সীমান্তে গরু পাচারকারী চক্রের আঘাতে গ্রাম পুলিশ ক্ষীতিশ চন্দ্র আহত!

লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলায় ভারতীয় সীমান্তে গরু পাচারকারী চক্রের আঘাতে ক্ষীতিশ চন্দ্র (৫৫) নামে এক গ্রাম পুলিশ আহত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) ভোর রাতে উপজেলার ভেলাবাড়ি ইউনিয়নের তালুক দুলালী সীমান্তে দায়িত্ব পালন কালে হামলার শিকার হন তিনি। আহত গ্রাম পুলিশ ক্ষীতিশ চন্দ্র ভেলাবাড়ি ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের মৃত কোনারাম বর্মনের ছেলে। তিনি ওই ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশের সর্দার (দফাদার)।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, ভারতীয় সীমান্ত দিয়ে প্রায় প্রতিদিন গরুসহ মাদক পাচার করে আসছে চোরা কারবারী চক্র। শীতের ঘন কুয়াশাকে পুজি করে চোরাকারবারী বেড়ে যায় এ সময়। রাত হলেই সীমান্তের বিভিন্ন স্থানে চোরাকারবারীদের আনাগোনা বেড়ে যায়। রাতভর সীমান্ত হয়ে বিভিন্ন পন্য আনা নেয়া করে এ চক্রটি। এমন একটি গোপন খবরে তালুক দুলালী সীমান্তবর্তি এলাকায় ৪ জন ইউপি সদস্য ও ৩ জন গ্রাম পুলিশকে নিয়ে অভিযান চালান দফাদার ক্ষীতিশ চন্দ্র।
এ সময় সীমান্তের কাটাতারের বেড়ায় চড়কা দিয়ে গরু পারাপার করে নিয়ে আসছিল পাচারকারী চক্র। এসময় তারা অভিযান চালিয়ে ১০/১২টি ভারতীয় গরু আটক করে। পরে পাচারকারী চক্রটি দলবলে এসে দফাদার ক্ষীতিশ চন্দ্রের মাথায় আঘাত করে গরুগুলো ছিনিয়ে নিয়ে তাদেরকে অবরুদ্ধ করে রাখে।
পরে খবর পেয়ে স্থানীয় লোহাকুচি বিজিবি ক্যাম্পের সদস্যরা এ অভিযানিক দলটিকে পাচারকারীদের হাত থেকে উদ্ধার করে এবং আহত দফাদারকে আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
সীমান্তের একটি সুত্র দাবি করেছে, ভেলাবাড়ি ইউনিয়নের একজন গ্রাম পুলিশ পাচার হওয়া ভারতীয় গরুর লাইনম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন। তিনিই উপরের সকল মহলকে গরু প্রতি নিদিষ্ট অংকের টাকা পৌছে দেন। এ টাকায় বঞ্চিত হয়েছেন স্থানীয় প্রশাসনের একটি গ্রুপ। বঞ্চিত গ্রুপই দফাদারকে নিয়ে অভিযান চালান।
তাই সরকারী দায়িত্ব পালনে গিয়ে দফাদার আঘাত প্রাপ্ত হলেও স্থানীয় প্রশাসনের তৎপরতা নেই বলেও সুত্রটির দাবি।
আহত দফাদার ক্ষীতিশ চন্দ্র বলেন, পাচারকারীদের কাছ থেকে গরু আটক করা হয়। এ সময় তাদের লোকজন এসে অতর্কিত হামলা চালিয়ে গরুগুলো নিয়ে যায়। বিষয়টি থানাকে অবগত করা হয়েছে। কেউ খোজ খবর নিতে আসেননি। তবে লাইনম্যান খ্যাত ওই গ্রামপুলিশকে অভিযানে খবর দেয়া হয়নি। খবর পেলে গরু আটক করাও সম্ভব হত না।
ভেলাবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী বলেন, ভারতীয় গরু আটক করায় পাচারকারী চক্রের হামলায় দফাদার আহত হয়েছেন। পরিষদের কয়েকজন সদস্য ও ৪ জন গ্রাম পুলিশকে দিয়ে পাচার রোধে ওই সীমান্তে টহল জোরদার করা হয়েছে। লাইনম্যান খ্যাত ওই গ্রামপুলিশের সাথে উপর মহলের সখ্যতা ভাল। তাই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হচ্ছে না। একই পাচার রোধ করাও সম্ভব হচ্ছে না।
আদিতমারী থানা’র অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোক্তারুল ইসলাম বলেন, দফাদারকে তার বাড়িতে এসে অজ্ঞাত ব্যাক্তিরা মারপিট করেছে বলে শুনেছি। তাকে অভিযোগ দিতে বলেছি। অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।