বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:১০ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
লালমনিরহাটে ঘুষ বানিজ্যকারী নাজিরকে স্থায়ীভাবে বরখাস্তের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত কামারখন্দে দরবার শরীফের সম্পদ আত্মসাতের চেষ্টা ও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ উল্লাপাড়ায় ইয়াবা ট্যাবলেটসহ ২ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার ভাঙ্গুড়ায় দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে ইউনিয়ন কৃষকদলের আহব্বায়ককে অব্যাহতি কাজিপুরে আ’লীগের মশাল মিছিল; ফেসবুকে ভাইরাল  কুড়িগ্রামে চরাঞ্চল মানুষের আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে ‘সুস্বাস্থ্য’ প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের যাত্রা শুরু নাটোরে বিএসটিআই’র অভিযানে তিন বেকারি কারখানাকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা কুষ্টিয়া সাংবাদিক ফোরাম ঢাকার নির্বাচনে নতুন নেতৃত্ব সভাপতি আবু বকর সিদ্দীক,সাধারণ সম্পাদক রনজক রিজভী কাজিপুরে সারে তিন লাখ টাকার অবৈধ জাল পুড়িয়ে ধ্বংস  কুড়িগ্রামে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা জাতীয়করণের ঘোষণা দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে মানববন্ধন

১৪ জন শিক্ষকের স্হানে ৫ জন দিয়ে চলছে পাঠদান!ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা ব্যবস্হা!

আশরাফুল হক, লালমনিরহাট: / ১১৮ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : সোমবার, ২৪ জুলাই, ২০২৩

লালমনিরহাটে তিস্তাপাড়ের এক স্কুলে ১৪ জন শিক্ষকের স্থানে মাত্র ৫ জন শিক্ষক দিয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান। শিক্ষক সংকটে চরম ভাবে ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান কার্যক্রম।

জানা গেছে, তিস্তা নদীর বাম তীরের জনপদ আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের দক্ষিণ বালাপাড়া গ্রাম। নদী বিধৌত এ জনপদের ছেলে মেয়েদের শিক্ষার কথা বিবেচনা করে ১৯৪০ সালে মহিষখোচা দক্ষিণ পাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। যা কালক্রমে জাতীয় করন হলে শিক্ষার দিক থেকে এগিয়ে যায় অবহেলিত এ জনপদটি।

এ বিদ্যালয়টি এক সময় জেলার শীর্ষের অবস্থান করে নেয় শিক্ষক শিক্ষার্থী আর অভিভাবকদের প্রচেষ্টায়। ২০০৩ সালে বিদ্যালয়টির ৮ জন শিক্ষার্থী প্রাথমিকে বৃত্তি অর্জন করে সাফল্যে আরও এক ধাপ এগিয়ে যায় তিস্তাপাড়ের এ বিদ্যাপিঠ। এরপর থেকে বিরতীহীন ভাবে প্রতি বছর বৃত্তি অর্জন করে আসছিল বিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা। ২০১১ সালে সরকারী ভাবে উপজেলা প্রতি একটি করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিম্নমাধ্যমিক চালুর সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। সেই পাইলট প্রকল্পেও আদিতমারী উপজেলার একমাত্র বিদ্যালয় হিসেবে মহিষখোচা দক্ষিন পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিম্নমাধ্যমিক চালু করা হয়। এ ভাবে বিদ্যালয়টিতে বর্তমানে প্রাক প্রাথমিক থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান চালু রয়েছে।

নিম্নমাধ্যমিক চালু করনের সময় প্রাথমিকের ৮ টি ও নিম্ন মাধ্যমিকের প্রতি শ্রেণিতে ২ জন করে ৬ জন শিক্ষক পদ সৃষ্ঠি করা হয়। কিন্তু তা কাগজ কলমে থাকলেও অতিরিক্ত শিক্ষক পদায়ন দেয়া হয়নি। যার ফলে শিক্ষক সংকটে ভুগে যৌলুস হারাতে বসেছে এক সময়ের জেলার সেরা এ বিদ্যাপিঠ।

শিক্ষক সংকটে ভুগে গত ২০২০ সাল থেকে টানা ৩ বছর বিদ্যালয়টির কোন শিক্ষার্থী বৃত্তি অর্জন করতে পারেনি। শ্রেণি অনেক নেই শিক্ষক। ফলে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। যার কারনে অভিভাবকরাও তাদের সন্তানদের এ বিদ্যালয় থেকে সড়িয়ে নিচ্ছেন। ফলে কমে আসছে শিক্ষার্থীর সংখ্যা। পর্যাপ্ত একাডেমিক ভবন থাকলেও শিক্ষক সংকটে নিম্নমুখি হচ্ছে বিদ্যালয়টির সুনাম। বর্তমানে প্রাক থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা মাত্র ৩১২ জন।

বিদ্যালয়টির অফিস সুত্রে জানা গেছে, নিম্ন মাধ্যমিকে ৬ টি সৃষ্ঠ পদসহ মোট ১৪ জন শিক্ষক পদায়ন করার কথা থাকলেও বেতন খাচ্ছেন ৭ জন শিক্ষক আর পাঠদান করছেন মাত্র ৫ জন শিক্ষক। একজন শিক্ষক মাতৃত্ব কালিন ছুটিতে রয়েছেন। অপর একজন শিক্ষক শারমিন খাতুন তদবির করে বাড়ির পাশের পরীবিক্ষণ বিদ্যালয়ে প্রেষণে রয়েছেন। এ যেন মরার উপর খরার ঘাঁ।

বিদ্যালয়টির ৮ম শ্রেণির রহিমা, ৭ম শ্রেণির জান্নাতি, ৬ষ্ঠ শ্রেণির সিহাব ও ৪র্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী তাসলিমা জানান, একজন শিক্ষক এক সঙ্গে ৩ টি ক্লাস নেন। একটিতে লিখতে দিয়ে অন্যটিতে যান। এভাবে এখন কোন পড়াশোনা হয় না। তারা দ্রুত প্রয়োজনীয় শিক্ষক পদায়নের দাবি জানান।

বিদ্যালয়টির সহকারী শিক্ষক জিয়াউর রহমান বলেন, ১৪ জনের ক্লাসে ৫ জনে সামলানো বেশ কষ্টকর। ক্লাসে মনোযোগী কারানো তো দুরের কথা শিক্ষকরাই মনোযোগি হতে পারেন না পাশের ক্লাসের হট্টগোলে। তাই বাধ্য হয়ে একজন শিক্ষক একাধারে ৩ টি ক্লাস সামলাতে হয় কৌশলে। এভাবে তো পড়ালেখা করানো সম্ভব নয়।

মহিষখোচা দক্ষিণ পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক(চলতি দায়িত্ব) মমতাজ বেগম বলেন, প্রয়োজনীয় শিক্ষক চেয়ে কয়েক দফায় আবেদন করেও কোন কাজ হয়নি। বরংচ এ বিদ্যালয়ের শিক্ষককে প্রেষণে পাঠানোর আদেশ আসে। শুধু মাত্র শিক্ষক সংকটের কারনে পাঠদানে ব্যাহত হওয়ায় বিদ্যালয়টির মান নিম্নমুখি হচ্ছে। তিনিও দ্রুত শিক্ষক পদায়নের দাবি জানান।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এনএম শরীফুল ইসলাম খন্দকার জানান, জেলা শিক্ষা অফিস থেকে প্রেষণের আদেশ পাঠালে আমাদের কিছু করার থাকে না। তথাপি অন্য কোন শিক্ষক ওই বিদ্যালয়ে যেতে আগ্রহী থাকলে তাকে পাঠানো যেত। কিন্তু কেউ আগ্রহ দেখায়নি। আমারও বদলির আদেশ হয়েছে। নতুন কর্মকর্তা আসলে তিনি ব্যবস্থা নিবেন

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
এক ক্লিকে বিভাগের খবর