে ভেঙে নিয়ে যেতে বলেছেন। তবে বিষয়টি অস্বীকার করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ কামরুজ্জামান।

এদিকে গালা ইউনিয়নের চেয়াম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল বাতেন বলেন, হঠাৎ করে নদী ভাঙনের অযুহাতে কিছু মানুষ শয়তানী করে ঘর ভাঙা শুরু করলে তদের দেখাদেখি অন্য মানুষেরাও ভাঙা শুরু করে। আমি খবর পেয়ে গুচ্ছগ্রামে গিয়ে দেখি পূর্ব দিকে কিছুই নেই আর পশ্চিমের দিকে কিছু খাম খাড়িয়ে আছে। তখন তাদেরকে গালি গালাজ করে বলি কাওকে কিছু না বলে ঘর ভাঙার অনুমতি কে দিলো। পরে বিষয়টি ইউএনও কে অবহিত করি এবং পরের দিন তাকে নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। তখনই জায়গাটি ভাঙেনি। তিনি আরও জানান, অন্তত বলা উচিৎ ছিল ঘর ভাঙার আগে। তিনি এও বলেন ১ লাখ ৫০ হাজার টাকার ঘর প্রায় অর্ধেক মানুষ মাত্র ২০ টাকায় বিক্রি করেছে।

এবিষয়ে উপজেলা প্রকল্প ব্যাস্তবায়ন কর্মকর্তা রাশেদুল ইসলাম বলেন, আমার কোন মন্তব্য নেই। এব্যাপারে সংশিষ্ঠ চেয়ারম্যান মেম্বর বলতে পারবে।

অপরদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ কামরুজ্জামান জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আমি চেয়ারম্যানকে বলা হয়, যে যে ঘর ভেঙে নিয়ে গেছে তদের বিরুদ্ধে তালিকা করে মামলা করতে। পরবর্তীতে শুনি জায়গাটি ভেঙে গেছে। গুচ্ছগ্রামের ঘর/জায়গাটি রক্ষা করা যেতো কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন পানি উন্নয়ন বোর্ড ৬০০ কোটি টাকা খরচ করেই হাটপাচিল রক্ষা করতে পারছে না আমি কিভাবে পারবো। তিনি আরও বলেন, যে যার ঘর ভেঙে নিয়ে গেলে আমি কি করবো।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর

এক ক্লিকে বিভাগের খবর