শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২৫, ০২:৪০ অপরাহ্ন

জুনে চলবে ট্রেন : পদ্মা সেতুতে রেললাইন বসানো শুরু

রিপোর্টারের নাম : / ১৭৮ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : রবিবার, ২১ আগস্ট, ২০২২

পদ্মা সেতুতে রেললাইন বসানোর কাজ শুরু হয়েছে। গতকাল শনিবার সেতুর লেয়ার ডেকে (নিচতলায়) রেল প্রকল্পের রেললাইনের জন্য আরসিসি ঢালাই কাজের উদ্বোধন করেন রেলপথমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন।

গত ১৭ জুলাই বাংলাদেশ রেলওয়ের পদ্মা সেতু রেললিংক প্রকল্পের কর্মকর্তাদের সেতুতে কাজ করার অনুমতিপত্র তুলে দিয়েছে সেতু কর্তৃপক্ষ। এরপর থেকে সেতুতে রেললাইন বসানোর কাজের প্রস্তুতি নিতে থাকেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। পদ্মা সেতুতে পাথরবিহীন রেললাইন নির্মাণ করা হচ্ছে। এ ছাড়া দুপুর ২টার দিকে মন্ত্রী ফরিদপুরের ভাঙ্গা জংশনে রেললাইন বসানোর কাজ উদ্বোধন করেন।

আগামী বছরের জুনে কমলাপুর থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত পদ্মা সেতুর উপর দিয়ে চলাচল করার লক্ষ্য নিয়ে রেললাইন স্থাপনের কাজ চলবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী।

দুপুর ১২টার দিকে একটি রেলের ট্রাক কারে চরে সেতুতে আসেন মন্ত্রী ও অতিথিরা। এর পর তিনি কেক কেটে ও বেলুন উড়িয়ে সেতুতে রেললাইন বসানোর কাজের উদ্বোধন করেন।

রেলওয়ের কাজে নিয়োজিত এক শ্রমিক বলেন, এখন পদ্মা সেতুর উপরে রেললাইনের রড বাইন্ডিং, ঢালাইয়ের কাজ চলছে। রাত-দিন মিলিয়ে ১৬ ঘণ্টা সমানতালে কাজ চলছে।

রেলওয়ের কাজে নিয়োজিত এক প্রকৌশলী বলেন, পদ্মা সেতুতে রেললাইনের মাওয়া থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টা কাজ চলছে। আমরা সার্বক্ষণিক গুণগত মান যাচাই করছি। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে মানসম্মত কাজ হচ্ছে।

উদ্বোধনকালে রেলপথমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, আগামী বছর জুনে পদ্মা সেতু দিয়ে ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ট্রেন চলাচল শুরু করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। রেললাইনের যে পাথর ব্যবহার হয় তা সিলেটের মধ্যপাড়া থেকে সংগ্রহ করা হয়। সেখানে পাথর উত্তোলনে সমস্যা দেখা দিয়েছে। এ কারণে আমরা বিকল্প সোর্স থেকে পাথর আনার চেষ্টা করছি। যাতে সঠিক সময়ের মধ্যে রেললাইন প্রস্তুত করে রেলসেবা চালু করা যায়। আর জ্বালানির দাম বাড়লেও এই মুহূর্তে রেলের ভাড়া বাড়ানোর সম্ভাবনা নেই। আর বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে রেল প্রকল্পের কাজ শেষ করতেও কোনো সমস্যা হবে না। আর ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে যশোর পর্যন্ত রেল প্রকল্পের প্রকল্প ব্যয়ও বাড়ানোর কোনো পরিকল্পনা নেই।

চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী বলেন, ৭৪ সালের বাজেটে বঙ্গবন্ধু এ সড়কের জন্য টাকা বরাদ্দ দিয়েছিলেন। তখন এখানে মাটির রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। তার অসমাপ্ত কাজ তারই কন্যা শেখ হাসিনা করেছেন। এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করেছেন। প্রমত্তা পদ্মার বুকে সেতু নির্মাণ করেছেন। আমাদের কল্পনাতেও ছিল না সেতু দিয়ে রেল যাবে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিকতায় দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ পদ্মা সেতু দিয়ে রেলসেবা পাচ্ছে।

পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের রেললিংক প্রকল্পের অধীনে ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত ১৬৯ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্পের ঠিকাদার চীনের চায়না রেলওয়ে গ্রুপ। পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছে চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেড (এমবিইসি)। এটি চায়না রেলওয়ে গ্রুপেরই একটি প্রতিষ্ঠান।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, পদ্মা রেললিংক প্রকল্পের কাজ তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে- ঢাকা থেকে মাওয়া, মাওয়া থেকে ফরিদপুরের ভাঙা এবং ভাঙা থেকে যশোর। শুরুতে মাওয়া থেকে ভাঙা অংশে পদ্মা সেতুতে যানবাহন চালুর দিনই ট্রেন চলাচল শুরুর পরিকল্পনা ছিল সরকারের। কিন্তু সময়মতো কাজ এগোয়নি বলে এখন পরিকল্পনা পরিবর্তন করে ঢাকা থেকে ভাঙা পর্যন্ত অংশ আগামী জুনে চালুর সিদ্ধান্ত হয়েছে। এরপর ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে যশোর পর্যন্ত কাজ সম্পন্ন করার কথা।

প্রকল্পের অগ্রগতি সংক্রান্ত প্রতিবেদন অনুসারে, ১৬ আগস্ট পর্যন্ত পুরো প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি হয়েছে ৬১ দশমিক ৫০ শতাংশ। আর ঢাকা থেকে মাওয়া পর্যন্ত অংশের কাজ শেষ হয়েছে ৬৪ শতাংশ। মাওয়া ভাঙ্গা অংশের কাজ হয়েছে ৮১ দশমিক ৫০ শতাংশ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর

এক ক্লিকে বিভাগের খবর