মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫, ০৯:৪৫ অপরাহ্ন

১৯বছরেও হয়নি লালঃ সদর উপজেলা আ’লীগের সন্মেলন!মাঠ গোছাতে ব্যর্থ দলটি

আশরাফুল হক, লালমনিরহাট থেকেঃ / ১৩৮ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : শনিবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২২

দীর্ঘ ১৯ বছরেও লালমনিরহাট সদর উপজেলার আ’লীগের সম্মেলন করতে পারেনি ক্ষমতায় থাকা দলটি। যোগ্য নেতৃত্বের অভাবে ক্ষমতায় থেকেও মাঠ গোছাতে ব্যর্থ হচ্ছে এ দলটি।

লালমনিরহাট জেলার ৫টি উপজেলা ও দুই’টি পৌরসভায় তিনটি সংসদীয় আসন রয়েছে। যার মধ্যে পাটগ্রাম ও হাতীবান্ধা উপজেলা মিলে লালমনিরহাট এক আসন, কালীগঞ্জ ও আদিতমারী নিয়ে গঠিত দুই আসন এবং সদর উপজেলা নিয়ে লালমনিরহাট তিন আসন গঠিত। একটি মাত্র উপজেলা নিয়ে গঠিত এ আসনটি সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ। দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থেকেও এ উপজেলার মাঠ গোছাতে পারেনি স্থানীয় আ’লীগ।
নিজেদের কোন্দলের কারণেই দীর্ঘ দিনেও সম্মেলন করা সম্ভব হয়নি দলটির পক্ষে।

সর্বশেষ ২০০৩ সালে সাবেক সংসদ সদস্য প্রায়ত প্রকৌশলী আবু সাঈদ দুলালকে সভাপতি ও শফিকুল ইসলামকে সাধারণ সম্পাদক করে সদর উপজেলা আ’ লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। পরে আর কোনো সফল সম্মেলন করতে পারেনি এ দলটি। নিজেদের কোন্দলের কারণে দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়া দলটির একটিতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন জেলা আ’লীগের সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মতিয়ার রহমান।

অপর গ্রুপে নেতৃত্ব দিচ্ছেন গোকুন্ডা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা আ’লীগের যুগ্ম সম্পাদক গোলাম মোস্তফা স্বপন। ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার মধ্যেও কেন্দ্রীয় নেতারা গোলাম মোস্তফা স্বপনকে সভাপতি ও সাবেক ছাত্রনেতা প্রায়ত জহুরুল হক মামুনকে সম্পাদক করে কমিটি ঘোষণা করেন। কিন্তু তা কেন্দ্রীয় নেতাদের মুখের ঘোষণাতেই সীমাবদ্ধ থাকে। জেলা আ’লীগ এ ঘোষণাকে সমর্থন না দেওয়ায় তা সফলতার মুখ দেখেনি।

পরবর্তীতে জেলা আ’লীগের সম্পাদক অ্যাডভোকেট মতিয়ার রহমানের ভাতিজা সাবেক ছাত্রনেতা এরশাদ হোসেন জাহাঙ্গীরকে সদর উপজেলা আ’লীগের আহ্বায়ক ঘোষণা করে জেলা আ’লীগ। এমন ঘোষণার পর আবারও প্রকাশ্যে দ্বন্দ্বে জড়ায় ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় দুই গ্রুপ। বেশ কিছু দিন ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ফলে এ কমিটিও সফলতা দেখেনি। পরে কেন্দ্রীয় আ’লীগের সদস্য সাবেক সংসদ অ্যাডভোকেট সফুরা বেগম রুমিকে আহ্বায়ক করলে তাও সফলতা পায়নি। কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হয়েও উপজেলা শাখার আহ্বায়ক হওয়া নিয়েও সমালোচনার মুখে পড়ে পণ্ড হয় এ প্রচেষ্টাও।

বর্তমানে দুইটি গ্রুপেই রয়েছেন সভাপতি ও সম্পাদক পদে একাধিক পদপ্রত্যাশী। যার মধ্যে সভাপতি পদ প্রত্যাশীর তালিকায় রয়েছেন সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সাবেক ছাত্রনেতা কামরুজ্জামান সুজন, জেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোড়ল হুমায়ুন কবির, অধ্যক্ষ শারওয়ার আলম, ব্যবসায়ী সাখওয়াত হোসেন সুমন খান। সম্পাদকের তালিকায় রয়েছেন- জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান জাবেদ হোসেন বক্কর এবং সাবেক ছাত্রনেতা এরশাদ হোসেন জাহাঙ্গীর।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ছাত্র ও যুবনেতা বলেন, তৃণমূলের নেতাকর্মীদের অবমূল্যায়ন করে জেলার চারজন নেতা কেন্দ্রকে ভুল তথ্য দিয়ে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করছেন। তাদের কাছে আ’লীগের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা অনেকটাই জিম্মি হয়ে পড়েছেন। জেলার এ চার নেতার জিম্মিদশা থেকে মুক্ত করতে পারলে আগামীতে আ’লীগ সুসংগঠিত করা সম্ভব। নয়তো এ উপজেলায় বিএনপির দুর্গ ভাঙা সম্ভব হবে না বলেও মন্তব্য করেন তারা।

জেলা আ’লীগে যুগ্ম সম্পাদক গোলাম মোস্তফা স্বপন বলেন, জেলা আ’লীগের প্রতিটি সভায় সদর উপজেলা আ’লীগের সম্মেলন ও কমিটি নিয়ে আলোচনা হয়। কিন্তু জেলা আ’লীগের সভাপতি-সম্পাদক এ নিয়ে কোন কর্ণপাত করছেন না। দীর্ঘদিন ধরে কমিটি না থাকায় সদরের মত একটি গুরুত্বপূর্ণ শাখা দিনদিন দুর্বল হয়ে পড়ছে। দ্রুত বিভেদ ভুলে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করে যোগ্য নেতৃত্ব তৈরির আহ্বান জানান এ নেতা।

জেলা আঃলীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মতিয়ার রহমান বলেন, এ বিষয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে কথা হয়েছে। জাতীয় সম্মেলন শেষে জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে সদর উপজেলা’র সম্মেলন করা হবে। ইতোমধ্যে ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন কমিটি করা হয়েছে।

জেলা আ’লীগের সভাপতি মোতাহার হোসেন এমপি বলেন, কমিটি ছাড়া দল কখনোই চাঙ্গা হয় না। সামনে জাতীয় সম্মেলন শেষ হলেই সদর উপজেলা আ’লীগের সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠন করা হবে।

 

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
এক ক্লিকে বিভাগের খবর