রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫, ০৪:৫১ পূর্বাহ্ন

সরকার চাইলে কোটা সংস্কার করতে পারবে

রিপোর্টারের নাম : / ২৪ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : সোমবার, ১৫ জুলাই, ২০২৪

প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ও আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়েছে। রোববার বিকালে ২৭ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়টি সুপ্রিমকোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। এর আগে বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের রায়ের সিদ্ধান্ত, নির্দেশনা ও আদেশ (অপারেটিভ অংশ) সংবলিত অংশ প্রকাশ করা হয়েছিল।

আইনজীবীরা বলেছেন, আপিল বিভাগ কোটার বিষয়ে স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে আদেশ দিয়েছেন। ৭ আগস্ট শুনানির দিন রেখেছেন আপিল বিভাগ। ফলে আপাতত হাইকোর্টের রায় কার্যকর হবে না। কোটা নিয়ে ২০১৩ সালে দেওয়া আপিল বিভাগের সিদ্ধান্ত এবং ২০১১ সালের ১৬ জানুয়ারি অফিস আদেশ তুলে পূর্ণাঙ্গ রায়ে বলা হয়েছে, মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান, নাতি-নাতনিদের জন্য কোটা পদ্ধতি পুনর্বহাল করতে বিবাদীদের নির্দেশ দেওয়া হলো। একই সঙ্গে জেলা, নারী, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, উপজাতি-ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর জন্য কোটাসহ যদি অন্যান্য থাকে, কোটা বজায় রাখতে নির্দেশ দেওয়া হলো। এ বিষয়ে যত দ্রুত সম্ভব আদেশ পাওয়ার তিন মাসের মধ্যে পরিপত্র প্রকাশ করতে নির্দেশ দেওয়া হলো।

রায়ে হাইকোর্ট বলেছেন, প্রয়োজনে উল্লিখিত শ্রেণির ক্ষেত্রে কোটা পরিবর্তন ও হার কমানো বা বাড়ানোর বিষয়ে এ রায় বিবাদীদের (সরকার) জন্য কোনো বাধা তৈরি করবে না। যে কোনো পাবলিক পরীক্ষায় কোটা পূরণ না হলে সাধারণ মেধাতালিকা থেকে শূন্য পদ পূরণ করায় বিবাদীদের স্বাধীনতা রয়েছে।

রায়ে আদালত বলেছেন, বিবাদীরা (সরকার) যদি প্রয়োজন মনে করে, তাহলে কোটা রিডিউস (হ্রাস), ইনক্রিজ (বাড়ানো), দ্য রেশিও অব দ্য পার্সেন্টেজ (শতকরা হার) পরিবর্তন করতে পারে। কোনো সরকারি নিয়োগ পরীক্ষায় যদি কোটা থেকে চাকরিপ্রার্থী না পাওয়া যায়, তাহলে সাধারণ মেধাতালিকা থেকে প্রার্থীর মাধ্যমে তা পূরণ করতে বিবাদীদের স্বাধীনতা থাকবে। এ রায় (মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহালের রায়) সরকারের পরিবর্তন-পরিবর্ধনে কোনো বাধা হবে না।

১১ জুলাই রায়ের কার্যকরী ও নির্দেশনা অংশ প্রকাশের পর রোববার পূর্ণাঙ্গ রায়টি প্রকাশ করা হলো। রায়টি লিখেছেন বেঞ্চের কনিষ্ঠ বিচারপতি খিজির হায়াত। জ্যেষ্ঠ বিচারপতি কেএম কামরুল কাদের সহমত ব্যক্ত করেন।

রায় প্রকাশের পর সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল (ডিএজি) শেখ মো. সাইফুজ্জামান বলেন, ‘২৭ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়টি প্রকাশ করা হয়েছে। এখনো আমরা (রাষ্ট্রপক্ষ) রায়ের প্রত্যায়িত অনুলিপি পাইনি। পেলে সঙ্গে সঙ্গে রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল ফাইল করা হবে।’

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে কোটা সংস্কার আন্দোলনের মুখে সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে ৯ম থেকে ১৩তম গ্রেড পর্যন্ত কোটা পদ্ধতি বাতিল করে পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এই পরিপত্রের বৈধতা নিয়ে ২০২১ সালে রিট করেন চাকরিপ্রত্যাশী ও বীর মুক্তিযোদ্ধার সাতজন সন্তান। চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি কেএম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ ৫ জুন নির্দেশনাসহ রুল অ্যাবসলিউট (যথাযথ) ঘোষণা করে রায় দেন।

এদিকে রাষ্ট্রপক্ষের লিভ টু আপিল করার অপেক্ষার মধ্যে হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে ৯ জুলাই আবেদন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী। সে আবেদনে শুনানির পর কোটা পদ্ধতিসংক্রান্ত বিষয়বস্তুর (২০১৮ সালে জারি করা কোটা বাতিলের পরিপত্র) ওপর স্থিতাবস্থা দেন সর্বোচ্চ আদালত।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর

এক ক্লিকে বিভাগের খবর