রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫, ০৩:১৯ অপরাহ্ন

সারা বিশ্ব থেকে অভিনন্দন বার্তা প্রধানমন্ত্রীকে

রিপোর্টারের নাম : / ১৪৫ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : শনিবার, ২৫ জুন, ২০২২

পদ্মা সেতু উদ্বোধনের ঐতিহাসিক মুহূর্তকে সামনে রেখে গতকাল বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, জাপান, ভারত, পাকিস্তান ও সৌদি আরবসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। আনুষ্ঠানিক চিঠি, বিবৃতি, ভিডিও বার্তা ও রাষ্ট্রদূতদের বক্তব্যের মাধ্যমে এসব অভিনন্দন জানানো হয়।

গতকাল ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের অভিনন্দনের কথা উল্লেখ করে বলা হয়, পদ্মা সেতু বাংলাদেশের অভ্যন্তরে নতুন ও গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ তৈরি করবে, বাণিজ্যকে উৎসাহিত করবে এবং জীবনযাত্রার মান উন্নত করবে। মানুষ ও পণ্যকে দক্ষতার সঙ্গে সংযুক্ত করার জন্য টেকসই পরিবহন অবকাঠামো নির্মাণ অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে উৎসাহিত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করে বিবৃতিতে আরও বলা হয়, দক্ষিণ এশিয়ায় আঞ্চলিক যোগাযোগ প্রসারে বাংলাদেশের নেতৃত্বের আরেকটি উদাহরণ হলো পদ্মা সেতু। গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে লেখা চিঠিতে অভিনন্দন জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী মুহাম্মদ শাহবাজ শরিফ। চিঠিতে শাহবাজ শরিফ লিখেছেন, পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের কাজ সমাপ্তিতে, আমি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রধান এবং সেদেশের জনগণকে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি। তিনি বলেন, ভ্রাতৃপ্রতিম বাংলাদেশের উন্নয়ন যাত্রায় এই সেতুটির উদ্বোধন এক দৃষ্টান্ত উদাহরণ। পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানিয়ে গতকাল এক ভিডিও বার্তায়  ঢাকায় চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বলেছেন, পদ্মা সেতু আমার কাছে সাহসের, সংকল্পের এবং সমৃদ্ধির প্রতীক। লি জিমিং বলেন, ‘আগামীকাল (আজ) একটি মহৎ দিন! বহুল প্রতীক্ষিত পদ্মা বহুমুখী সেতু অবশেষে উদ্বোধন হতে যাচ্ছে, আর এক দশকের স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে! এ পর্যায়ে আমি এই অসামান্য অর্জনের জন্য বাংলাদেশের জনগণকে আমার আন্তরিক অভিনন্দন জানাতে চাই! নিজের অর্থে বাংলাদেশের পদ্মা সেতু নির্মাণে সাহসিকতার প্রশংসা করে চীনের রাষ্ট্রদূত বলেন, সেতুটি আমার কাছে সাহসের একটি প্রতীক। স্বল্পোন্নত দেশ বাংলাদেশ এমন সেতু নির্মাণ করতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় ছিল। তারপরও বাংলাদেশের মানুষ তাদের স্বপ্ন অনুসরণ করার সিদ্ধান্ত নেয়। আজ সেতুটি শুধু বাস্তবায়নই হয়নি, বাংলাদেশের নিজস্ব অর্থায়নে এর শতভাগ নির্মিত হয়েছে। এতে প্রতীয়মান হয় যে যদি সাহসের কোনো সীমা না থাকে, তবে আকাশ তার সীমা। গত বুধবার অভিনন্দন  জানিয়ে ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম  দোরাইস্বামী বলেন, অভিনন্দন বাংলাদেশ! আমি এ গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রত্যেক বন্ধুকে অভিনন্দন জানাই। বাংলাদেশের পক্ষে নিজস্ব অর্থায়নে সেতুটি নির্মাণ করা কঠিন কাজ ছিল। আমি বিশেষভাবে বলতে চাই, ভারতীয় হিসেবে আমরা ভালোভাবে অনুভব করি যে, এটি ছিল মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর (শেখ হাসিনা) ‘অব্যাহত ও দৃঢ় সাহসী সিদ্ধান্ত’।  দোরাইস্বামী বলেন, পদ্মা সেতু শুধু দেশের দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলের অর্থনীতিকেই নয় বরং উপ-অঞ্চল এবং স্পষ্টতই ভারতকেও সংযুক্ত করবে।

এদিকে, গতকাল সন্ধ্যায় ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশন থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, যুগান্তকারী এই প্রকল্পের সফল সমাপ্তিতে ভারতের সরকার ও জনগণ বাংলাদেশের সরকার ও জনগণকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছে। বহুল প্রতীক্ষিত এই প্রকল্পটির সমাপ্তি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসী সিদ্ধান্ত ও দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নেতৃত্বের সাক্ষ্য  দেয়। এই সাফল্য প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তকে  প্রমাণ করে এবং এতে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস ছিল, যা আমরা অবিচলভাবে সমর্থন করে এসেছি যখন বাংলাদেশ একাই এই প্রকল্পটি এগিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।

ভারতের বিবৃতিতে বলা হয়, পদ্মা সেতু শুধু আন্তঃবাংলাদেশ যোগাযোগকেই উন্নত করবে না, এটি ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যের সাধারণ অঞ্চলগুলোকে সংযুক্ত করার ক্ষেত্রে দরকারি লজিস্টিকস্ ও ব্যবসার জন্য প্রয়োজনীয় গতি প্রদান করবে। এই সেতুটি আমাদের দ্বিপক্ষীয় ও উপ-আঞ্চলিক সংযোগ বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০তম বার্ষিকীতে পদ্মা সেতু উদ্বোধনের তাৎপর্যপূর্ণ এই উপলক্ষটিতে ভারতের জনগণ আবারও বাংলাদেশের ভ্রাতৃপ্রতিম জনগণকে অভিনন্দন জানাচ্ছে।

সেই দৃষ্টিকোণ থেকে, দীর্ঘকাল ধরে উপ-অঞ্চল জুড়ে সংযোগ বাড়ানোর সুযোগের অপেক্ষায় থাকা দেশ হিসেবে ভারতে আমরা আনন্দিত।

গত সোমবার রাশিয়ার পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সরকার ও জনগণকে আন্তরিক অভিনন্দন জানানো হয়। রাশিয়া দূতাবাস থেকে পাঠানো অভিনন্দন বার্তায় উল্লেখ করা হয়, এটি প্রশংসনীয় যে এ উচ্চাভিলাষী মেগা প্রকল্পটি সম্পূর্ণরূপে বাংলাদেশের নিজস্ব অর্থায়নে পরিচালিত হয়েছে। পদ্মা সেতু একটি সত্যিকারের গেম চেঞ্জার। কারণ এটি আঞ্চলিক বাণিজ্য, বিনিয়োগ, সংযোগ, কর্মসংস্থান, পর্যটন ও অন্যান্য অনেক ক্ষেত্রে সুযোগ প্রসারিত করবে। নিঃসন্দেহ এটি জাতীয় জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে ব্যাপকভাবে অবদান রাখবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর

এক ক্লিকে বিভাগের খবর